![](https://statewatch.net/wp-content/uploads/2021/05/নদীতে-লাশ-300x169.jpg)
বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মালদা ও মুর্শিদাবাদ জেলার ফারাক্কা পয়েন্টে ভেসে আসছে অসংখ্য লাশ। উজান থেকে ভেসে আসা এসব লাশ গঙ্গা নদী থেকে তুলে নদী তীরে পুঁতে ফেলা হচ্ছে।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে এমন খবর প্রকাশিত ও প্রচারিত হওয়ায় পদ্মা নদীতে নজরদারির নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
জানা গেছে, ফারাক্কা বাঁধের ১০ কিলোমিটার উজানে রাজমহলে লাশ ভাসতে দেখলেই ভারতের পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যরা তা তুলে নদী তীরে পুঁতে ফেলছেন।
কয়েকদিনে ফারাক্কা বাঁধে আটকেপড়া অর্ধশতাধিক মরদেহ উদ্ধারের খবর বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কাছে এসেছে।
মঙ্গলবার বিজিবির ৫৩ ব্যাটালিয়ানের অধিনায়ক লে. কর্নেল সুরুজ মিয়া দৈনিক যুগান্তরকে বলেন, ফারাক্কার উজানে গঙ্গা নদীতে বিপুল সংখ্যায় মরদেহ ভাসিয়ে দেওয়ার বিষয়ে তারা অবগত। ফারাক্কার তিনটি গেট খোলা থাকায় লাশ পদ্মা নদীতে চলে আসার আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে পদ্মায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো মরদেহ পাওয়া যায়নি। স্থানীয় প্রশাসন থেকে নদী তীরবর্তী মানুষদের সতর্ক ও সজাগ থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে।
ভারতের উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বার, উত্তর প্রদেশের বারানসী, কানপুর, এলাহাবাদ, বিহারের পাটনা, মুঙ্গের, ভাগলপুর ও পশ্চিমবঙ্গের মালদা ও মুর্শিদাবাদ জেলার বাসিন্দাদের গঙ্গার পানি ব্যবহার থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির জনস্বাস্থ্য বিভাগ। এ কারণে বাংলাদেশও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে।
রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিস্তীর্ণ সীমান্ত এলাকায় অনুপ্রবেশ রোধে ও পদ্মায় নজরদারি রাখতে বিজিবির পক্ষ থেকে গ্রামে গ্রামে মাইকিং করা হচ্ছে। এ সীমান্ত দিয়ে কেউ যাতে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে সে ব্যাপারে গ্রামবাসীকে সতর্ক থাকতে বিজিবির পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ জানান, বিস্তীর্ণ সীমান্ত দিয়ে কেউ যাতে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য বিজিবিকে বলা হয়েছে। সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদেরও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
ভারতের বিভিন্ন নদীতে ভাসছে অসংখ্য লাশ
ভারতের উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ ও বিহারে নদীতে গত কয়েক দিন অসংখ্য লাশ ভাসতে দেখা গেছে। দেশটিতে করোনাভাইরাসে মৃত্যুবরণকারীদের লাশ বলে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
খবরে বলা হয়, উত্তরপ্রদেশের ২৭ জেলায় গঙ্গার তীরে কবর দেওয়া হয়েছে অসংখ্য লাশ। গঙ্গার ১ হাজার ১৪০ কিলোমিটার যাত্রাপথে নদীর তীরে ২ হাজারের বেশি লাশ ভাসিয়ে দেয়া হয়েছে।
ভারতীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, উত্তরপ্রদেশের বিজনৌর, মীরাট, মুজাফ্ফরনগর, বুলন্দশহর, হাপুর, আলিগড়, বদায়ুঁ, শাহজাহানপুর, কনৌজ, কানপুর, উন্নাও, রায়েরবেরেলী, ফতেহপুর, প্রয়াগরাজ, প্রতাপগর, মির্জাপুর, বারাণসী, গাজিপুর, বালিয়া প্রভৃতি জেলায় এই দৃশ্য দেখা গেছে। এর মধ্যে কানপুর, কনৌজ, উন্নাও, গাজিপুর ও বালিয়ার পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ।
