সেপ্টেম্বর, ১৯৪৯ সাল। ব্রিটিশদের হাত থেকে ভারত ও পাকিস্তানের স্বাধীনতা লাভের দুই বছর পেরিয়ে গেছে। কিন্তু মণিপুরের ভবিষ্যৎ তখনও অনিশ্চিত। অন্য রাজ্যগুলো ততদিনে ঠিক করে ফেলেছে, কে কোন দেশে যোগ দেবে। মণিপুরের জন্য এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া তখনও অতটা সহজ ছিল না।
আসামের তৎকালীন গভর্নর শ্রী প্রকাশ ও তার আদিবাসীবিষয়ক উপদেষ্টা নারি রুস্তমজি ভারতের স্বাধীনতার পর রাজ্যগুলোর একত্রীকরণের ক্ষেত্রে ভি পি মেননের পরামর্শ অনুযায়ী বোম্বে (বর্তমান মুম্বাই) গিয়ে অসুস্থ সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের সঙ্গে দেখা করেন। প্যাটেল তখন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
হায়দরাবাদ ও কাশ্মীরের মত রাজ্যের সিদ্ধান্তগুলো ভারতের স্বাধীনোত্তর রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কী প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে অনেক সময় ও চিন্তা ব্যয় করেন প্যাটেল ও মেনন। কিন্তু ভারতে একত্রীকরণের পেছনে থাকা ব্যক্তিদের জন্য মণিপুর ছিল ‘একটি ছোট মাছ’।
মণিপুর রাজ্যে সমস্যার প্রভাব সম্পর্কে মেননকে ব্যাখ্যা করেন শ্রী প্রকাশ ও রুস্তমজি। তখন ওই অঞ্চলের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। সব শুনে মেনন স্বীকার করেন যে, তাদের অবশ্যই এখন প্যাটেলের সঙ্গে দেখা করে তার পরামর্শ চাইতে হবে।
বোম্বেতে প্যাটেলের বাড়িতে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করেন শ্রী প্রকাশ ও রুস্তমজি। প্যাটেলের বিছানার পাশে বসে তারা উত্তর-পূর্ব রাজ্যের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সম্পর্কে তাদের উদ্বেগের কথা জানান। তাদের কথা চুপচাপ বসে শুনছিলেন প্যাটেল।
এক পর্যায়ে প্যাটেল বললেন, “শিলংয়ে আমাদের কি কোনও ব্রিগেডিয়ার নেই?” এরপর আর কোনও কথা বলেননি তিনি।
রুস্তমজি তার স্মৃতিকথায় উল্লেখ করেছেন, “তিনি (প্যাটেল) কী বোঝাতে চেয়েছিলেন, তা তার কণ্ঠস্বরেই বোঝা যাচ্ছিল”।
এরপর প্যাটেলের মেয়ে মানিবেন তাদের কক্ষ থেকে বের করে দেন। শেষ হয় কথোপকথন। এরপর যা ঘটেছিল, তা প্রায়ই ভারতের সঙ্গে মণিপুরকে একত্রীকরণের ক্ষেত্রে অন্যায় ও জোরপূর্বক বলে উঠে আসে নানা বর্ণনায়।
নিউ ইয়র্কের বার্ড কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক সঞ্জীব বরুয়া বলেন, “আধুনিক ইতিহাসের সমস্ত মণিপুরী বর্ণনা এই ঘটনা দিয়ে শুরু হয়। সেখানে বর্ণনা করা হয়, তারা কীভাবে প্রতারিত হয়েছিল। অধিকাংশ নীতি নির্ধারক এ সম্পর্কে সচেতন নন।”
