মাত্র আট বছর বয়সেই একের পর এক খুন করে ভয় ধরিয়ে দিয়েছে ভারতের এক খুদে সিরিয়াল কিলার। তার তীক্ষ্ণ চোখের চাহনি শিহরণ জাগাবে। দেশটির সবচেয়ে ছোট সিরিয়াল কিলার অমরজিৎ সদার কাহিনি যে কোনো বড় অপরাধকেও হার মানাবে।
অমরজিৎকে ‘কনিষ্ঠ’ সিরিয়াল কিলার আখ্যা দেওয়া যেতেই পারে। ১৯৯৮ সালে বিহারের বেগুসরাইয়ে জন্ম তার। পরে তার পরিবার মুশাহারিতে চলে যায়। মাত্র আট বছর বয়সে খুনের অভিযোগ উঠেছিল অমরজিতের বিরুদ্ধে।
২০০৬ ও ২০০৭ সালের মধ্যে তিন শিশুকে নৃশংস ভাবে হত্যা করেছিল অমরজিৎ। তার যখন ১০ বছর বয়স, সে সময় নিজের আট মাসের বোনকেই খুন করেছিল সে। ছয় মাসের এক তুতো বোনকেও হত্যা করেছিল দেশের এই কনিষ্ঠ সিরিয়াল কিলার।
অমরজিতের আতঙ্কে কাঁটা হয়ে থাকত বেগুসরাইয়ের মুশাহারি গ্রাম। পুলিশের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছিল এই খুদে। দেখা গিয়েছে, এক বছরের কম বয়সি শিশুদেরকেই নিশানা করত সে।
জানা যায়, খুনের ঘটনায় প্রথমে কোনো ভাবেই সন্দেহের তালিকায় ছিল না অমরজিৎ। এমনকি, আট বছরের একটা শিশু যে খুন করতে পারে, তা প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারেননি পুলিশকর্মীরা। তবে পরে গ্রামবাসীরা অমরজিতের এই ভয়াল কীর্তির কথা পুলিশকে জানায়।
অমরজিৎকে পাকড়াও করে জেরা করা হয়। সে সময় খুনের কথা স্বীকার করে নিয়েছিল। যা শুনে হতবাক হয়ে গিয়েছিল পুলিশমহল।
অমরজিতের হাতে শেষ খুন হয়েছিল ছয় মাসের শিশু খুশবু। মাটিতে তাকে পুঁতে দেওয়া হয়েছিল। খুশবুর মা জানিয়েছিলেন, ঘুমাচ্ছিল তার মেয়ে। কাজের জন্য বাইরে বের হন তিনি। ফিরে এসে দেখেন খুশবু নেই। খুশবুর সন্ধান জানায় অমরজিৎ।
গ্রামবাসীদের বলে যে, তাকে শ্বাসরোধ করে মেরে সে পুঁতে দিয়েছে। এরপর গ্রামবাসীরা পুলিশকে খবর দেয়। অমরজিৎকে পাকড়াও করা হয়। অমরজিৎকে আদালতে তোলা হয়েছিল। তবে তার বয়স ১৮ বছরের কম হওয়ায়, হোমে পাঠানো হয়।
জেরার সময় পুলিশ যখন জিজ্ঞাসা করে যে, সে কেন এমন অপরাধ করল, জবাবে অমরজিৎ হেসে বলেছিল, সে ক্ষুধার্ত, তাই কিছু খাওয়ার প্রয়োজন। এরপর তাকে বিস্কুট দেন পুলিশকর্মীরা।
বিস্কুটে কামড় দিয়ে অমরজিৎ জানিয়েছিল, বাচ্চাদের প্রথমে ফাঁকা জায়গায় নিয়ে গিয়ে ইট দিয়ে মুখে মারে সে। যত ক্ষণ না মৃত্যু হচ্ছে, তত ক্ষণ ইট দিয়ে মারতে থাকে সে। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর পাতা, মাটি দিয়ে দেহ ঢেকে দেয়।
২০১৬ সালে ১৮ তম জন্মদিনে অমরজিৎকে মুক্তি দেওয়া হয়। বর্তমানে তার বয়স ২২। তবে ছাড়া পাওয়ার পর সে কোথায় আছে, তা নিয়ে রহস্য রয়েছে।
এসডব্লিউ/এসএস/১৯২৫
আপনার মতামত জানানঃ