কনৌজের মহাদেবী গঙ্গাঘাটের কাছে সাড়ে তিন শতাধিক লাশ পুঁতে ফেলা হয়েছে।
ঘাটে কর্মরত রাজনারায়ণ পাণ্ডে নামের এক ব্যক্তি বলেছেন, ‘লাশগুলো মাটি চাপা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু গঙ্গার পানির স্তর বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মাটি সরে যাচ্ছে। ফলে অনেক সময় মৃতদেহ নদীতে ভেসে যাচ্ছে।’
কানপুরের শেরেশ্বর ঘাটের কাছেও একই ছবি চোখে পড়ছে। যে দিকে চোখ পড়ছে সে দিকেই লাশ আর লাশ।
স্থানীয়রা বলছেন, চার শতাধিক মৃতদেহ কবর দেওয়া হয়েছে সেখানে। মাটি সরে গিয়ে কিছু লাশ বেরিয়ে পড়ছে। এছাড়া চিল, শকুনও ভিড় করছে। এসব লাশ থেকে সংক্রমণ ও দূষণ ছড়াতে পরে বলে আশঙ্কা করছেন দেশটির পরিবেশবিদরা।
তবে উন্নাওয়ের পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ বলে সেখানকার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন। এই এলাকার দু’টি ঘাটের (শুক্লাগঞ্জ ও বক্সার) কাছে ৯০০-র বেশি মৃতদেহ কবর দেওয়া হয়েছে। অনেক লাশ টেনে বের করে নিয়ে যাচ্ছে শেয়াল, কুকুর।
ভারতফেরত আরও তিনজনের শরীরে করোনার ভারতীয় ধরন মিলেছে
যশোর ও নড়াইলে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকা আরও তিনজনের নমুনায় করোনার ভারতীয় ধরন (ভ্যারিয়েন্ট) শনাক্ত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার যশোর জিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জিনোম সেন্টার ল্যাব থেকে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। এনিয়ে দেশে ১১ জনের দেহে ভারতীয় ধরনের দেখা মিলেছে।
ল্যাব সূত্রে জানা গেছে, ১২ মে যশোর সদর হাসপাতাল থেকে দুজনের এবং ১৬ মে নড়াইল থেকে একজনের নমুনা সংগ্রহ করে করোনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। তাদের করোনা পজিটিভ প্রতিবেদন আসে।
ভারতফেরত যাত্রী হওয়ায় তাদের করোনার ধরন শনাক্তের পরীক্ষা করা হয়। তাদের নমুনায় ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট বি ১.৬১৭.২–এর অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। তিনজনের মধ্যে দুজন পুরুষ ও অপরজন নারী। নারীর বয়স ২৭। পুরুষ দুজনের বয়স ৬১ ও ৩৭।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জিনোম সেন্টারের সহযোগী পরিচালক অধ্যাপক ইকবাল কবীর জাহিদ বলেন, ভারতফেরত যাত্রীদের করোনা শনাক্ত হলেই ভারতীয় ধরন পরীক্ষা করা হচ্ছে। আজ তিনজনের শরীরে ভারতীয় ধরন শনাক্ত হয়েছে। এর আগে আরও দুজনের শরীরে একই ধরন শনাক্ত হয়।
অধ্যাপক ইকবাল কবির বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে এটি উদ্বেগজনক ধরন। এ ধরন ইতিমধ্যে বিশ্বের ৬০টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। ডাবল মিউট্যান্ট না হলেও এটি উদ্বেজনক। এটি ২০ শতাংশ বেশি সংক্রমণ ঘটাতে পারে বলেও জানান তিনি।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/২০০৭
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ
![Donate](https://statewatch.net/wp-content/uploads/2021/06/xcard.jpg.pagespeed.ic.qcUrAxHADa.jpg)
আপনার মতামত জানানঃ