নেপোলিয়ন বোনাপার্ট, নামেই যার পরিচয়। একজন দুধর্ষ যোদ্ধা ও ইতিহাসের কালজয়ী সম্রাট। মৃত্যু নিয়ে একদা তিনি বলেছিলেন,“একজন মহান মানুষকে হত্যা করা সম্ভব, কিন্তু তাকে ভয় দেখানো সম্ভব না।” এমন এক সাহসী ব্যক্তির মৃত্যু এখনো বহুল চর্চিত বিষয়। সেন্ট হেলেনা দ্বীপের নির্জন প্রসাদে বন্দি অবস্থায় নেপোলিয়ন বোনাপার্টের কি স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছিল? নাকি তাকে মেরে ফেলা হয়েছিল বিষ প্রয়োগ করে? তাকে যে খুন করেছিল তার নামই বা কি?
সময়টা ১৯৫০ সাল। সুইডেনের গোটবার্গ শহরে ডাক্তার স্টেন ফরশফুড-এর ল্যাবরেটরিতে তখনও টিমটিম করে আলো জ্বলছে। ডাক্তার স্টেন গত তিন দিন ধরে পড়ে চলেছেন মারশঁর লেখা নেপোলিয়নের জীবনী। এই দাঁতের ডাক্তারের মাথায় হঠাৎই ভূত চেপেছে।
রমরমা পসার ছেড়ে মারাত্মক সব বিষ নিয়ে তিনি চালাচ্ছেন নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা। সারাক্ষণই পড়ে রয়েছেন হয়তো মারশঁর লেখা নেপোলিয়নের জীবনী নিয়ে, নয়তোবা ল্যাবরেটরিতে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষায়। রোগীরা ডাক্তারের এহেন আচরণে হতাশ। আজকাল আর কোনো রোগীই আর আশা রাখেন না যে, স্টেন কোনোদিন ফের ডাক্তারিতে মন দেবেন।
কিন্তু স্টেন একজন আশাবাদী লোক। তিনি যে বিষয়টি নিয়ে কাজ করছেন তা বিফল যাবে না বলেই তার বিশ্বাস। কারণ কিন্তু আশাবাদী স্টেনের স্থির বিশ্বাস, তার এতদিনের গবেষণা মিথ্যে নয়। মারশঁর বইটা সবে হাতে পেয়েছেন। আর তখন থেকেই রুদ্ধশ্বাসে রাত-দিন এক করে বইটি পড়ে চলেছেন। বইয়ের যত ভিতরে ঢুকছেন, ততই তার বিশ্বাস জন্মেছে যে, তার ধারণাই সঠিক। কিন্তু বিজ্ঞান কোনো বিশ্বাস বা ধারণার উপর প্রতিষ্ঠিত নয়। তার চায় প্রমাণ। স্টেন তাই দৃঢ় প্রতিজ্ঞ, তার ধারণাকে প্রমাণে পরিণত করতেই হবে।
আর তাই স্টেন ছুটে গেলেন গ্লাসগো ইউনিভার্সিটির প্রফেসর স্যার হ্যামিলটন স্মিথের কাছে। স্টেনের এতদিনের পরিশ্রম বিফলে গেলো না। স্মিথের পরীক্ষার ফলাফল মিলে যেতে লাগলো মারশঁর বইয়ের বর্ণনার সঙ্গে। জয় হলো স্টেনের বিশ্বাসের- ফান্সের কিংবদন্তি সম্রাট নেপোলিয়নের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি। তাকে হত্যা করা হয়েছিল। প্রায় ছ’বছর ধরে একটু একটু করে তার শরীরে আর্সেনিক প্রবেশ করানো হয়েছিল। এভাবেই ১৮২১ সালের ৫ মে সেন্ট হেলেনা দ্বীপে মৃত্যু হয়েছিল ব্রিটিশ যুদ্ধবন্দি নেপোলিয়ন বোনাপার্টের।
