মুরগির আকারের একটি নতুন প্রজাতির ডায়নোসরের জীবাশ্ম আবিষ্কার করেছেন গবেষকেরা। ইংল্যান্ডের আইল অব উইটে এই তৃণভোজী ডায়নোসরের জীবাশ্ম পাওয়া যায়।
ইনডিপেনডেন্ট জানায়, আবিষ্কৃত জীবাশ্ম ভেকটিড্রোমাস ইনসুলারিস নামক প্রজাতির ডায়নোসরের। মুরগির আকারের হাইপসিলোফোডন্ট পরিবারের এই ডায়নোসর ইংল্যান্ডের দক্ষিণ উপকূলে পাওয়া যেত বলে ধারণা করা হয়।
সাড়ে ১২ কোটি বছর আগে টাইরানোসরাস, স্পিনোসরাস এবং ইগুয়ানোডনের সময়ে দুই পা-বিশিষ্ট এই তৃণভোজীদের অস্তিত্ব ছিল। ইংল্যান্ডের পোর্টসমাউথ ও বাথ ইউনিভার্সিটির যৌথ গবেষণায় আবিষ্কারটি সম্পর্কে জানা যায়। পরে ক্রিটাসিয়াস রিসার্চে এই গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয়।
বাথ ইউনিভার্সিটির মিলনার সেন্টার ফর ইভোলিউশনের গবেষক নিকোলাস লংরিচ বলেন, ‘জীবাশ্মবিদেরা এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে আইল অব উইটে কাজ করছেন। নতুন নতুন আবিষ্কৃত জীবাশ্ম জীবাশ্মবিদ্যার ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আমাদের গবেষণা অব্যাহত থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভেকটিড্রোমাস হলো হাইপসিলোফোডন ফক্সি পরিবাবের ঘনিষ্ঠ সদস্য। এটি অনেকটা পাখির মতো। বিজ্ঞানী টমাস হেনরি হাক্সলিও প্রমাণ করেছিলেন যে পাখি ডায়নোসরের সাথে সম্পর্কিত।’
ক্রিটাসিয়াস রিসার্চে প্রকাশিত ওই গবেষণার সহ-লেখক পোর্টসমাউথ ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ডেভ মার্টিল বলেন, ‘আইল অব উইটে এত নতুন ডায়নোসরের জীবাশ্ম আবিষ্কৃত হওয়ার ঘটনা একেবারেই স্বাভাবিক নয়। এটি বিরল বলা যায়।’
এদিকে, এর আগে সাথীদের আকর্ষণ করার জন্য বা শত্রুদের ভয় দেখানোর জন্য ব্যবহার করা কিছু বৈশিষ্ট্যযুক্ত একটি নতুন মুরগির আকারের ডাইনোসরের সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এ ডাইনোসরের মধ্যে এমন কিছু নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য দেখা গেছে যা আগে কখনো দেখা যায়নি।
ইন্ডিপেন্ডেন্ট’র এর এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ডাইনোসরটির একটি ময়ূরের মতো পালক খুঁজে পাওয়া গেছে। জন্তুটির পিঠের নিচে হলুদ এবং বাদামি পশম ছিল এবং দীর্ঘ সূঁচ ছিল। তার কাঁধের বাইরে, রঙিন ব্রিজলস, কমলা রঙের একটি চিটচিটে এবং একটি দীর্ঘ লেজ দেখা গেছে।
ব্রাজিলে জীবাশ্ম খনন করা এবং জার্মানির একটি যাদুঘরে অনুষ্ঠিত একটি জীবাশ্ম পরীক্ষা করার সময় একটি আন্তর্জাতিক দল নতুন প্রজাতির এই ডাইনোসর খুঁজে পায়। এই প্রাণীটিকে বলা হয় উবিরাজরা জুবাতুস।
বলা যায় যে, আধুনিক দিনের ময়ূররা প্রায় ১১০ মিলিয়ন বছর পূর্বে ক্রেটিসিয়াস যুগে বসবাসকারী উবিরাজরা জুবাতুসের কাছ থেকে তাদের দেখানো অনুষ্ঠান শিখেছিল। এছাড়াও এটি ইউরোপীয় ডাইনোসর কমসোগনাথাসের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত যা জুরাসিকের অনেক আগে পৃথিবীতে ঘোরাফেরা করেছিল।
জানা গেছে, ১৯৯৫ সালে জার্মানির প্রাকৃতিক ইতিহাস কার্লসরুহে স্টেট মিউজিয়ামের পেলিয়নটোলজিস্ট এবারহার্ড ফ্রে ডাইনোসরের এই প্রজাতিটি আবিষ্কার করেছিলেন।
উত্তর-পূর্ব ব্রাজিলের চাপাদা দো আরারিপে থেকে এর জীবাশ্ম পাওয়া গেছে। বর্তমানে পোর্টসমাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরা পুরনো সরীসৃপের কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য শনাক্ত করেছেন। ক্রেটিসিয়াস রিসার্চ জার্নালে এ নতুন গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে যে, এই জাতীয় বিস্তৃত কাঠামোগত অন্য কোনো ডাইনোসরের উপস্থিতি ছিল কিনা তা জানা নেই।
আপনার মতামত জানানঃ