তার মতে, এই ঘটনা স্বাধীনোত্তর ভারতের অস্তিত্বের প্রায় পুরো সময়কালে মণিপুরে বিদ্রোহী আন্দোলন এবং জনগণের অনেক অভিযোগের কারণ হয়েছে।
এটি প্রায়ই ভুলে যাওয়া হয় যে, মণিপুরী ‘জাতীয়তাবাদী’ চেতনা ভারতের সঙ্গে একত্রীকরণের সময়ের আগেকার। ১৯৪৭ সালে যখন ব্রিটিশ প্রভাব শেষ হয়, তখন মণিপুর রাজ্য নিজেদের জন্য সংবিধান প্রণয়ন করেছিল। এর মাধ্যমে রাজ্যটি একটি সংবিধান ও প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার পায়।
১৮৯১ সালে এক ব্রিটিশের হাতে প্রশাসনিক ক্ষমতা ন্যস্ত হওয়ার আগে মেইতেই রাজ্যটি যেভাবে ছিল, সেভাবে তার অতীতের গৌরব পুনরুদ্ধারের একটি সুপ্রতিষ্ঠিত জাতীয়তাবাদী আকাঙ্ক্ষাও ছিল।
সমাজবিজ্ঞানী এ বিমল আকোইজাম ২০০১ সালে ইকোনমিক অ্যান্ড পলিটিক্যাল উইকলির জন্য লেখা একটি নিবন্ধে উল্লেখ করেন, “একটি ‘জাতি’ হিসাবে মণিপুরীদের পরিচয় খ্রিস্টীয় যুগের প্রথম শতাব্দী থেকে মেইতিস এবং এর রাজ্যের পটভূমিতে বিকশিত হয়েছিল।”
মণিপুরের রাজকীয় ইতিহাসের আধার বলা যায় ‘চেইথারোল কুম্বাবা’কে। সেখানে ৩৩ খ্রিস্টাব্দে কাংলেইপাকের মেইতি রাজ্যের উৎপত্তির সন্ধান মেলে।
মেইতেই সম্প্রদায় সাতটি বংশগোষ্ঠীতে বিভক্ত। এগুলো হলো- মাঙ্গাং, লুয়াং, খুমান, অ্যাঙ্গম, মৈরাং খা, ন্যাংবা ও সারাং লেইশাংথেম। মাঙ্গাং গোষ্ঠীর নিংথৌজা বংশের রাজারা ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত অবিচ্ছিন্নভাবে মৈতেই রাজ্য শাসন করেছিলেন। এই বংশের উত্পত্তি সাপের রাজা পাকহামা থেকে হয়েছে বলে মনে করা হয়। পাকহামা এখনও মণিপুরের প্রধান দেবতা হিসেবে পূজিত হন। পাকহামার প্রতীক হলো, একটি সাপ যার লেজ মুখে রয়েছে। এই প্রতীক ইম্ফাল জুড়ে ঘরবাড়ি, রাস্তা ও মন্দিরে দেখা যায়।
বর্তমান ইম্ফল নগরী নিয়ে গঠিত একটি ছোট রাজ্য থেকে শুরু করে, এই সাম্রাজ্যটি বিস্তৃত এলাকাজুড়ে প্রসারিত হয়েছিল। এর মধ্যে উপত্যকা ও পাহাড়জুড়ে অন্যান্য রাজ্য এবং মানুষ অন্তর্ভুক্ত ছিল। পঞ্চদশ শতাব্দীর মধ্যে, এই রাজ্যটি বর্তমান মণিপুরের অনেক দূরে অবস্থিত অঞ্চলগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ে।
সমাজবিজ্ঞানী আকোইজাম লেখেন, “রাজ্যটি আয়তনে বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ‘জনগোষ্ঠী’ হওয়ার সচেতনতা অর্জন করেছিল। এই ‘জনগোষ্ঠী’ গঠিত হয়েছিল শুধু একই শাসকের শাসন বা সার্বভৌমত্বের অধীনে থাকার কারণেই নয়। বরং অতীতে বার্মিজদের সঙ্গে এবং পরবর্তীতে ব্রিটিশদের সঙ্গে সংঘর্ষের মতো ঘটনার কারণেও। মণিপুরি পরিচয় এই ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের বিরুদ্ধে গড়ে উঠেছিল।”
