আফগানিস্তানের দখল নিয়েছে তালিবান। দেশটির রাজধানী কাবুল তাদের নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার পরপরই বদলাতে থাকে দেশটির পরিস্থিতি। রাজনীতি থেকে শুরু করে ব্যবসা-বাণিজ্য, জীবনযাত্রা সবই এখন প্রায় বদলে গেছে। তবে তালিবানের আফগান নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা নিয়ে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমে যতটা না উদ্বেগ তার থেকে বেশি উদ্বেগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে দেশটিতে নারীর স্বাধীনতা নিয়ে। দখল করা এলাকাগুলোয় নারীদের অধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে বলে আগেই জানিয়েছিল জাতিসংঘ।
তালিবান নিয়ন্ত্রিত আফগানিস্তানে মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি হওয়া নিয়ে এরই মধ্যে উদ্বেগ জানিয়েছেন অধিকারকর্মীরা। সবচেয়ে বড় শঙ্কা ধর্মভিত্তিক সংগঠনটির হাতে নারীদের অধিকার হরণ নিয়ে।
বিগত মেয়াদে নারীদের এক প্রকার ঘরবন্দি করে রেখেছিল তালিবান। এবারও তেমনটা হওয়ার আশঙ্কা করছেন অনেকে।
যদিও তালিবান বারবারে বলছে, তারা আগেরবারের মতো কট্টর অবস্থা থেকে সরে এসেছে। নারীদের অধিকার ও সর্বোপরি মানবাধিকার রক্ষায় তারা আগের চেয়ে সচেতন।
তবে আল জাজিরার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ভিন্ন তথ্য। সংবাদমাধ্যমটি সরেজমিনে দেখেছে, আফগান নারীদের কাজ করার অনুমতি দিচ্ছে না তালিবান।
জুলাইয়ের শুরুতে যখন তালিবান যোদ্ধারা সরকারি বাহিনীর হাত থেকে কান্দাহারের দখল নিয়ে নেয়, তখন তালিবানের কয়েকজন সদস্য স্থানীয় আজিজি ব্যাংকে গিয়ে নয়জন নারীকে কাজ করতে মানা করেন। ওই নারীদের অফিস ছেড়ে যেতে বলেন সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা।
অস্ত্রধারী তালিবান সদস্যরা ওই নয় নারীকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়; তাদের মানা করে অফিসে যেতে।
বলা হচ্ছে, তালিবানরা নারীদের কোনো অধিকারই প্রতিষ্ঠা হতে দেবে না। বিশেষ করে মেয়েদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিতে পারে তারা। একইসঙ্গে বাড়তে পারে বাল্যবিবাহের হার। এদিকে তালিবানদের কাবুল দখলের পর থেকেই আতঙ্ক আরও বহুগুণে ছড়িয়ে পড়েছে সেখানকার নারীদের মধ্যেও।
এরই মধ্যে আফগান নারীদের ওপর নানা বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। নারীরা বাড়ির বাইরে গেলে অবশ্যই তাদের বোরকা পরতে হবে। এ ছাড়া এ সময় তাদের সঙ্গে অবশ্যই একজন পুরুষ থাকতে হবে। এছাড়া নারীদের উঁচু গলায় কথা বলা যাবে না, হাই হিল জুতা পরা যাবে না, কোনো ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে পারবে না, থাকতে পারবে না তাদের ছবি কোনো বই পুস্তক কিংবা পোস্টারে। এমনকি নিজ বাড়ির বারান্দাতেও নারীরা দাঁড়াতে পারবে না। তাদের জানালার কাচে রঙ করে দেওয়ারও ফতোয়া জারি হয়েছে। ফলে নারীদের বাইরে চলাফেরা কঠিন হয়ে পড়েছে। ভয়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন নারীরা। কাবুলের দুই-তৃতীয়াংশ নারীর বয়স ত্রিশ বছরের নিচে। তালিবান শাসনের অধীনে বাস করার অভিজ্ঞতা নেই তাদের। তবে তালিবানের কাবুল দখলের আতঙ্কে শহরের নারীরা এখন ছুটছেন বোরকার দোকানে।
তালিবানের শাসনে নারীদের কী কী শিষ্ঠাচার মেনে চলতে হবে, আগেই তার লিখিত বিজ্ঞপ্তি জারি করে দিয়েছে তারা। মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত আবৃত রাখতে বলা হয়েছে নারীদের। তাই খোলা বাতাস ছেড়ে ঘরের কোণে ঢুকে গেলেও, বোরকার প্রয়োজনীয়তা বুঝতে পারছেন আফগান নারীরা।