১৮১৫ সালের ১৫ই জুলাই তিনি ব্রিটিশদের সাথে বিখ্যাত ওয়াটারলু’র যুদ্ধে পরাজিত হন। এর মধ্য দিয়েই পরিসমাপ্তি ঘটে নেপোলিয়নের সামরিক জীবনের, আর সেই সাথে তার সম্রাট জীবনের। আত্মসমর্পণের পর সেন্ট হেলেনা দ্বীপে নির্বাসিত হন তিনি। নেপোলিয়ন বুঝতে পারলেন তাকে হত্যা করার জন্য চলছে মারাত্মক ষড়যন্ত্র। কিন্তু কিছু করার নেই। ওয়াটারলু’র যুদ্ধে পরাজয়ের পর তিনি বুঝে গেলেন ব্রিটিশদের হাত থেকে তার আর মুক্তি নেই। এই নির্জন দ্বীপের বিশ্বস্ত কাজের লোক মারশঁ, সেনাধ্যক্ষ গ্র্যান্ড মার্শাল হেনরি বার্ট্রান্ড, প্রিন্সিপাল অ্যাডভাইজার কাউন্ট শার্ল দ্য মতলঁ আর তাদের পরিবারের মাঝখানে বসে মৃত্যুর দিন গুণতে হবে তাকে।
একা দাঁড়িয়ে থাকা লং উড প্রাসাদে অনেক রাত পর্যন্ত চলতো নাচ-গান। শুতে শুতে প্রায় মাঝরাত। তাই রাত তিনটে-সাড়ে তিনটেই ছিল সবচেয়ে নিরাপদ। নিশুতি রাতে মোমবাতির আলোয় একটা হাত হাতড়ে বেড়াতো পানীয়ের বোতল। তারপর নির্দিষ্ট একটা বোতলে ঝড়ের গতিতে ঢেলে দেয়া হতো আর্সেনিকের সাদা পাউডার। আর সেটাই পরদিন পৌঁছে যেতো নেপোলিয়নের খাস টেবিলে।
দশদিন পর পর এভাবেই নেপোলিয়ন নিজের অজান্তেই প্রিয় পানীয়ের সঙ্গে পান করতেন মারাত্মক বিষ। এভাবেই ১৮১৫ তেকে ১৮২১ সাল পর্যন্ত বিষে ভরে গিয়েছিল নেপোলিয়নের শরীর। বিষক্রিয়ার ফলে বুকে-পেটে শুরু হতে লাগে অসহ্য যন্ত্রণা। আর ভারপ্রাপ্ত ব্রিটিশ অফিসার হাডসন লো’-কে বারবার এই যন্ত্রণার কথা বলেও কোনো বিশেষ সুরাহা হলো না। আর এভাবে একসময় মৃত্যুর কোলেই ঢলে পড়েন নেপোলিয়ন।
মৃত্যুর পর তার স্মৃতি বেদিতে লেখা ছিল না কোনো নাম। ব্রিটিশরা তার গায়ে সামান্য যুদ্ধবন্দির তকমা লাগাতে চেয়েছিল। তাই একদম সাদামাটাভাবেই সেন্ট হেলেনার নির্জন প্রান্তরে নেপোলিয়নের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। ময়নাতদন্তে দেখা যায়, ডাক্তার গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সারে তার মৃত্যু হয়েছে বলে স্বীকৃতি দেয়। যদিও যকৃতের বিশাল আকার দেখে একজন ডাক্তার মৃত্যুর কারণ হিসেবে হেপাটাইটিসের কথা ভেবেছিলেন। কিন্তু হাডসন লো লোপাট করে দেন সেসব নথিপত্র।
তারপর পেরিয়ে যায় কয়েক বছর। তখন ফ্রান্সের শাসনকর্তা লুই ফিলিপ। দেশ জুড়ে থমথমে অবস্থা। যেন দ্বিতীয় ফরাসি বিপ্লবের প্রস্তুতি চলছে। এরকম সময় প্রয়োজন ছিলো একজন নেপোলিয়নের যিনি পারতেন মানুষের মন জয় করতে। মৃত্যুর পরও তাই দরকার হলো তার। সেন্ট হেলেনার মাটি খুঁড়ে ঘটা করে নেপোলিয়নের শব তুলে আনা হলো ফ্রান্সে। রাজকীয় মর্যাদায় তার সমাধিক্ষেত্র করা হবে। তাই আবার ১৯ বছর বাদে খোলা হলো শবের ঢাকনা।
