সৌরজগতের প্রাণ বলা যায় সূর্যকে। এটিই সৌরজগতের সবচেয়ে বড় বস্তু। পৃথিবীর ব্যাসের তুলনায় ১০৯ গুণ বড়। সৌরজগতের মোট ভরের ৯৯.৮০ শতাংশই সূর্যের দখলে। সূর্যের বুকে এঁটে যাবে প্রায় ১৩ লাখ পৃথিবী। সৌরঅধিপতির অসীম শক্তির কারণে প্রাচীন মিসর থেকে শুরু করে মায়া সভ্যতা পর্যন্ত অসংখ্য মানুষ সূর্যের পূজাও করেছে।
আমরা জানি, সূর্যের অবস্থান সৌরজগতের কেন্দ্রে। স্বাভাবিক। গোটা সৌরজগতে এর জন্মই সবার আগে। একে ঘিরেই তৈরি হয়েছে বাকি সব গ্রহ, উপগ্রহ, গ্রহাণু ইত্যাদি।
পৃথিবীর শক্তির প্রধান উৎস সূর্য। বিজ্ঞানীরা বলছেন, আমাদের সৌরজগতের এই নক্ষত্রটিও একদিন মৃত্যু হবে। কিন্তু সেটি কবে?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সূর্যের মৃত্যু আরও কয়েক শ কোটি বছর পর হতে পারে।
মার্কিন মহাকাশ গবেষণা নাসা বলছে, বর্তমানে পৃথিবীর বছর সাড়ে ৪০০ কোটি বছরের বেশি। আর সূর্যের মতো গ্রহহুলো ৯০০ থেকে এক হাজার কোটি বছর পর্যন্ত স্থায়ী হয়। এই হিসাবে ধারণা করা হচ্ছে, সূর্যের আরও ৫০০ কোটি বছর পর মৃত্যু হবে। ওই সময় সূর্য একটি বিশাল লাল রঙের দানব নক্ষত্রে পরিণত হবে। সেটি হবে সূর্যের মৃত্যুর প্রাথমিক স্তর। এই স্তরে সূর্যের মধ্যভাগের অংশটি সংকুচিত হবে এবং বাইরের অংশটি অভিকর্ষবল হারিয়ে নানা দিকে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করবে। তরল সেই আগ্নেয় পদার্থের স্রোত পৌঁছাবে মঙ্গলগ্রহ পর্যন্ত। সেই হিসেবে সূর্যের মৃত্যুর প্রাথমিক স্তরেই বুধ, শুক্র, পৃথিবী ও মঙ্গলগ্রহ ধ্বংস হয়ে যাবে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, একটি নক্ষত্রের মৃত্যুর অর্থ হলো, সেটির জ্বালানির মজুত শেষ হয়ে গেছে। আর সূর্যের জ্বালানি হলো হাইড্রোজেন। যখন সূর্যের মৃত্যু হবে তখন এর হাইড্রোজেনের মজুতও শেষ হয়ে যাবে।
যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব ম্যানচেস্টার সূর্যের উদ্ভব ও পরিণতি সম্পর্কিত একটি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করেছিল ২০১৮ সালে। সেই গবেষক দলের অন্যতম সদস্য ও জ্যোতিপদার্থবিদ অ্যালবার্ট জিজলস্ট্রা এ সম্পর্কে বলেন, যখন একটি তারার মৃত্যু ঘটতে থাকে, সে সময় সেটি থেকে বিপুল গ্যাস ও বস্তুকণা নির্গত হয়ে মহাজগতে ছড়িয়ে পড়ে।
আপনার মতামত জানানঃ