জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) জালিয়াতির মামলায় গ্রেপ্তার কুষ্টিয়া নির্বাচন অফিসের সাবেক অফিস সহকারী আনিসুর রহমান আনিসকে শুক্রবার কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
আজ শনিবার সকালে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল হোসেন গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, গতকাল কুষ্টিয়া জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের অফিস সহকারী আনিসুর রহমান আনিসকে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এরপর আদালত তাকে কারাগারে আটক রাখার আদেশ দেন।
সূত্র জানিয়েছে, কুষ্টিয়া শহরের বাসিন্দা এম এম এ ওয়াদুদ ও তার পরিবারের সদস্যদের নাম ও তথ্য দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করেছিল একটি চক্র। উদ্দেশ্য ছিল এনএস রোডে এম এম এ ওয়াদুদের শতকোটি টাকার সম্পত্তি (বাড়িসহ জমি) আত্মসাৎ। এর অংশ হিসেবে তারা জাতীয় পরিচয়পত্র জালিয়াতি করে ছয় জনকে মালিক সাজান। ওই সম্পত্তি বিক্রিও করে দেন। জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়লে গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর প্রথমে মামলা হয় জেলার কয়েকজন রাজনৈতিক নেতাসহ ১৮ জনের নামে। আলোচিত এ ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে চিহ্নিত ব্যবসায়ী মহিবুল, যুবলীগ নেতা আশরাফুজ্জামান সুজনসহ সাত জন কারাগারে আছেন। তাদের বিচার চলছে।
পরে জালিয়াতিতে যুক্ত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় এক উপসচিবসহ পাঁচ জন নির্বাচন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা হয়। গত ৪ মার্চ কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলাটি করেন জেলার জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা আনিসুর রহমান।
সেই মামলার আসামিদের মধ্যে আছেন ঢাকার নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের উপসচিব নওয়াবুল ইসলাম, ফরিদপুরের অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান, মাগুরা সদরের উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা অমিত কুমার দাস এবং কুষ্টিয়া নির্বাচন অফিস সহকারী জি এম সাদিক সত্যবাদী। ঘটনার সময় তারা সবাই কুষ্টিয়ায় কর্মরত ছিলেন।
এ ঘটনায় একই দিন কুমারখালী থানায় করা আরেক মামলায় আসামি করা হয় কুষ্টিয়া সদরের নির্বাচন কর্মকর্তা সামিউল ইসলামকে। ঘটনার সময় তিনি কুমারখালী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা থাকায় ওই থানায় মামলাটি করা হয়। ওই সময় কুষ্টিয়া নির্বাচন অফিসে অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন আনিসুর রহমান আনিস এবং জালিয়াতিতে তার সম্পৃক্ত থাকার প্রমাণ পায় মামলার তদন্ত সংস্থা-সিআইডি।
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভোটার তালিকা আইনের ২০ ধারা, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে ২৪, ৩৩ ও ৩৫ ধারা, পেনাল কোডে ১০৯, ৪২০, ৪৬৮ ধারা ও জাতীয় পরিচয়পত্র আইনের ১৭ ও ১৮ ধারায় মামলা করা হয়েছিলো।
সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল হোসেন বলেন, ‘জালিয়াতিতে আনিসের যুক্ত থাকার প্রমাণ পাওয়ার পরপরই বৃহস্পতিবার পাবনা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি পাবনা নির্বাচন অফিসের অফিস সহকারী। জবানবন্দিতে জালিয়াতিতে তিনিসহ অন্যদের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন আনিস।’
বিষয়টি মামলার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন সিআইডির কর্মকর্তা আবুল হোসেন। তিনি বলেন, ‘এই আসামিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনেরও একটি মামলা চলছে।’
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৫৩৩
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