কফিন খুলার পর সকলেই মৃতের শরীর দেখে অবাক হয়ে গেলেন। এ চেহারা কোনো বীরের চেহারাই নয়। অত্যন্ত ভারী, মোটাসোটা চেহারা। আরও অবাক হওয়ার মতো ঘটনা হলো, এতো বছরেও শরীরে কোনো পচন ধরেনি। নেপোলিয়নের মৃতদেহ দেখে সেদিন অনেকের মনেই একটা প্রশ্ন জেগেছিল- ১৯ বছর পরেও কী করে তার শরীর এরকম অক্ষত রইলো? আর তখনই শুরু হতে লাগলো গবেষণার পর গবেষণা। ভিয়েনার ডাক্তার স্টেন বা গ্লাসগোর অধ্যাপক হ্যামিলটনের মতো আরও অনেকেই গোপনে গবেষণা চালিয়েছিলেন।
মৃত্যুর পর প্রিয় মানুষের স্মৃতিচিহ্ন রেখে দেওয়া অনেকদিনের রীতি। নেপোলিয়নের মৃত্যুর পর তার কাছের মানুষরা স্মৃতি হিসেবে রেখে দিয়েছিলেন তার মাথার চুল। আর সেই চুল পরীক্ষা করেই স্টেনের সন্দেহ হয়েছিল নেপোলিয়নের মৃত্যু হয়েছে বিষ প্রয়োগে। এই বিশ্বাসকে আরো উসকে দেয় ১৯৫০ সালে প্রকাশিত নেপোলিয়নের ভৃত্য মারশঁর লেখা নেপোলিয়নের জীবনী।
মৃত নেপোলিনের ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিস এবং শরীরের বিভিন্ন উপাদান পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সকলেই নিশ্চিত হন যে, নেপোলিয়নের মৃত্যু হয়েছে বিষক্রিয়ায়। এবার তাই প্রশ্ন জাগে আততায়ী কে? কে সেই ব্যক্তি, যে বছরের পর বছর ঠান্ডা মাথায় নেপোলিয়নের শরীরে ছড়িয়ে দিয়েছিল আর্সেনিকের বিষ। কী ছিল তার উদ্দেশ্য?
প্রথম সন্দেহ যায় ব্রিটিশদের দিকে। কারণ নেপোলিয়ন যখন বন্দি ছিলেন, তখন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক আইরিশ ডাক্তার ও’ মেরা জানান যে, হাডসন লো তাকে একবার বলেছিল নেপোলিয়নের জীবনকে সংক্ষিপ্ত করার ব্যবস্থা নিতে। কিন্তু তিনি তখন তা প্রত্যাখ্যান করেন বলে জানান। আর এ কারণেই নাকি ব্রিটিশ জেলার তাকে চাকুরী হতে অব্যহতি দেয়। সেন্ট হেলেনার ব্রিটিশ আধিকারিক স্যার হাডসন লো-ই কি তবে নেপোলিয়নের খুনি? কিন্তু এ বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
এ কথা সত্য যে,ব্রিটিশরা কোনোদিনই চায়নি নেপোলিয়নের মৃত্যু হোক অস্বাভাবিকভাবে। তারা বারবার প্রমাণ করতে চেয়েছিল নেপোলিয়ন আর পাঁচ জনের মতোই সাধারণ। তা ছাড়া ইংরেজেরা ও ইউরোপীয়রা চায়নি নেপোলিয়নের খুনি হিসেবে পরিচিত হতে। তা ছাড়া নেপোলিয়নের কাছে পৌঁছাও ছিল কঠিন। সেসময় হাডসন লো জেলারের দায়িত্ব বহন করছিলেন। ১৯১৬ সালের পর স্বল্পবাক হাডসন কখনোই নেপোলিয়নের সাথে দেখা পর্যন্ত করেননি। যে ইংলিশ গ্যারিসন নেপোলিয়নের দেখাশোনার দায়িত্বে ছিল, তারাও খুব কমই তার সাক্ষাতে আসতো।