তার মতে, বিংশ শতাব্দীর প্রথম দশকে ব্রিটিশদের সঙ্গে সংগ্রাম ও মহারাজার স্বৈরাচারী শাসনের মাধ্যমে তাদের পরিচয় আরও সুসংহত হয়েছিল। একটি প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার ও রাষ্ট্রের সংগ্রামে নিজেকে প্রকাশ করেছিল। হিজাম ইরাবোট, একজন কমিউনিস্ট পার্টির নেতা এবং একজন সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবী তখন জনগণকে সংগঠিত করার অন্যতম অগ্রদূত হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন।
১৯৪৬ সালে লংজাম বিমলের সঙ্গে মিলিত হয়ে হিজাম ইরাবোট প্রজা সংঘ নামে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন। তাদের লক্ষ্য ছিল একটি স্বাধীন মণিপুর প্রতিষ্ঠা করা, যেখানে নিজস্ব সংসদ, সংবিধান ও মন্ত্রিসভা থাকবে।
অধ্যাপক থোংখোলাল হাওকিপ তার নিবন্ধে “পলিটিক্যাল ইন্টেগ্রেশন অব নর্থইস্ট ইন্ডিয়া: এ হিস্টোরিক্যাল অ্যানালাইসিস” লিখেছেন, “তিনি রাজতন্ত্রের পরিবর্তে জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে রাজ্য পরিচালনা করতে চেয়েছিলেন সমাজতান্ত্রিক নীতির ভিত্তিতে।”
মণিপুর রাজ্য সংবিধান আইন ১৯৪৭ সালের ২৭ জুন প্রণীত হয়। ব্রিটিশ শাসনের অবসানের পরপরই এটি কার্যকর হয়েছিল। আইনের বিধান অনুসারে, ১৯৪৮ সালে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
হাওকিপ উল্লেখ করেন, “এটি ছিল ভারতে প্রথমবারের মতো সর্বজনীন ভোটাধিকারের ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচন। কংগ্রেস ছাড়াও অন্য দলের সমন্বয়ে একটি জোট সরকার গঠিত হয়েছিল।”
মহারাজাকে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান করা হয়েছিল। রাজ্য বিধানসভার নির্বাচিত ছয়জন সদস্য নিয়ে একটি রাজ্য মন্ত্রিসভাও গঠিত হয়েছিল। পাশাপাশি মহারাজার পরামর্শ অনুসারে একজন প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হয়েছিলেন।
এছাড়া রাজ্য বিধানসভা সর্বজনীন ভোটাধিকারের ভিত্তিতে এবং যৌথ নির্বাচক গোষ্ঠীর ভিত্তিতে নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টি রাখা হয়েছিল। আর বিধানসভার মেয়াদ তিন বছর ও এতে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর জন্য ৩৬ শতাংশ আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা ছিল।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এস কে ব্যানার্জি ১৯৫৮ সালে রচিত একটি নিবন্ধে উল্লেখ করেন, মণিপুর সংবিধানের বিধানগুলো “জনপ্রতিনিধিদের প্রকৃত শাসক বানিয়েছিল। সংখ্যালঘুদের স্বার্থও সুরক্ষিত ছিল। এই বিধানগুলোর গুরুত্ব ও প্রাসঙ্গিকতা তখনই স্পষ্ট হয়, যখন দেখা যায় যে ইংল্যান্ডে যা যুগ যুগ ধরে অর্জন করা হয়েছিল, তা মণিপুরে এক নিমিষেই অর্জিত হয়েছিল।”
