বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স গাভি পরিচালিত করোনাভাইরাসের টিকা বিতরণ কর্মসূচি কোভ্যাক্স উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান মডার্না। সোমবার উভয় পক্ষের মধ্যে এ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। নতুন এ চুক্তির ফলে কোভ্যাক্স কর্মসূচির আওতায় বিভিন্ন দেশে টিকা সরবরাহ অপেক্ষাকৃত সহজ হবে। তবে ভ্যাকসিনের বেশিরভাগ চালানের জন্যই আগামী বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
কোভ্যাক্স-এর পূর্ণাঙ্গ রূপ হলো কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনস গ্লোবাল অ্যাকসেস ফ্যাসিলিটি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সস্থা (ডব্লিউএইচও) ছাড়াও উদ্যোগটির সঙ্গে রয়েছে কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস ইনোভেশন ও দাতব্য সংস্থা গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিন অ্যান্ড ইমিউনাইজেশন (জিএভিআই)। এ উদ্যোগের লক্ষ্য হচ্ছে, ভ্যাকসিন মজুত করে না রেখে ধনী-গরিব নির্বিশেষে সর্বোচ্চ ঝুঁকির দেশগুলোতে তা বণ্টন করার জন্য বিভিন্ন দেশের সরকারকে উৎসাহিত করা।
এ বছর শেষ নাগাদ বিশ্বের ৯২টি দেশ ও অঞ্চলের জনসংখ্যার ২৭ শতাংশ যেন টিকা পায়, সেই লক্ষ্যে কাজ করেছে কোভ্যাক্স। এত দিন অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার ওপরই নির্ভরশীল ছিল বৈশ্বিক এই উদ্যোগ। এরই মধ্যে দরিদ্র দেশগুলোতে ৪ কোটি ৯০ লাখ টিকা সরবরাহ করেছে তারা। তবে চুক্তি অনুযায়ী অক্সফোর্ড–অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা পাচ্ছে না কোভ্যাক্স।
এক বিবৃতিতে কোভ্যাক্স উদ্যোগে থাকা গ্যাভি জানিয়েছে, ২০২১ সালের শেষ তিন মাসে মডার্নার টিকার সরবরাহ শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বছর শেষ হওয়ার আগে ৩ কোটি ৪০ লাখ টিকা সরবরাহ করবে তারা। ২০২২ সালে বাকি ৪৬ কোটি ৬০ লাখ ডোজ পাওয়া যাবে।
গ্যাভির প্রধান নির্বাহী সেথ বার্কলি বলেন, ‘মডার্নার সঙ্গে এ চুক্তি করতে পেরে আমরা খুবই আনন্দিত। আরেকটি উচ্চমাত্রায় কার্যকর টিকা পেতে যাচ্ছে কোভ্যাক্সের অংশীদাররা।’
মডার্নার প্রত্যাশা, করোনা ভ্যাকসিন বিক্রি থেকেই এ বছর তাদের ১৮ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি ব্যবসা হবে। গত সপ্তাহেই প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছিল যে, নতুন বিনিয়োগের মাধ্যমে তাদের উৎপাদন ক্ষমতা বেড়েছে এবং ২০২২ সালে তারা তিন বিলিয়ন ডোজ ভ্যাকসিন উৎপাদন করবে। তবে সাউথ আফ্রিকা ও ভারতের মতো দেশগুলোতে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্টের প্রভাব নিয়ে উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন মডার্নার সিইও স্টিফেন বানসেল।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের টিকা প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান মডার্নার কোভিড-১৯ টিকাটি জরুরি ব্যবহারের জন্য তালিকাভুক্ত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ৩০ এপ্রিল প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়। জরুরি ব্যবহারের জন্য টিকাটি তালিকাভুক্তির ফলে যেসব দেশ কার্যকর টিকা পেতে সমস্যায় পড়ছিল, তারা দ্রুত তা পেতে পারবে।
বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিলো, মডার্নার টিকাটিসহ এখন পর্যন্ত মোট পাঁচটি টিকা জরুরি ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পেল। যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর জরুরি ব্যবহারের জন্য মডার্নার টিকাটির অনুমোদন দিয়েছিল। এরপর গত ৬ জানুয়ারি ইউরোপিয়ান মেডিসিনস এজেন্সি ইউরোপজুড়ে মডার্নার টিকাটি বাজারজাতকরণ বৈধ ঘোষণা করে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তাদের স্ট্র্যাটেজিক অ্যাডভাইজরি গ্রুপ অব এক্সপার্টস অন ইমুনাইজেশন (এসএজিই) পরীক্ষা করে দেখেছে, মডার্নার টিকাটি ৯৪ দশমিক ১ শতাংশ কার্যকর।
অন্য যেসব টিকা জরুরি ব্যবহারের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরুরি অনুমোদন পেয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে ফাইজার-বায়োএনটেক, অ্যাস্ট্রাজেনেকা, সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া ও জ্যানসেনের টিকা।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১২৪২
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