অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ নেয়া ৯৩ শতাংশের শরীরে এন্টিবডি তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের একটি গবেষক টিম। অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নেয়া ঢামেকের ৩০৮ জন ডাক্তার ও কর্মচারীর নমুনা সংগ্রহ করে দীর্ঘ ৫ মাস গবেষণার পর এমন ফলাফল উঠে এসেছে বলে জানান তারা। আজ সকালে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
গবেষণায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালের ডাক্তার ও কর্মচারী থেকে ৩০৮টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ১ম ভ্যাকসিন দেওয়ার ৪ সপ্তাহ পর নমুনা (রক্ত) সংগ্রহ করা হয় এবং ৪১ শতাংশ অংশগ্রহণকারীর শরীরে অ্যান্টিবডি পাওয়া যায়। ২য় ভ্যাকসিন দেওয়ার ২ সপ্তাহ পর নমুনা সংগ্রহ করা হয় এবং ৯৩ শতাংশ অংশগ্রহণকারীর শরীরে অ্যান্টিবডি উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া যায়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অর্থায়নে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, কমর্কর্তা ও কর্মচারীদের উপর গবেষণা চালানো হয়। এতে নেতৃত্ব দেন মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান ডা. এস এম সামসুজ্জামান।
তিনি বলেন, আমার টিকা দেওয়া পর অ্যান্টিবডির উপস্থিত দেখতে চেষ্টা করেছি। গবেষণা চালানো ব্যাক্তিদের মধ্যে ৮০ শতাংশের ব্য়স ছিল ৪০ থেকে ৫০ বছর। টিকা নেওয়া পর মৃত্যু হবে না, আক্রাম্ত হলেও উপসর্গ দেখা দিবে না, আক্রান্ত হলেও মারাত্মক হবে না।তবে অ্যান্টিবডি কত দিন থাকবে তা এখনও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না বলে উল্লেখ করেন তিনি। এতে আরও বড় গবেষণা লাগবে বলে জানান গবেষকরা।
করোনার টিকা তৈরি হবে গোপালগঞ্জে
দেশে করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরির প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। বলেছেন, গোপালগঞ্জে যে সরকারি ওষুধ কারখানা করা হয়েছে, সেখানেই উৎপাদন হবে এই টিকা।
দেশে উৎপাদন হলে করোনার টিকা নিয়ে অনিশ্চয়তা আর থাকবে না বলে আশা করছেন তিনি। তবে টিকার প্রযুক্তি নিশ্চিত হওয়া গেছে কি না, এ বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি।
শনিবার বিকেলে মানিকগঞ্জের গড়পাড়া নিজ বাসবভনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘গোপালগঞ্জের যে ওষুধ কারখানা আছে সেখানে বা তার পাশে ভ্যাকসিন তৈরির ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সেটা তৈরি করতে একটু সময় লাগবে। কিন্তু এখন থেকে কাজ শুরু হয়ে গেছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘ভ্যাকসিন তৈরির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুবই আন্তরিক। আমাদের নির্দেশনা দিয়েছে ভ্যাকসিন তৈরির জন্য। এজন্য আমরা এরইমধ্যে মিটিংও করেছি। সেখানে দেশি-বিদেশি অভিজ্ঞ লোকজন ছিল এবং তাদের সঙ্গে আলোচনা করে একটা প্রজেক্ট প্রোফাইল তৈরি করতে বলেছি।’
চাহিদা অনুসারে টিকা পাওয়া যাচ্ছে না জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যে পরিমাণ ভ্যাকসিন চাই সেই অনুপাতে পাই না। আমরা ভারতের সঙ্গে ৩ কোটি ভ্যাকসিনের চুক্তি করছিলাম। কিন্তু পেয়েছি মাত্র ৭০ লাখ। আর ৩০ লাখ আমাদের উপহার দিয়েছে।’
সংক্রমণ রোধে লকডাউন বাধ্য হয়ে দিতে হয়েছে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘লকডাউন বাধ্য হয়ে দিতে হয়। কারণ, হাতে ভ্যাকসিন না থাকলে ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে লকডাউনই একমাত্র কার্যকর পন্থা। বিশ্বের সবদেশ লকডাউন দিয়েই করোনাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা লকডাউন চাই না। কারণ, লকডাউনের মাধ্যমে মানুষের, দেশের অর্থনীতির বিরাট ক্ষতি হয়ে যায়। কাজেই লকডাউন আমাদের কাম্য নয়। কিন্তু মানুষের জীবন রক্ষায়, করোনা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য লকডাউন দিতে হচ্ছে।’
এসডব্লিউ/এমএন/এফএ/১৩৩০
আপনার মতামত জানানঃ