স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, আমি কনফিডেন্সের সঙ্গে বলতে পারি, ৯৯ ভাগ স্থাপনা আইন অমান্য করে তৈরি করা হয়েছে। আমাদের সিস্টেম এভাবে তৈরি করা হয়েছে যেখানে জবাবদিহিতা কম। তিনি বলেন, আমাদের খাল অনেকগুলো দখল হয়ে গেছে। খালগুলো অবৈধ দখলদাররা দখল করেছে এবং সরকারও দখল করেছে। সরকার আইন করে খাল দখল করেছে। তাই সেগুলো উদ্ধার করা সম্ভব না। কিন্তু যেগুলো উদ্ধার করা সম্ভব, আমরা সেগুলো উদ্ধার করার চেষ্টা করছি। আমি বিশ্বাস করি এটা সম্ভব। গতকাল শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরাম আয়োজিত ‘ঢাকার ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা ও খাল আধুনিকায়ন’ শীর্ষক নগর সংলাপে তিনি এ মন্তব্য করেন।
স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী বলেন, আমার কিছু টাকা পয়সা রয়েছে, তাই পবিত্র উদ্দেশ্য ছাড়া আমার অন্য কোনো ধান্দা নেই। আমি জানি কানাডায় টাকা থাকলে, সেই টাকা আমার কোনো কাজে লাগবে না। আমি কানাডায় যাইতেও পারবো না, সেখানে গিয়ে থাকতেও পারবো না, খাইতেও পারবো না। আমি বোকা মানুষ না, আমি জানি কোনটা আমার জন্য ভালো। আমি আমার দেশকে ভালোবাসি, তাই আমি আমার সম্পর্ণ জীবন এ পবিত্র মাটিতেই কাটাতে চাই।
মন্ত্রী বলেন, আমরা সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য ভেনিস, সিঙ্গাপুর অথবা সান্তোসা বেড়াতে যাই। এমন একটি শহর গড়ার স্বপ্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেখেছেন। প্রধানমন্ত্রীর এ স্বপ্ন পূরণের জন্য আমি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দুই মেয়রকে নিয়ে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। ঢাকাকে বাসযোগ্য আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন শহরে রূপান্তরিত করতে হাতিরঝিল থেকে বনানী পর্যন্ত এবং ইউনাইটেড হাসপাতাল পর্যন্ত ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এবং এ উদ্যোগ বাস্তবে রূপ দিতে প্রকল্প নেয়া হচ্ছে। উদ্যোগটির সঙ্গে নগর পরিকল্পনাবিদ, স্থপতিসহ সব বিশেষজ্ঞকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ও ড্যাপের আহ্বায়ক বলেন, ডেমোগ্রাফিক সাইজ অর্থাৎ শহরে কত মানুষ বসবাস করবে সে অনুযায়ী পরিকল্পনা নিতে হবে। এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, পূর্বাচল ১০ লাখ মানুষের বসবাসের জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু সেখানে যদি ৫০ লাখ মানুষ বসবাস করে তাহলে তা আর বাসযোগ্য থাকবে না।
খালের দায়িত্ব পাওয়ার পর দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র এরই মধ্যে উচ্ছেদ কাজ শুরু করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভুয়া কাগজপত্র তৈরি ও খাল দখল করে তার ওপর বিল্ডিং বানানো হয়েছে। যারা এসব করেছে তারা যত ক্ষমতাশালী হোক না কেন আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকা শহরের খালগুলো উদ্ধার করা হবে।
মন্ত্রী বলেন, ঢাকা নগরীর অন্যতম সমস্যা বর্জ্য। এটি সমাধান করার জন্য মন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কাজ আরম্ভ করা হয়েছে। বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞতার আলোকে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটিকে অনুমোদন দিয়েছেন। বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজ শুরু হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এটি চালু হলে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আমূল পরিবর্তন আসবে। এসময় বর্জ্য কালেকশনে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্লানার্স (বিআইপি)’র সভাপতি ড. আকতার মাহমুদ, ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের চেয়ারম্যান এম এনামুল হক, স্থপতি ইকবাল হাবিব, পরিকল্পনাবিদ ড. আদিল মোহাম্মদ খান এবং ড্যাপের প্রকল্প পরিচালক আশরাফুল ইসলাম অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন।
এসডব্লিউ/এমএন/এফএ/১৩০০
আপনার মতামত জানানঃ