নিউজউইক ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিভিউর গবেষণার ওপর ভিত্তি করে তৈরি একটি নতুন মানচিত্র প্রকাশ করেছে। সেই মানচিত্রে বিশ্বের সবচেয়ে অপছন্দের দশটি দেশের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এই তালিকা আন্তর্জাতিক প্রতিবেদন ও জনমত জরিপের সমন্বয়ে তৈরি, যা সরকার, নীতি ও বিশ্বব্যাপী আচরণের প্রতি ক্রমবর্ধমান হতাশাকে প্রতিফলিত করে।
২০২৫ সালের শুরু থেকেই বিশ্বব্যাপী দেখা দিয়েছে নানা উদ্বেগ। সেইসঙ্গে পরিবর্তন এসেছে মতামতেও। ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিভিউয়ের গবেষণার ওপর ভিত্তি করে সম্প্রতি নিউজউইক প্রকাশিত একটি নতুন মানচিত্রে উঠে এসেছে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ঘৃণিত ১০টি দেশের নাম।
নিউজউইকের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক প্রতিবেদন এবং জনমত জরিপের মিশ্রণ থেকে এই র্যাঙ্কিং তৈরি করা হয়েছে।
বলা হচ্ছে, জরিপের এই ফল বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন সরকার ও তাদের নীতির প্রতি ক্রমবর্ধমান হতাশারই প্রতিফলন। বিশ্বের সবচেয়ে ঘৃণিত দেশের তালিকায় ভারত রয়েছে ১০ম স্থানে।
দেশটি সম্পর্কে বলা হয়েছে, ক্রমবর্ধমান ধর্মীয় উত্তেজনা, সংখ্যালঘুদের প্রতি আচরণ এবং ইন্টারনেট সেন্সরশিপের কারণে বিশ্বব্যাপী ভারতের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া চলমান সীমান্ত বিরোধ এবং অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা আগুনে ঘি ঢালছে।
এদিকে, এই তালিকার শীর্ষে রয়েছে চীন। প্রতিবেদন মতে, চীন প্রায়শই তার কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থা, ব্যাপক সেন্সরশিপ এবং বিশ্বব্যাপী দূষণে ভূমিকার জন্য সমালোচিত হয়। হংকং, তাইওয়ান এবং ম্যাকাওয়ের স্বাধীনতা দিতে অস্বীকৃতি এবং উইঘুর মুসলিম জনগোষ্ঠীর প্রতি দেশটির আচরণ বিশ্বব্যাপী অবিশ্বাসকে (চীনকে) আরও গভীর করেছে।
বিশ্বের সবচেয়ে ঘৃণিত দেশের তালিকায় দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে যথাক্রমে দুই পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া। চতুর্থ স্থানে কিম জং উনের দেশ উত্তর কোরিয়া।
গাজায় গণহত্যা চালানো ইসরায়েল রয়েছে এই তালিকার পঞ্চম স্থানে। এছাড়াও ষষ্ঠ, সপ্তম এবং অষ্টম অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে পাকিস্তান, ইরান ও ইরাক। নবম ও দশম স্থানে জায়গা পেয়েছে যথাক্রমে সিরিয়া এবং ভারত।
উল্লেখ্য, এই র্যাঙ্কিং শুধু সরকারের নীতিমালার প্রতিফলন নয় এটি দেখায় একটি দেশের আচরণ, মূল্যবোধ এবং সংকট মোকাবিলার ধরন তাদের বৈশ্বিক ভাবমূর্তিকে কীভাবে গড়ে তোলে। যখন বিশ্বজুড়ে শান্তি আলোচনা চলছে, তখন নানা যুদ্ধ, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা ও সাংস্কৃতিক দ্বন্দ্ব মানুষকে আরও বেশি সমালোচক করে তুলছে।
ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিভিউ বলেছে, কাউকে ঘৃণা করা সাধারণত একক কোনো কারণে হয় না। একটি দেশের সামরিক কর্মকাণ্ড থেকে শুরু করে তার পপ সংস্কৃতি এবং এমনকি বিদেশে তার পর্যটকদের আচরণও সে দেশের ভাবমূর্তিকে প্রভাবিত করে। বিশ্ব যতই একে অপরের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে, পারস্পরিক বিচারও ততই বেড়ে চলেছে।
আপনার মতামত জানানঃ