দ্বীপরাষ্ট্র সাইপ্রাস। সপ্তাহজুড়ে তীব্র তাপপ্রবাহের পর, এবার শুরু হয়েছে ভয়াবহ দাবানল। সাইপ্রাসের ইতিহাসে এর চেয়ে ভয়াবহ দাবানল কখনো হয়নি বলে জানিয়েছেন দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা।
সপ্তাহব্যাপী ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রা থাকার পর শনিবার মধ্যদুপুর থেকে এই দাবানল শুরু হয়েছে। জলবায়ু বিশেজ্ঞরা বলছেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে গোটা বিশ্বে দাবদাহের মতো চরমভাবাপন্ন আবহাওয়া পরিস্থিতি বিরাজ করছে।’
এই দাবানলে আজ রোববার চার বিদেশি শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। ঝোড়ো হাওয়ার ফলে দক্ষিণাঞ্চলীয় লিমাসোল জেলায় দাবানলের তেজ বেড়েই চলেছে প্রতিদিন।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে সাইপ্রাসের সরকারি কর্মকর্তাদের বরাতে জানানো হয়েছে, দাবানলে প্রাণ হারানো চার জন মিসরের নাগরিক। তারা সাইপ্রাসে খামারে কাজ করতেন। দাবানলে গাড়ি পুড়ে যাওয়ার পর এসব শ্রমিকের প্রাণহানি ঘটে। প্রাণহানি ঠেকাতে অনেক গ্রামের মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এ প্রসঙ্গে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোস নৌরিস বলেছেন, ‘ফরেনসিক টিমের সদস্যরা ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন। আমাদের হাতে আসা সব তথ্য এই ইঙ্গিত দিচ্ছে, গতকাল থেকে দমকলকর্মীরা যে চার নিখোঁজ ব্যক্তির খোঁজ করছিলেন মৃত এসব ব্যক্তি তারাই।’
দাবানল নিয়ন্ত্রণে আন্তর্জাতিক সাহায্য চাইছে সাইপ্রাস। দাবানল নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাওয়া দেশটি ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ইসরায়েলসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সাহায্য চেয়েছে। ইসরায়েল ও গ্রীস ইতোমধ্যে দমকলবাহিনী পাঠিয়েছে সাইপ্রাসে। এছাড়া দ্বীপরাষ্ট্রটিতে উদ্ধারকারী জাহাজ পাঠিয়েছে ইতালি।
আরাকাপাসের কমিউনিটি নেতা ভাসোস ভাসিলিও বলেন, পুরো এলাকার ওপর দিয়ে আগুনের ঘূর্ণি বায়ু বয়ে যাচ্ছে, যা সবকিছু ধ্বংস করে দিচ্ছে। পুড়ে যাচ্ছে বনাঞ্চল। পাহাড়ি এলাকা ও বনাঞ্চল হওয়ায় আগুন নেভাতে হিমশিম খাচ্ছে দমকল কর্মীরা।
সাইপ্রাসের বন বিভাগের পরিচালক চারাম্বালোস আলেকজান্দ্রো বলছেন, ‘সাইপ্রাসের ইতিহাসে এটাই সবচেয়ে ভয়াবহ দাবাল। অন্তত বনের ৪০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভয়াবহ এই দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। এর ভয়াবহতা আরও বাড়তে পারে।’
এদিকে সাইপ্রাসের প্রেসিডেন্ট নিকোস আনস্টাসিয়াদেস বলেছেন, কঠিন এক সময় পার করছে সাইপ্রাস। প্রাণহানি ঠেকানোই এখন সবচেয়ে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে সাহায্যের জন্য তিনি ইতালি, গ্রিস ও ইসরায়েলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
শুধু সাইপ্রাসেই নয় ইউরোপসহ যুক্তরাষ্ট্র, কানাডাতেও তাপদাহের পাশাপাশি দাবানল দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতির জন্য বৈশ্বিক জলবায়ুর পরিবর্তনকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এসডব্লিউ/এমএন/ওজেএ/৪৭১৫
আপনার মতামত জানানঃ