পাকিস্তানের সেনাবাহিনীকে দেশটির ‘সবচেয়ে বড় ভূমিদস্যু’ বলে আখ্যায়িত করেছে লাহোরের হাইকোর্ট। একইসাথে অবৈধ ভূমি দখলে জড়িত থাকার অভিযোগে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা আবাসন কর্তৃপক্ষের (ডিএইচএ) ব্যাপক সমালোচনা করেছেন লাহোরের হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মোহাম্মদ কাসিম খান। ভূমি দখলের অভিযোগে করা এক পিটিশনের শুনানি চলাকালে গত বুধবার(২৮ এপ্রিল) লাহোর হাইকোর্টের পক্ষ থেকে ক্ষোভ ছেড়ে এমন মন্তব্য করা হয়। খবর ডন পত্রিকা
শুনানিতে প্রধান বিচারপতি মোহাম্মদ কাশিম খান বলেন, সেনাবাহিনী যেভাবে সাধারণ মানুষের জমি দখল করছে তা ভূমিদস্যুতা ছাড়া আর কিছুই না।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডনের খবরে বলা হয়েছে, ইভাকিউইয়ি ট্রাস্ট প্রোপার্টি বোর্ডের (ইটিপিবি) কাছ থেকে বৈধভাবে ইজারা নেওয়া জমিতে যাতে ডিএইচএ কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ না করে, সেই নির্দেশনা চেয়ে তিনজন সাধারণ ব্যক্তি আদালতে রিট আবেদন করেন।
শুনানির একপর্যায়ে প্রধান বিচারপতি হাইকোর্টের জমিও সেনাবাহিনী দখলে নিয়েছে বলে জানান। এ নিয়ে সেনাবাহিনীর প্রধানকে একটি চিঠি লিখতে লাহোর হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।
এ ছাড়া ভূমি দখলের বিষয়টির সত্যতা নিরূপণে সেনাবাহিনীর লাহোর ক্রপসের কমান্ডারকে আদালতে তলব করা হতে পারে বলেও উল্লেখ করে তিনি।
‘অবৈধ’ ভূমি দখলে সম্পৃক্ততা থাকায় ডিএইচএ’র প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে মোহাম্মদ কাসিম বলেন, সেনাবাহিনী সম্পর্কে তিনি মিথ্যা কথা বলেননি। সৃষ্টিকর্তা তাকে সত্য বলার সাহস দিয়েছেন।
এ সময় ডিএইচএ’র কাউন্সেল আলতাফুর রেহমান বিষয়টি তার জানা নেই বলে জানান। বিষয়টি যাচাইয়ের জন্য প্রধান বিচারপতি লাহোরের ক্রপস কমান্ডারকে সমন করেন। তিনি তার পর্যবেক্ষণে বলেন, ‘সেনাদের উর্দি মানুষের সেবার জন্য, রাজার মতো শাসন করার জন্য নয়।’
শুনানির একপর্যায়ে ক্যাপিটাল সিটি পুলিশ কর্মকর্তাকে তলব করেন আদালত।
আদালতে বিরতির পর শুনানি শুরু হলে লাহোরের ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা মোহাম্মদ দোগার হাজির হন। প্রধান বিচারপতি তাকে ডিএইচএ’র অবৈধ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে না পারলে চাকরি ছেড়ে দিতে বলেন। ডিএইচএর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পেলে তার এফআইআর নেওয়ার নির্দেশ দেন এ পুলিশ কর্মকর্তাকে।
প্রধান বিচারপতি তার পর্যবেক্ষণে বলেছেন, অবসরে যাওয়া সেনা কর্মকর্তাদের জন্য আকর্ষণীয় কল্যাণমূলক পরিকল্পনা রয়েছে, যা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের জন্য নেই।
‘সেনাবাহিনীই শুধু ত্যাগ স্বীকার করে? পুলিশ, আইনজীবী, বিচারপতি, তারা কোনো ত্যাগ স্বীকার করে না?’- এমন প্রশ্ন করেন তিনি।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৬৪৭
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