নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের পর এবার জেলার সেনবাগ ও চাটখিলে অন্তঃসত্ত্বাসহ দুই গৃহবধূকে ধর্ষণ ও বিবস্ত্র করে ভিডিওর অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতনের শিকার দুই নারী থানায় মামলা করেছেন।
সেনবাগে মামলার পর পুলিশের অভিযানে এ পর্যন্ত ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং চাটখিলের মামলায় অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে থানা পুলিশ। অভিযুক্ত বাকিদের ধরতে অভিযান চলছে।
সেনবাগে অন্তঃস্বত্ত্বা নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ
গত ৯ অক্টোবর উপজেলার ছাতারপাইয়া এলাকায় তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণের অভিযোগে গতকাল মঙ্গলবার রাতে সেনবাগ থানায় মামলা করেন নির্যাতনের শিকার ওই নারী।
সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল বাতেন মৃধা এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ওই নারী বাদী হয়ে আট জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত পরিচয় ৫-৬ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেছেন।
আজ বুধবার ভোরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত শুভ (১৮), রকি (১৭) ও হাছান (১৮) কে গ্রেপ্তার করেছে। তবে, মামলার মূল আসামি পারভেজকে (২৫) গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
মামলার নথি থেকে জানা যায, গত ৯ অক্টোবর স্বামীর মাইক্রোবাসের মালিকের ছোট ভাই পারভেজ ১০-১২ জন সঙ্গী নিয়ে ওই নারীর বাড়িতে যান। পারভেজ ধর্ষণের পর ভিডিও ধারণ করেন এবং হুমকি দেন তার সঙ্গীরা। এ ঘটনায় মীমাংসার কথা বলে থানায় অভিযোগ করতে বাধা দেন অভিযুক্তের পরিবারের লোকজন।
অভিযোগ আছে, স্থানীয় ছাতারপাইয়া ইউপি চেয়ারম্যানকে জানানো হলে তিনি এ ঘটনার বিচার করে দেবেন বলে আশ্বাস দেন। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, ‘মঙ্গলবার বিকেলে ওই নারী ও তার ভগ্নীপতি আমার কাছে বিষয়টি জানালে আমি তাদের আইনের আশ্রয় নিতে পরামর্শ দিয়েছিলাম।’
ওসি আবদুল বাতেন মৃধা বলেন, ‘পুলিশ মামলার প্রধান আসামিসহ বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে। তবে ওই ঘটনার পর থেকে নির্যাতনের শিকার ওই নারীর স্বামীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।’
মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা সেনবাগ থানার উপপুলিশ পরিদর্শক মো. তারেকুর রহমান বলেন, ‘এ ঘটনার মূল হোতা একজন। বাকিরা ঘটনার ভিডিও ধারণ করেন। তাদের তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
চাটখিলে গৃহবধূ ধর্ষণ ও বিবস্ত্র করে ভিডিওর অভিযোগে গ্রেপ্তার ১
চাটখিলে গৃহবধূকে ধর্ষণ ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার নোয়াখলা ইউনিয়নের স্থানীয় বাজার থেকে অভিযুক্ত মুজিবুল রহমান শরীফ (৩২) কে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান চাটখিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম।
পুলিশ জানায়, অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে আজ ভোরে প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণ ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করার অভিযোগে শরীফকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দুপুরে নির্যাতনের শিকার ওই নারী চাটখিল থানায় ধর্ষণ মামলা করেন। গ্রেপ্তারকৃত শরীফ উপজেলার নোয়াখলা ইউনিয়ন যুবলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি।
ওসি মো. আনোয়ারুল ইসলাম জানান, গ্রেপ্তারকৃত শরীফের বিরুদ্ধে চাটখিল থানায় অস্ত্র, ডাকাতির প্রস্তুতি, মারামারিসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ৮টি মামলা আছে। তাকে বৃহস্পতিবার সকালে আদালতে হাজির করা হবে।
আপনার মতামত জানানঃ