কাবুলের রাস্তা প্রায় নারীশূন্য
আফগানিস্তান তালিবানের হাতে যাওয়ার পর থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিশ্বের রাষ্ট্রনেতাদের কাছে একাধিক আর্জি জানিয়েছেন আফগানিস্তানের মানবাধিকার কর্মীসহ অনেকেই। বিশেষ করে তালিবান রাজত্বে নারীদের অবস্থা নিয়ে আন্তর্জাতিক সাহায্যের আর্জি জানিয়েছেন তারা। কিন্তু দেশ-বিদেশের সংবাদমাধ্যমে গত ৪৮ ঘণ্টায় যত ছবি সামনে এসেছে কাবুলের, তাতে রাস্তাঘাটে নারীদের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। খবর আনন্দ বাজার
কাবুল ইউনিভার্সিটিতে অধ্যায়নরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তরুণী সংবাদমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’-কে বলেছেন, ‘রোববার সকালে ইউনিভার্সিটি যাচ্ছিলাম। গেটের কাছে পৌঁছতেই দেখলাম ডর্মিটরি থেকে ছুটে বেরিয়ে আসছে আমার সহপাঠীরা। জিজ্ঞেস করে জানলাম, পুলিশ কলেজ খালি করে দিচ্ছে। তালিবান এসে গিয়েছে। বোরকা না পরে থাকলে নারীদের মারধর করবে বলে হুমকি দিয়েছে। কিন্তু পালাব কোথায়? রিকশাচালকরাও মেয়েদের দায়িত্ব নিতে রাজি হচ্ছিল না। কাবুলের বাইরে থেকে যারা পড়তে এসেছিল, তারা তো আতঙ্কে। কোনও রকমে হোস্টেলে গেছে সবাই। এত বছর ধরে অর্জিত স্কুল-কলেজের সনদ পুড়িয়ে ফেলতে হবে।’
২০ বছর আগের তালিবানের সঙ্গে আজকের তালিবানের ফারাক রয়েছে বলে যদিও ইতিমধ্যেই নিজেদের জাহির করতে দেখা গিয়েছে সংগঠনের নেতৃত্বকে। কিন্তু তার পরেও তালিবান পুনরুত্থান-পর্বে মহিলাদের নিয়ে যে সব বিধিনিষেধ সামনে এসেছে, তাতে অশনিসঙ্কেত দেখছেন তৃতীয় বিশ্বের নাগরিকরাও।
তবে ফতোয়া জারি করেই থেমে নেই তালিবান। সদ্য সাবেক প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির বৈধ সরকার থাকাকালীনই গায়ে সেঁটে থাকা পোশাক পরার জন্য বালখ প্রদেশে এক মহিলাকে তালিবান গুলি করে খুন করে বলে অভিযোগ। ২০ বছর আগের তালিবান সরকার নারীশিক্ষা নিষিদ্ধ করেছিল। তার পর আমেরিকার পদার্পণের পর আফগানিস্তানের স্কুলগুলোতে মেয়েদের সংখ্যা বেড়ে ৯০ লাখে পৌঁছেছিল। কাবুলের দখল নেওয়ার আগেই তাদের মধ্যে ২০ লাখ মেয়েকে স্কুল থেকে নাম কাটিয়ে নিতে তালিবান বাধ্য করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
আফগান নারীদের ওপর নানা বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। নারীরা বাড়ির বাইরে গেলে অবশ্যই তাদের বোরকা পরতে হবে। এ ছাড়া এ সময় তাদের সঙ্গে অবশ্যই একজন পুরুষ থাকতে হবে। এছাড়া নারীদের উঁচু গলায় কথা বলা যাবে না, হাই হিল জুতা পরা যাবে না, কোনো ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে পারবে না, থাকতে পারবে না তাদের ছবি কোনো বই পুস্তক কিংবা পোস্টারে। এমনকি নিজ বাড়ির বারান্দাতেও নারীরা দাঁড়াতে পারবে না। তাদের জানালার কাচে রঙ করে দেওয়ারও ফতোয়া জারি হয়েছে। ফলে নারীদের বাইরে চলাফেরা কঠিন হয়ে পড়েছে। ভয়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন নারীরা।
এমন পরিস্থিতিতে তালিবান মসনদের দখল নেওয়ার পর কাবুলের রাস্তাঘাট প্রায় নারীশূন্য। এদিক ওদিক গুটিকয়েক বোরকায় ঢাকা অবয়ব যা-ও বা চোখে পড়ছে, শেষ সম্বলটুকু নিয়ে সীমান্ত পেরোতে স্বামীর পিছু নিয়েছেন তারা। এক হাতে ব্যাগপত্র, অন্য হাতে শক্ত করে ধরা ছেলেমেয়ের হাত। অর্থনৈতিক দিক থেকে একটু সম্পন্ন পরিবারের মহিলারা স্বামী-সন্তানের সঙ্গে রওনা দিচ্ছেন হামিদ কারজাই বিমানবন্দরের দিকে। বাকিরা দৌড়চ্ছেন চমন সীমান্তের দিকে। কারণ পেশোয়ার যাওয়ার একমাত্র সড়ক পথটির দখল নিয়েছে তালিবান। তাই পাকিস্তানে ঢোকার একমাত্র রাস্তা এই চমন সীমান্ত।
