বাংলাদেশের একটি ওষুধ কোম্পানিকে সিনোফার্মের কোভিড-১৯ টিকা তৈরির অনুমতি দেওয়ার যে খবর ছড়িয়েছে, তা নাকচ করেছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। এখনও কাউকে এই ধরনের অনুমতি দেওয়া হয়নি বলে রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে এই কর্তৃপক্ষ। এনিয়ে বিভ্রান্তি না ছড়ানোর অনুরোধও করা হয়েছে।
টিকার সঙ্কটে পড়া বাংলাদেশ চীনা প্রতিষ্ঠান সিনোফার্মের টিকা কিনে প্রয়োগের পাশাপাশি ওই টিকা বাংলাদেশে তৈরির পথও খুলেছে। তবে বাংলাদেশি কোনো কোম্পানির নিজেদের কারখানায় করোনাভাইরাসের ওই টিকা তৈরি করতে হলে সরকারের অনুমোদন লাগবে। সেই অনুমোদনের কোনো খবর সরকারিভাবে জানানো না হলেও একটি কোম্পানি অনুমতি পেয়েছে বলে রোববার খবর ছড়ায়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে এই মর্মে সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে যে চীনের সিনোফার্ম কর্তৃক উৎপাদিত ভ্যাকসিন ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের কারখানায় উৎপাদনের নিমিত্তে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর কর্তৃক অনুমোদন প্রদান করা হয়েছে, যা সঠিক নয়।
তিনি বলেন, দেশে কোভিড-১৯ এর টিকা উৎপাদনের অনুমতি এখন পর্যন্ত কোনো ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয়নি। এই ধরনের বিভ্রান্তিমূলক সংবাদ প্রকাশ করে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি না করার জন্য সকল প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়াকে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হচ্ছে।
গত ২৯ এপ্রিল চীনের সিনোফার্মের তৈরি টিকা জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।
সেদিন সংবাদ সম্মেলনে মেজর জেনারেল মাহবুবুর বলেছিলেন, সিনোফার্মের টিকা দেশেই তৈরি করা হবে। দেশের তিনটি ঔষধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের টিকা তৈরির সক্ষমতা রয়েছে। ওই তিনটির মধ্যে একটি হল ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালস।
চীনের পাশাপাশি রাশিয়ার টিকাও দেশে তৈরির পথ খুলে রেখেছে বাংলাদেশ। তা নিয়ে আলোচনা ও কথা চালাচালি চললেও চূড়ান্ত কোনো খবর এখনও আসেনি।
এদিকে দেশে যে পরিমাণ করোনার অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা মজুত আছে, তাতে আর সপ্তাহখানেক টিকা কার্যক্রম চালানো যাবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রথম ডোজ টিকা নেওয়া ব্যক্তিদের শতভাগকে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া যাবে না। গতকাল রোববার অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য বুলেটিনে এসব তথ্য জানানো হয়।
বুলেটিনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক (সিডিসি) অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম বলেন, যে পরিমাণ মজুত আছে তাতে সর্বোচ্চ এক সপ্তাহ টিকা কার্যক্রম চলতে পারবে। তবে এটি প্রতিষ্ঠানভেদে এক-দুই দিন কম-বেশি হতে পারে। কারও যদি আজকে (রোববার) মজুত শেষ হয়ে যায়, তাহলে কালকে (সোমবার) কাউকে আর দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া যাবে না। যারা অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন, তাদের অন্য কোম্পানির টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার সুযোগ নেই।
বুলেটিনে বলা হয়, মজুত টিকা শেষ হওয়ার পর নতুন করে সংগ্রহ করতে না পারা পর্যন্ত অক্সফোর্ড টিকা দেওয়া বন্ধ থাকবে। আর ৮ সপ্তাহের ব্যবধানে টিকা দেওয়ার বিষয়টি কোনো কোনো দেশে ১২ থেকে ১৬ সপ্তাহ পর্যন্ত দীর্ঘায়িত করা হয়েছে।
চীনের সঙ্গে সিনোফার্মের টিকা পাওয়ার বিষয়ে ফলপ্রসূভাবে আলোচনা এগিয়ে চলছে বলেও জানান সিডিসির পরিচালক নাজমুল ইসলাম। তিনি বলেন, এই মাসের শেষে অথবা সামনের মাসের শুরুতে সিনোফার্ম টিকা নিয়ে আশার খবর শোনানো যাবে। বাংলাদেশের যে শিক্ষার্থীরা চীনের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করছেন, তাঁরা সিনোফার্মের টিকা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন। এ ছাড়া চীনের যেসব প্রকৌশলী, পরামর্শক ও শ্রমিক বাংলাদেশে কাজ করছেন, তারা অগ্রাধিকার পাবেন। এরপর এই টিকা পাবেন দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ, নার্সিং ইনস্টিটিউট ও ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) শিক্ষার্থীরা।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১১৫৯
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