নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে চট্টগ্রাম জেলার বাশঁখালীর কালিপুর ইউনিয়নে। ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে নৌকায় ভোট দেবার কারনে বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকরা একটি হিন্দু বাড়িতে সশস্ত্র হামলা করে। এসময় বাড়ি ঘর ভাংচুর করেছে বলে জানা যায়। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির মালিক নারায়ণ নাথ।
১৭ জুন (শুক্রবার) সকাল দশটায় বাঁশখালী উপজেলার কালিপুর জঙ্গল গুনাগরী ১নং ওয়ার্ডের সংখ্যালঘু এই পরিবার হামলার শিকার হন। হামলার নেতৃত্বদানকারী হিসেবে ইসলামুল হক মাসুদের নাম বলেছেন ভুক্তভোগী পরিবার। আবু তালেব, আবু ছালেক, ওয়াহেদ, গিয়াসসহ আরো কয়েকজনের নাম বলেছেন ভুক্তভোগী ।
ইসলামুল হক মাসুদ দেশের বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান ‘এস আলম’ গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল ইসলাম মাসুদের ভাগিনা বলে পরিচিত। সুত্রমতে, শিল্পপতি সাইফুল আলম মাসুদের নিকট আত্নীয় স্টান্ডার্ড ব্যাংকের পরিচালক রাজুর ভাগিনা এই ‘ইসলামুক হক মাসুদ’ ।
বাঁশখালীর রাজনীতিতে শিল্পপতি রাজু’র বিস্তর প্রভাব রয়েছে বলে জানা যায়। জানা গেছে, এস আলম গ্রুপের মালিকের নিকট আত্নীয় হবার কারনে তার নির্দেশনার বাইরে গেলে কারো রেহাই নেই। ইসলামুক হক মাসুদ’ ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে আবু তালেব,আবু ছালেক,ওয়াহেদ, গিয়াস উদ্দিন সহ বেশ কিছু লোকজন দিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বী ‘নারায়ণ’ এর বাড়ির টিন খুলে নিয়ে যান। ঘরের ফার্নিচারসহ বিভিন্ন সামগ্রী ছুঁড়ে ফেলে দেন৷
ঘটনাস্থলে গিয়ে সন্ত্রাসীরা নারায়ণকে শাঁসাতে থাকে। এমন ভিডিও ফুটেজ প্রতিবেদকের হাতে এসেছে যেখানে আঞ্চলিক ভাষায় বলতে শোনা যায় ‘ বহুত সহ্য গরজি, আর ন গইরজুম। তোর এততো বড় সাহস ‘।
ঘরের টিনগুলো নেবার ভিডিও ফুটেজও হাতে এসেছে প্রতিবেদকের। ভিডিওতে দেখা যায় বৃস্টির মধ্যেই ঘরের টিন খুলে নিচ্ছে সন্ত্রাসীরা।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী সংখ্যালঘু পরিবারটি পুনরায় হামলার আশংকায় এলাকা ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে নৌকার প্রার্থী আ ন ম শাহাদাত হোসেন বিজয়ী হয়েছেন।
নির্বাচনের দিন কালিপুর ইউপির স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. খালেকুজ্জামান তার সব এজেন্টকে ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন গণমাধ্যমের কাছে।
নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী বিজয়ী হওয়ার কারনে সংখ্যালঘুদের হামলা করা হয়েছে দাবি করেছেন স্থানীয়রা। তবে, আরেকটি সুত্র বলছে জায়গা সংক্রান্ত বিরোধে হামলা করতে গিয়ে নির্বাচনী ইস্যু কাজে লাগানো হয়েছে।
এই বিষয়ে বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন বলেন, ‘ এমন কোন অভিযোগ কেউ করে নি। অভিযোগ আসলে ব্যবস্থা নেবো। তবে জমি সংক্রান্ত একটি মামলার কথা শুনেছি। যেই ঘরটি ভাংচুর করা হয়েছে সেটির বিষয়ে। ‘
এদিকে, নৌকায় ভোট দেবার কারনে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার প্রতিবাদে শুক্রবার সন্ধ্যায় মানববন্ধন করেছে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন। উপজেলা সদরে এই মানববন্ধন করে তারা জড়িতদের শাস্তি দাবি করেছেন।
আপনার মতামত জানানঃ