ইয়েমেনে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের বিমান হামলায় হুতি বিদ্রোহীদের অন্তত ৯২ সদস্য নিহত হয়েছে। শনিবার (২৩ অক্টোবর) সৌদি আরবের প্রভাবশালী পত্রিকা আরব নিউজ এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার (২২ অক্টোবর) ইয়েমেনের কৌশলগত শহর মারিবের কাছে দুই জেলায় ১৬টি সামরিক যান লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। এতে বিপুল ক্ষয়ক্ষতি ও হামলায় ৯২ জনের বেশি বিদ্রোহী নিহত হয়েছে বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে সৌদি জোট। তবে ইরান-সমর্থিত হুতিরা ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে ও নিহতের সংখ্যা নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
গত দুই সপ্তাহ ধরে মারিবের আশপাশের এলাকায় হামলার খবর জানানো হচ্ছে জোটের পক্ষ থেকে। সর্বশেষ হামলা চালানো দুই জেলা হলো, আল-জুবাহ ও আল-কাস্সারাহ। এর মধ্যে আল-জুবাহ মারিব থেকে ৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে ও আল-কাস্সারাহ ৩০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
গত সপ্তাহে ইয়েমেনে সৌদি নেতৃত্বধীন আরব জোটের হামলায় ১৬০ জন হুথি বিদ্রোহী নিহত হন। ইয়েমেনের কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ মারিব প্রদেশে এই প্রাণহারির ঘটনা ঘটে বলে গত সপ্তাহে বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়।
২০১৪ সালে হুতিরা মারিব থেকে ১২০ কিলোমিটার পশ্চিমে রাজধানী সানা দখল করলে ইয়েমেনে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। সংঘাত শুরুর পর যুদ্ধ থেকে পালিয়ে আসা হাজারও বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল মারিব।
শহরটি দখলে ফেব্রুয়ারি থেকে জোরেশোরে অভিযান শুরু করে হুতিরা। মাঝে হামলা কিছুটা কমলেও সেপ্টেম্বর থেকে আবার নতুনভাবে আক্রমণ শুরু করেছে তারা। মারিবে সংঘাত থেকে বাঁচতে পালিয়ে যাওয়া ইয়েমেনের অসংখ্য নাগরিক সাহায্যের জন্য অপেক্ষা করছেন।
ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধে এরইমধ্যে কয়েক হাজার মানুষ মারা গেছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে লক্ষ লক্ষ মানুষ। জাতিসংঘ বলছে, মারিবে সংঘটিত সংঘাতের কারণে গত মাসে ১০ হাজারের মতো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
জাতিসংঘ একে বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক সংকট বলে অভিহিত করেছে। এছাড়া জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ বুধবার ইয়েমেনে ‘বড় ধরনের দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি’ মোকাবিলায় সর্বসম্মতিক্রমে দেশটিতে ‘ডি-এস্কেলেশন’ করার আহ্বান জানিয়েছে।
এদিকে, যুদ্ধের কারণে ইয়েমেনে অর্থনৈতিক অবস্থা ভেঙে পড়ার পাশাপাশি মানবিক বিপর্যয় চরমে পৌঁছেছে। ২ কোটি ইয়েমেনিদের মধ্যে প্রায় দুই তৃতীয়াংশ মানুষের মানবিক সহায়তা প্রয়োজন। কিন্তু যেসব সাহায্যকারী সংস্থা তাদের সহযোগিতা করছে তারা বলছে, চলমান পরিস্থিতিতে তাদের সহযোগিতায় আরও অর্থ প্রয়োজন। বর্তমানে তাদের হাতে যে অর্থ আছে তা ফুরিয়ে এসেছে।
সূত্র মতে, বর্তমানে ইয়েমেনে ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষকে মানবিক সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। কয়েক মাস আগে নতুন করে আরও ৩০ লাখ মানুষ মানবিক সহযোগিতা পাওয়ার জন্য যুক্ত হয়েছে। যদি সাহায্য সংস্থাগুলো মানবিক সহায়তা কার্যক্রম চালিয়ে না যেত তাহলে ইয়েমেনে অনেক আগেই ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দিত।
এসডব্লিউ/এসএস/১৫০২
আপনার মতামত জানানঃ