হাওকিপ তার নিবন্ধে আরও উল্লেখ করেন, মণিপুর কংগ্রেস ছিল রাজ্য সংবিধানের বিরুদ্ধে। দলটি মণিপুরকে ভারতের সঙ্গে একত্রীকরণে আন্দোলন শুরু করেছিল।
ইরাবোট এবং মণিপুরের মহারাজা বোধচন্দ্র এই একত্রীকরণ আন্দোলনের বিরোধিতা করেছিলেন। তারা মণিপুর, কাছাড়, লুসাই পাহাড় এবং ত্রিপুরা নিয়ে গঠিত ‘পূর্বাঞ্চল’ নামে একটি নতুন রাজ্য তৈরিতে প্যাটেলের পরিকল্পনারও বিরোধিতা করেছিলেন।
ভারতের সঙ্গে একত্রীকরণ প্রশ্নে উত্তেজনা ১৯৪৯ সালের ২৩ মার্চ চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায়। প্রজা শান্তি পার্টি মনিপুরের জনগণের পক্ষ থেকে আসামের রাজ্যপাল ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে একটি স্মারকলিপি পাঠায়। এতে ভারতের সঙ্গে একত্রীকরণ প্রস্তাবের প্রতি আপত্তি জানানো হয়। পাশাপাশি স্মারকলিপিতে ভারত ও মনিপুরের মধ্যে সুন্দর সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য অনুরোধ করা হয়। প্রজা শান্তি পার্টি বিশ্বাস করত, উভয়পক্ষের স্বার্থ ও নিরাপত্তার জন্য এটিই সেরা উপায়।
দলটি তখন এও স্বীকার করেছিল যে, মনিপুর বিভিন্ন দিক থেকে উন্নয়নে পিছিয়ে পড়েছে। ফলে তারা ভারতের অন্য অঞ্চলের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারবে না।
ইম্ফলভিত্তিক লেখক ওয়াঙ্গাম সোমরজিত বলেন, “যদিও তারা স্বীকার করেছেন যে ভারত সরকারের উদ্দেশ্য শোষণ করা নয়। তবুও তারা সতর্ক করে দিয়েছিলেন যে, পরিস্থিতি অপ্রত্যাশিতভাবে সেদিকে মোড় নিতে পারে।
“এর মাত্র কয়েকদিন পর ১৯৪৯ সালের ২৯ মার্চ প্যাটেলকে একটি চিঠি পাঠান শ্রী প্রকাশ। সেখানে তিনি জানান, ‘মণিপুরে সাধারণ মানুষ একত্রীকরণের বিপক্ষে। এর একমাত্র সমর্থক হলো রাজ্য কংগ্রেস, যার সদস্যদের অধিকাংশই বঙ্গীয় বংশোদ্ভুত। তারা রাজ্যের মাত্র ৮ শতাংশ মানুষের মতামতের প্রতিনিধিত্ব করে’।”
শ্রী প্রকাশ ও রুস্তমজি যখন ব্যক্তিগতভাবে প্যাটেলের কাছে ওই বিষয়টি তুলে ধরেন, তখন তিনি শিলংয়ে কোনও ব্রিগেডিয়ার আছেন কি না তা জিজ্ঞেস করার বেশি কিছু বলেননি।
অধ্যাপক বারুয়া বলেন, “বার্তাটি খুব স্পষ্ট ছিল। তিনি (প্যাটেল) বলতে চেয়েছিলেন, বিষয়টি খুব বড় কিছু নয়। আমাদের কেবল ভারতীয় সেনাবাহিনীকে জড়িত করতে হবে।”
রুস্তমজি তার স্মৃতিকথায় লিখেছেন, প্যাটেলের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত আলাপ সেরে শিলংয়ে ফেরার কিছুদিন পর তার উপর ইম্ফলে গিয়ে মহারাজাকে কঠিন বার্তা পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব পড়ল।
