নরওয়েতে বছরের ছয় মাস দিন আর ছয় মাস রাত। অপূর্ব সুন্দর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দেশ নরওয়ে। এই দেশে একটি রাস্তা আছে যাকে বলা হয় পৃথিবীর শেষ রাস্তা। এই রাস্তা ধরেই স্থলপথে উত্তর মেরুর সব চেয়ে কাছে যাওয়া যায়। রাস্তাটিকে মুখে বলা হয়ে থাকে ‘দ্য লাস্ট রোড অফ দ্য ওয়ার্ল্ড’ তবে এর আসল নাম E 69 Highway।
এই রাস্তায় একা একা যাওয়া পুরোপুরি নিষেধ। E 69-র অভিনব ভৌগলিক অবস্থানের কারণে এখানে কাউকে একা যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয় না। এখানে একদিকে যেমন ভয়ানক গতিতে বাতাস বয় তেমনই এখানে ঠাণ্ডা। এই রাস্তা পর্যটকদের মনে এক ধরনের রোমান্সকর অনুভূতির জন্ম দেয়। এই রাস্তা ধরে যতোদূর এগিয়ে যাবেন মনে হবে, পৃথিবী বোধ হয় শেষ হয়ে গেছে। ইউরোপের নর্থ ক্যাফে গিয়ে এই রাস্তা শেষ হয়েছ।
রাস্তাটির দৈর্ঘ্য একশো ঊনচল্লিশ কলোমিটার। এই রাস্তায় পাঁচটি সুরঙ্গ পথ রয়েছে। সুড়ঙ্গগুলোর সম্মিলিত দৈর্ঘ্য ১৫.৪৫কিলোমিটার।
আন্তর্জাতিক দিক থেকে E 69 পথটি পৃথিবীর সবচেয়ে উত্তরের রাস্তা। এই মহাসড়কটি আন্তর্জাতিক ইরোর নেটওয়ার্কের অন্তর্ভুক্ত। জাতিসংঘের অর্থনৈতিক কমিশন এই মহাসড়কট ব্যবস্থা বিন্যাস্ত করেছে।
১৯৩০এর দশকে এই রাস্তার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তখন নর্থ ক্যাফের সঙ্গে সড়ক সংযোগ চালু হয় ১৯৫৬সালে। ১৯৯৩সালে এই রাস্তাটি আরো আধুনিক রূপ পায়। নরওয়েতে এই রাস্তা রোড নাইনটি ফাইভ নামে পরিচিত ছিল।
এখানে একদিকে যেমন দ্রুততম গতিতে বাতাস বয়, যা ভয়ংকর মনে হতে পারে। তেমনই এখানে ঠাণ্ডা। এখানকার আবহাওয়া একেবারেই অনিশ্চিত। গ্রীষ্মকালেও এখানে বরফ পড়ে। আবার সমুদ্র উপকূল সংলগ্ন হওয়ায় যে কোনো মুহূর্তে আবহাওয়া পরিবর্তন হয়ে যায়। আর শীতকালে এ রাস্তা একেবারেই বন্ধ থাকে।
অতিরিক্ত তুষারপাত বা বৃষ্টি হলে এখানে গাড়ি চালানো ভয়ানক বিপজ্জনক। ঝড় এখানে বলে কয়ে আসে না। আর এই অপ্রত্যাশিত আবহাওয়ার কারণেই এখানে কাউকে একা যেতে দেওয়া হয় না।
এখানে ছবির মতো ল্যান্ডস্কেপ। নরওয়েতে শীতকালে তাপমাত্রা মাইনাস ২৬ থেকে মাইনাস ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ঘোরাফেরা করে। সূর্য যখন অস্ত যায় সেই সৌন্দর্য এবং মেরুজ্যোতির সৌন্দর্যে মুগ্ধ হন এখানে আসা মানুষেরা। এখান থেকে আকাশকে মনে হবে গাঢ় নীল আকাশে সবুজ এবং গোলাপি আলোর খেলা! পৃথিবীর শেষে চলে এসেছেন তবুও মন রঙিন হতে পারে এই রাস্তা ও তার চারপাশের সৌন্দর্যের কারণে।
এসডব্লিউ/এসএস/১৯৫৫
আপনার মতামত জানানঃ