মহাকাশে আধিপত্য বজায় রাখতে চীন বরাবরের মতোই বদ্ধ পরিকর। বেশ কয়েকটি সফল অভিযানের পর এবার সে ধারায় মহাকাশে স্বয়ংক্রিয় কার্গো বিমান পাঠিয়েছে দেশটি। ভবিষ্যতে এ বিমানটি মহাকাশচারীদের পাঠানোর ক্ষেত্রেও সাহায্য করবে বলে দাবি শি জিন পিং সরকারের।
রয়টার্স, স্পেস নিউজ, স্পেস ডটকম, গ্লোবাল টাইমসের মত বড় বড় গণমাধ্যম ও মহাকাশ বিষয়ক ওয়েবসাইট বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদনগুলো থেকে জানা যায়, চীনের তৈরি এ কার্গো বিমানটির নাম তিয়ানজু -২। এটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি। এ স্বয়ংক্রিয় বিমান মহাকাশ কক্ষপথ মেনেই চলাচল করবে। মহাকাশযানটি সাতটি রকেট বহন করতে সক্ষম। দক্ষিণ চীনের ওয়েংচং স্পেস লঞ্চ কেন্দ্র থেকে এটি উৎক্ষেপণ করা হয়েছে।
চীন ম্যানডেড স্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং অফিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তিয়ানজু -২ বা চীনের ‘হ্যাভেনলি ভেসেল’ দেশটির দক্ষিণ অংশের ওয়েংচং স্পেস লঞ্চ সেন্টার থেকে সাতটি রকেট নিয়ে উড়াল দিয়েছে। তিয়ানজু -২ হল চীনের দ্বিতীয় মিশন হলেও স্বয়ংক্রিয় মহাকাশযান তৈরির উদ্যোগ এটাই প্রথম।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের পর বিশ্বের দ্বিতীয় দেশ হিসেবে মঙ্গলগ্রহে রোবটযান পাঠিয়েছে চীন। চীনা ভাষার শব্দ ‘ঝুরং’ এর বাংলা অর্থ ঈশ্বরের আগুন। ১৫ মে বেইজিংয়ের স্থানীয় সময় সকাল ৭ টা ১৮ মিনিটে মঙ্গল গ্রহের উত্তর গোলার্ধের বিস্তৃত ভূখণ্ড ইউটোপিয়া প্ল্যানিশিয়াতে অবতরণ করে ঝুরং।
গতবছর মঙ্গলের কক্ষপথে তিয়ানওয়েন ১ নামে একটি নভোযান পাঠিয়েছিল চীনের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। সেই মহাকাশযানেই ছিল ঝুরং নামের রোবটযানটি।
চীনের মহাকাশ সংস্থার এক গবেষক বলেন, ‘মূলত মঙ্গলে ঝুরংয়ের অবতরণের জন্যই (গ্রহটির কক্ষপথে) পাঠানো হয়েছিল তিয়ানওয়েন ১। সঠিক এবং উপযুক্ত সময়েই সেটি মঙ্গলে অবতরণে সক্ষম হয়েছে।’
তিনি আরও জানান, পৃথিবী যেখানে নিজ কক্ষপথে একবার ঘুরতে সময় নেয় ২৪ ঘণ্টা, সেখানে মঙ্গলের লাগে ২৪ ঘণ্টা ৩৯ মিনিট। অর্থাৎ মঙ্গলগ্রহে দিনের হিসাব হয় ২৪ ঘণ্টা ৩৯ মিনিটে।
সেই হিসেবে ৯০ দিন মঙ্গলগ্রহে অবস্থান করবে ঝুরং। এই সময়সীমার মধ্যেই এই গ্রহটির ছবি এবং ভূতাত্ত্বিক অবস্থা সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করবে রোবটযানটি। অবতরণের পাঁচ দিন পর মঙ্গলগ্রহের ছবি পাঠিয়েছে চীনা রোবটযান ঝুরং। দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত্ব বার্তাসংস্থা সিনহুয়া নিউজে সেই ছবি প্রকাশ করেছে চীনের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা।
রোবটযানটির কাঠামোর সঙ্গে সংযুক্ত ক্যামেরাতে তোলা ওই ছবিতে ঝুরংয়ের কাঠামোর কিছু অংশ ও সোলার প্যানেল দৃশ্যমান হয়েছে, পাশাপাশি লালগ্রহ মঙ্গলের ভূমির কিছু অংশও উঠে এসেছে। সিনহুয়া নিউজে প্রকাশিত সেই ছবিটির ক্যাপশনে বলা হয়েছিলো, ইন্টারনেটের সামনে বসে থাকা আগ্রহী জনগণ, এই সেই ছবি, যার জন্য আপনারা অপেক্ষা করেছিলেন।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৮০৩
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগীতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