তিনি লেখেন, “আমি এমন কাজ খুব কম করেছি। মণিপুরিরা সংবেদনশীল ও উত্তেজিত মানুষ। পরিস্থিতি সম্পর্কে ইতোমধ্যেই গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল।”
রুস্তমজি আরও লেখেন, “মহারাজা আবেগ সামলাতে না পেরে কখনও কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন, আবার কখনও গম্ভীর হয়ে ছিলেন।”
অবশেষে সিদ্ধান্ত হল, মহারাজা শিলংয়ে গিয়ে গভর্নরের সঙ্গে দেখা করবেন। সাক্ষাতের প্রথম দিনেই মহারাজাকে আগেই প্রস্তুত করা একটি ‘একত্রীকরণ চুক্তি’ উপস্থাপন করা হয়। মহারাজা তার মন্ত্রিসভার সঙ্গে পরামর্শ ছাড়া চুক্তি স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করেছিলেন। এরপর তাকে তৎক্ষণাৎ গৃহবন্দি করা হয় এবং বাইরের জগতের সঙ্গে যোগাযোগ নিষিদ্ধ করা হয়।
সোমরজিত বলেন, “একই সঙ্গে ইম্ফলে ভারতীয় বাহিনী প্রাসাদকে ঘেরাও করে, টেলিফোন ও টেলিগ্রাফ লাইনগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। মহারাজাকে তার জনগণ থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন করে দেয়।”
১৯৪৯ সালের ২১ সেপ্টেম্বর মহারাজা একত্রীকরণ চুক্তিতে সই করেন। রাজ্যের আইনসভা ও প্রশাসনের ওপর ভারতের সরকারকে পূর্ণ ও নির্বাহী ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়।
সোমরজিতের মতে, ভারত সরকারের প্রথম পদক্ষেপ ছিল মণিপুরকে একটি ‘পার্ট সি’ রাজ্য হিসাবে পুনরায় শ্রেণিবদ্ধ করা এবং এটিকে মুখ্য কমিশনারের শাসনের আওতাধীন করা। এটি ছিল ‘ভারতীয় প্রেক্ষাপটে সর্বনিম্ন অর্জনযোগ্য রাজনৈতিক মর্যাদা নির্দেশকারী একটি পদবী’।
বারুয়া বলেন, “মণিপুরিদের জন্য এটি ছিল অনেক বড় অপমান। এটি কেবল পার্ট সি মর্যাদা পায়নি, এটি উত্তরপূর্ব অঞ্চলগুলোর মধ্যে রাজ্যপদ পেতে শেষের দিকে ছিল।”
বারুয়া তার বই ‘ইন দ্য নেম অফ দ্য নেশন: ইন্ডিয়া অ্যান্ড ইটস নর্থইস্ট’ এ লিখেছেন, রাজ্যের আধুনিক ইতিহাসের প্রায় প্রতিটি মণিপুরির বর্ণনা অনুযায়ী, মণিপুরের স্বাধীনতা হারানো ভারতের সঙ্গে একত্রীকরণের ঘটনা দিয়ে শুরু হয়। এসব বর্ণনার মূল বিষয় হলো মণিপুরের একত্রীকরণটি ছলনার মাধ্যমে হয়েছিল। এই ঘটনাটি অঞ্চলের অধিকাংশ সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর বর্ণনার একটি কেন্দ্রীয় অংশ হয়ে আছে।
হাওকিপ বলেন, “মেইতেইরা দীর্ঘদিন ধরে একত্রীকরণের আগের অবস্থায় ফিরে যাওয়ার দাবি জানিয়ে আসছে। বিশেষ করে যখনই তারা সরকারের সঙ্গে কোনও ধরনের অসন্তোষ অনুভব করে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে মেইতেই ও কুকিরা উভয়েই যথাসম্ভব ভারতীয় হিসেবে নিজেদের দেখানোর চেষ্টা করছে। এটি মূলত কেন্দ্রীয় সরকারের অনুগ্রহ বা সহানুভূতি পাওয়ার জন্য।”
আপনার মতামত জানানঃ