তবে সেখানেও দুর্ভোগের শেষ নেই। হাজার হাজার লোকের প্রবেশ আটকাতে দরজা বন্ধ করে দিয়েছেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। উপায় না দেখে অযত্নে বসানো কংক্রিটের দেওয়াল এবং তার উপর বসানো পাকানো লোহার কাঁটাতার পেরিয়ে বিমানবন্দরে ঢোকার চেষ্টা করছেন স্থানীয় মানুষ। একই দৃশ্য চমন সীমান্তেও। সেখানে কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে প্রথমে উঠছেন পুরুষরা। তার পর কোলের সন্তানকে তাদের হাতে তুলে দিচ্ছেন নারীরা।
১০গুণ বেশি দামেও বোরকা কেনার হিড়িক
পুরো আফগানিস্তান তালিবানের নিয়ন্ত্রণে যাবার পর থেকেই সেখানকার সাধারণ মানুষের মনে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দেয়। কী হতে যাচ্ছে তা নিয়েই যেন আতঙ্ক কাটছে না। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই কাবুলের নারীদের মধ্যে বোরকা কেনার হিড়িক পড়েছে বলে গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংবাদমধ্যমে খবর বেরিয়েছে, কাবুলে বোরকা কেনার হিড়িক পড়ে গেছে। ফলে বোরকার দামও বেড়ে গেছে আট থেকে দশ গুণ। গত বছর যে বোরকার দাম ছিল দুইশ আফগানি মুদ্রা, বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার আফগানি মুদ্রায়।
তালিবান আসার খবরে বেশ সতর্ক হয়ে গিয়েছিল দেশটির তরুণী থেকে বৃদ্ধা সবাই। নিজেদের বোরকার মজুদ বাড়ানো শুরু করেছে বলেও সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
এতোদিন শুধু আফগানিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশের নারীরাই বোরকা পরত। কিন্তু তালিবান কাবুলের চারদিক ঘিরে ফেলার পর থেকেই সেখানকার নারীরা বোরকা কিনতে ভিড় করছেন দোকানগুলোতে। ফলে ক্রেতা বৃদ্ধি পাওয়ায় বোরকার দামও বেড়ে গেছে।
বোরকা কিনতে আসা এক নারী বলেন, গত বছরই এ বোরকার দাম ছিল ২০০ আফগান মুদ্রা। কিন্তু একই বোরকা তারা এখন আমাদের কাছে দুই হাজার থেকে তিন হাজার আফগান মুদ্রায় বিক্রি করার চেষ্টা করছে।
কয়েক দশক ধরে আফগান নারীরা নীল রঙের বোরকা দিয়েই বিশ্বে পরিচিত। কিছুটা ভারী কাপড়ে তৈরি এ বোরকা মাথা থেকে পা পর্যন্ত সম্পূর্ণ ঢেকে রাখে। এ ধরনের বোরকার চোখের সামনে থাকে নেটের কাপড়। এতে যে নারী বোরকা পরেন তিনি বাইরের সবকিছু দেখতে পেলেও কেউ তাকে দেখতে পায় না।
মূলত তালিবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকেই নারীরা সতর্ক হয়ে গেছেন। এর আগে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তান তালিবানের শাসনে ছিল। সে সময় নারীদের বোরকা পরা ছিল বাধ্যতামূলক। কোনো নারী এ নিয়মের বাইরে গেলে তাকে শাস্তি পেতে হতো। ২০০১ সালে মার্কিন অভিযানে তালিবানের পতনের পর আর বোরকা পরা বাধ্যতামূলক ছিল না। এই সময়ের মধ্যে নারীরা বোরকা ছাড়া অন্য পোশাকও পরার সুযোগ পেয়েছেন। এমনকি গত কয়েক বছরে বহু আফগান নারীকে বিভিন্ন আধুনিক পোশাকেও দেখা গেছে।
আফগান নারী চলচ্চিত্রকারের আকুতি
তালিবান ক্ষমতা দখল করেছে, শরিয়া আইন আবার ফিরে আসার শঙ্কায় দিন কাটছে দেশটির নারীদের। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণে বিশ্ববাসীকে সরব হওয়ার আকুতি জানিয়েছেন আফগান নারী চলচ্চিত্র নির্মাতা সাহারা কারিমি।
