সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ ভিডিও শেয়ার করার অভিযোগে মানিকগঞ্জে যুবদল নেতার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে। শুক্রবার (২৩এপ্রিল) বিকালে শিবালয় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের যুগ্ম সম্পাদক মো. ইমরান চৌধুরী বাদী হয়ে শিবালয় থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় অভিযুক্ত শেখ মানিক মানিকগঞ্জের শিবালয় থানার দাসকান্দি গ্রামের মৃত নেয়ামতের ছেলে। শেখ মানিক শিবালয় ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক। শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ কবির শুক্রবার রাত ৮টায় মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বাদী মামলায় উল্লেখ করেন, গত ৪ এপ্রিল শেখ মানিক তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে একটি কুরুচিপূর্ণ ‘বুবুজান বুবুজান আপনি ভারত চলে যান’ ভিডিওটি শেয়ার করেন। ভিডিওটি শেয়ারের ফলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মান চরমভাবে ক্ষুণ্ন হওয়াতে এলাকায় তীব্র নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া এবং চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। রাষ্ট্রবিরোধী কাজের অংশ হিসেবে সব সময়ই তার ফেসবুক আইডিতে বাংলাদেশের সরকার প্রধানসহ বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করে আসছে।
মামলার বাদী মো. ইমরান চৌধুরী বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের একজন আদর্শিক কর্মী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যে আমি ক্ষুব্ধ হয়েছি। এ জন্যই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা করেছি।’
এ ব্যাপারে শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ কবির বলেন, ‘সন্ধ্যায় শেখ মানিকের নামে থানায় মামলা রুজু হয়েছে। তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এর আগে ফেসবুকে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আপত্তিকর পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলায় এক যুবদল নেতাকে আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে রামনারায়ণপুর ইউনিয়নের নিজ বাড়ি থেকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলায় তাকে আটক করা হয়। চাটখিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
আটক যুবদল নেতার নাম আবদুল করিম পাটোয়ারী মিন্টু (৪০)। তিনি উপজেলার রামনারায়ণপুর ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম-সম্পাদক এবং একই ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক। মিন্টু একই ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের বিষু পাটোয়ারী বাড়ির শফিক উল্লাহ পাটোয়ারীর ছেলে।
চাটখিল থানার ওসি বলেন, ‘আবদুল করিম পাটোয়ারীকে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে বিষোদগার করে নিজের ব্যবহৃত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে আটক করা হয়। এ ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আগামীকাল (শুক্রবার) তাকে বিচারিক আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহনাজ হুদা বলেন, সংবিধানে নাগরিকদের স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকার দিয়েছে। যেখানে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অনেক ক্ষেত্রে মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব হচ্ছে।
“সবার মধ্যে একটা ভীতি যে এইটা বললে কী হবে! এবং আমরাও বলি যে এতকিছু বলো না তোমার বিপদ হবে। এটা স্বাধীন দেশে আমরা কেন করবো? এটা কিন্তু বেশ স্বার্থকভাবে সরকার করে ফেলেছে। সেল্ফ সেন্সরশিপ একটা ভীতি প্রদর্শন, ভীতি মানুষের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়া।”
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৯০৯
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগীতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