তবে খুনি কে? মারশঁর জীবনী পড়ে একটা বিষয় স্পষ্ট হয়ে যায় যে, খুনি ছিল সেন্ট হেলেনা দ্বীপেই। হাডসন লো-কে বাদ দিলে দ্বিতীয় যার দিকে আঙুল তোলা যায়, তিনি মারশঁ। মারশঁ জানতেন মৃত্যুর পর মনিবের সব সম্পত্তিরই মালিক হবেন তিনি। তবে দ্রুত সম্পত্তি পাওয়ার লোভ যদি মারশঁর থাকতোই, তবে নেপোলিয়নকে ধীরে ধীরে বিষ প্রয়োগ করা হতো না। তাই মারশঁকে সন্দেহের বাইরে রাখাই যায়।
নেপোলিয়নের প্রধান সেনা আধিকারিক হেনরি বার্ট্রান্ড আর তার স্ত্রীকেও সন্দেহের তালিকায় রাখা যায় না। কারণ তারা থাকতেন লংউড প্রাসাদ থেকে একটু দূরে। নেপোলিয়নকে রাখা হয়েছিল প্রাসাদের ভিতরেই। তাই নেপোলিয়নের হত্যাকারী এমন কেউ যার গতিবিধি নেপোলিয়নের বৈঠকখানা থেকে হেঁশেল পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।
এসব চিন্তা করে, সন্দেহের আঙুল ওঠে নেপোলিয়নের প্রধান প্রিন্সিপাল অ্যাডভাইজার কাউন্ট শার্ল দ্য মতলঁ-এর দিকেই। সেন্ট হেলেনায় আসার আগে থেকেই তার গায়ে পড়েছিল প্রতারকের ছাপ। ক্ষমতার লোভে কখনও তিনি বুঁরবো রাজবংশের সমর্থক ছিলেন, কখনও বা পাশে ছিলেন নেপোলিয়নের। আবার নেপোলিয়নের মতলঁ-এর স্ত্রীর প্রতি আসক্তি ছিল বলে সন্দেহ করতো মতলঁ।
নির্বাসনে নেপোলিয়নের সঙ্গে থাকলেও গোপনে যোগাযোগ ছিল নেপোলিয়নের শত্রু বুঁরবো রাজবংশের দশম চার্লসের সঙ্গে। সেন্ট হেলেনায় থাকার সময় তার ঘর থেকে পাওয়া যায় আর্সেনিকের ব্যবহার সংক্রান্ত অনেক বই। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো নেপোলিয়নের পানীয়ে একমাত্র অধিকার ছিল দ্য মতলঁ-এর। আর এই পানীয়েই মেশানো হতো আর্সেনিক।
এতো প্রমাণ যার বিরুদ্ধে, সেই মানুষটি কিন্তু খুব সাধারণভাবেই মারা গিয়েছিলেন। যার নির্দেশে এই খুন করা হয়েছিল বলে সকলের ধারণা, সেই দশম চার্লসকেই ফ্রান্সের মাটি ছেড়ে চলে যেতে হয়েছিল। লুই ফিলিপের রাজত্বকালে দশম চার্লসের সঙ্গে যোগাযোগ থাকার অপরাধে দ্য মতলঁকে প্রায় ২০ বছর কাটাতে হয়েছিল জেলের অন্ধকারে। শেষে লুই বোনাপোর্ট বা তৃতীয় নেপোলিয়নের শাসনকালে জেলেই ১৮৫৩ সালে মৃত্যু হয় দ্য মতলঁ-এর।