ভারতের চলচ্চিত্র নির্মাতা অনুরাগ কাশ্যপ ইনস্টাগ্রামে সাহারার একটি চিঠি শেয়ার দিলে মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়।
চিঠিটি সাহারা করিম যা লিখেছেন, সেই আকুতি ফুটে উঠেছে তার টুইটগুলোতেও।
চিঠিটি পাঠকদের জন্য তুলে দেওয়া হলো-
‘‘আমার নাম সাহারা কারিমি। আমি একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা। আফগান ফিল্মের মহাপরিচালকও। ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠান দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ফিল্ম কোম্পানি।
ভীষণ ভগ্ন হৃদয়েও প্রবল আশা নিয়ে আমি এই চিঠি লিখছি আপনাদের উদ্দেশে, আপনারা আমাদের এই সুন্দর দেশটিকে তালিবানের হাত থেকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসুন।
তারা গণহারে মানুষ মারছে, শিশুদের তুলে নিয়ে যাচ্ছে, পোশাকের কথা বলে নারীদের হত্যা করছে। আমার প্রিয় একজন অভিনেতাকে হত্যা করেছে, হত্যা করেছে এক কবিকে।
তালিবানের কবল থেকে পালিয়ে বাঁচতে কাবুলে আশ্রয় নেওয়া মানুষগুলোর দুর্দশা তুলে ধরে সাহারা বলেন, বিশ্ব এখনও নিরব। এমন নিরবতায় আমরা অভ্যস্ত, তবে এটা মেনে নেওয়ার নয়।
অর্জনের এই গল্পটি অনেকেই জানে না। তালিবান এখন আবার স্কুল ধ্বংস করছে। মেয়েদের আবার শিক্ষার বাইরে ছুঁড়ে দেওয়া হবে।
তালিবান সব সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ করে দেবে। নারীদের কোনো অধিকার থাকবে না। আমি ও আমার মতো চলচ্চিত্রকাররা নির্ঘাত তাদের লক্ষ্যবস্তু হব। এই পরিস্থিতিতে আমরা আপনারা সরব হন।’’
আফগান নারীদের পাশে মালালা ইউসুফজাই
আফগানিস্তানের নারীদের সুরক্ষা নিশ্চিতে বিশ্ব নেতাদের প্রতি জোর আহ্বান জানিয়েছেন শান্তিতে নোবেল জয়ী মালালা ইউসুফজাই। একইসঙ্গে দেশটির সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে আহ্ববান জানিয়েছেন এই নারী অধিকারকর্মী।
সোমবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মালালা আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘সামরিক বিমানে চেপে আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে এমন চিত্র মর্মান্তিক এবং এটি প্রমাণ দেয় যে বর্তমানে জরুরি মানবিক সংকট’।
নারীদের নিয়ে মালালা বলেন, ‘আফগানিস্তানের নারী এবং ছোট ছোট মেয়েদের নিয়ে চিন্তিত। দেশটির নারীদের ভবিষ্যতে কী অপেক্ষা করছ তা জানে না তারা’।
রয়টার্সকে দেওয়া ভিডিওবার্তায় মালালা ইউসুফজাই বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের এখন অনেক কিছুই করার আছে। আফগানদের বাঁচাতে তাকে এখন কড়া পদক্ষেপ নিতেই হবে।
ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, নারী ও শিশুদের জীবনের নিরাপত্তার কথা ভেবে আমি শঙ্কিত। আমি নারী অধিকার নিয়ে কাজ করছেন এমন কজন অ্যাক্টিভিস্টের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলছেন, তারা কতক্ষণ বেঁচে থাকবেন তা নিশ্চিত নন। ১৯৯৬ থেকে ২০০১, ওই পাঁচ বছরে আফগানিস্তানে যে পরিস্থিতি ছিল তা আবার ফিরে এসেছে। তালিবান যখন আবার ফিরে আসছে, তখন দেশের স্কুলগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তরুণীদের জোর করে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
মালালা এসময় বিশ্ব নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, আফগানিস্তানের রাজনীতি নিয়ে বিস্তর অভিযোগ থাকতে পারে। অনেকে গালমন্দও করতে পারেন। কিন্তু এখন মানুষের জীবন বাঁচানোই হল বড় কথা।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৫৫২
আপনার মতামত জানানঃ