মূলত এসব কিছুই হয়েছিল আর্সেনিকে নেপোলিয়নের মৃত্যু হয়েছে এই তত্ত্বকে ঘিরে। কিন্তু এই তত্ত্বেও অনেক ত্রুটি আছে। পরীক্ষায় নেপোলিয়নের চুলের নমুনা আর তার স্ত্রী ও পুত্রের চুলের নমুনায় যে আর্সেনিক পাওয়া গেছে, তাতে আর্সেনিকের পরিমান অতো বেশি ছিল না। আর্সেনিকের বিষাক্ততার কোনো বৈশিষ্ট্যই তার শরীরে দেখা যায়নি। দীর্ঘস্থায়ী আর্সেনিক বিষক্রিয়া শরীরে কাজ করলে ওজন কমে যাওয়ার কথা।
এসব সন্দেহকে এককথায় উড়িয়ে দেন টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাশাস্ত্রের বিজ্ঞানী রবার্ট জেন্টা, যিনি ছিলেন ‘আর্সেনিকে নেপোলিয়নের মৃত্যু হয়েছে’- এই মতের ঘোর বিরোধী। নেপোলিয়েনের পূর্ব ইতিহাস থেকে জানা যায় তার পিতা ও বোন পাকস্থলী ক্যান্সারেই মৃত্যুবরণ করেন। জেন্টার মতে, সে সময়ের খাদ্যাভ্যাসের কারণে পাকস্থলীর এই রোগ অনেকেরই শরীরে দানা বাঁধতো। নেপোলিয়নের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম নয়। নেপোলিয়নের দানা দানা বস্তুতে ভরা পাকস্থলী যা পাকস্থলীতে রক্তক্ষরণের প্রমাণ দেয়।
বিজ্ঞানী রবার্ট জেন্টা নেপোলিয়ানের পাকস্থলীর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এক বড়সড় বস্তুর হদিস পেয়েছেন যা দৈর্ঘ্যে ১০ সেমির চেয়েও বেশী। এই প্রমাণ থেকে জেণ্টা ও তার সহযোগীরা সিদ্ধান্তে আসেন যে নেপোলিয়ানের পাকস্থলীর ক্ষত আসলে ছিল ক্যান্সার। তারা তাদের এই পর্যবেক্ষণ ‘নেচার ক্লিনিক্যাল প্রাক্টিস গ্যাস্ট্রোএনট্রলজি অ্যান্ড হেপাটোলজি’ নামের বিজ্ঞান গবেষণার পত্রিকায়ও প্রকাশ করেন।
বিজ্ঞানী জেন্টার মতে, ৬ বছর বন্দী থাকার সময়ে নেপোলিয়ানের স্বাস্থ্যের এতটাই অবনতি হয়েছিল যে তাঁর পক্ষে নতুন করে পালিয়ে গিয়ে ফরাসী সাম্রাজ্যের দখল নেওয়া সম্ভব ছিল না। কেননা ক্যান্সারের কারণ যা-ই হোক না কেন, পাকস্থলীর যে ধরণের ক্যান্সার নেপোলিয়ানের হয়েছিল, তা হলে বর্তমানকালেও কারো পক্ষে এক বছরের বেশী বাঁচা অসম্ভব।
‘নেপোলিয়নের খুনি’ বলে কোথাও উল্লেখ নেই দ্য মতলঁর। সবার বিম্মৃতির অতলে হারিয়ে গেছে এই নাম। নেপোলিয়ানের শেষ ক’বছরের জীবন ও তার রহস্যে ঘেরা মৃত্যু নিয়ে আলোচনা ও লেখালেখি হয়েছে বিস্তর। আধুনিক বিজ্ঞানের আলোকে ইতিহাসের এক মহানায়ক নেপোলিয়ানের মৃত্যু রহস্যের যবনিকা পতন হয়েছিল বলে মান্যতা দিলেও সত্যিই কি রহস্যের উন্মোচন হয়েছে। নাকি আরেক গবেষকদল আরেক নতুন তথ্য উপাত্ত নিয়ে হাজির হবে আমাদের সামনে? ভবিষ্যতেই হয়তো এর জবাব পাওয়া যাবে।
আপনার মতামত জানানঃ