জলবায়ুর পরিবর্তন ও পরিবেশদূষণ রোধে কার্বন নিঃসরণ কমানো নিয়ে বিশ্বজুড়ে আলোচনা চলছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াল প্রভাব ঠেকাতে কার্বন নিঃসরণ কমানোর প্রতিশ্রুতির মধ্যেই বিশ্বের ধনী দেশগুলো থেকে দ্রুতগতিতে বাড়ছে কার্বন নিঃসরণ। কার্বন নিঃসরণ ও জলবায়ু পরিবর্তনে দায়ী করা হয়ে থাকে বিশ্বের ধনী দেশগুলোকে। এবার শোনা গেল, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সম্প্রতি জাতিসংঘ যে আলোচিত বৈজ্ঞানিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, তা বদলাতে জোর লবিং চালিয়েছিল বেশ কয়েকটি দেশ।
এদের মধ্যে যেমন রয়েছে সৌদি আরব, জাপান, অস্ট্রেলিয়ার মতো ধনী দেশ, তেমনি রয়েছে ভারতের জ্বালানি গবেষণা সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় সংস্থার নামও। এরা সবাই নিজ নিজ স্বার্থরক্ষায় জাতিসংঘের জলবায়ু প্রতিবেদনটি বদলানোর সুপারিশ করেছিল। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত বিপুল নথিপত্র হাতে পেয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। তারাই এ তথ্য ফাঁস করেছে।
ফাঁস হওয়া নথিতে দেখা যাচ্ছে দেশগুলো জাতিসংঘের সুপারিশ বদলানোর চেষ্টা করছে যখন মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে তাদের জলবায়ু পরিবর্তনের গতি কমাতে এবং উষ্ণতা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রির নিচে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি দিতে হবে।
প্রায় ৩২ হাজার নথি বিবিসির হাতে এসেছে। সরকার, কোম্পানি এবং অন্যান্য আগ্রহী অংশীদাররা এসব নথি জাতিসংঘের একটি বৈজ্ঞানিক প্যানেলের কাছে উপস্থাপন করেছে। ওই প্যানেলটি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার সবচেয়ে ভালো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ জড়ো করে থাকে।
নথিতে দেখা যায়, জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার দ্রুত বন্ধের প্রস্তাব বাদ দিতে জাতিসংঘের কাছে সুপারিশ করেছিল সৌদি আরব, জাপান, অস্ট্রেলিয়াসহ বেশ কিছু দেশ। এছাড়া, সবুজ প্রযুক্তি ব্যবহারে তুলনামূলক দরিদ্রদের অর্থ সাহায্য দেওয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে কয়েকটি ধনী রাষ্ট্র।
আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে কপ২৬ জলবায়ু সম্মেলন। এবারের সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে জাতিসংঘের আন্তঃসরকার প্যানেলের (আইপিসিসি) প্রতিবেদনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হয়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর ভিত্তিতেই জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিভিন্ন পদক্ষেপের ঘোষণা আসার কথা ওই সম্মেলনে। তার আগেই প্রতিবেদন বদলাতে ধনী দেশগুলোর লবিংয়ের তথ্য ফাঁসের পর সম্মেলনের সফলতা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।
বিবিসি জানিয়েছে, জাতিসংঘের কাছে বিভিন্ন দেশের সরকার, প্রতিষ্ঠান, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বা বিজ্ঞানীদের পাঠানো ৩২ হাজারের বেশি প্রস্তাবনার নথি তাদের হাতে পৌঁছেছে।
ফাঁস হওয়া তথ্যে দেখা যায়, খসড়া প্রতিবেদনে যত দ্রুত বিশ্বজুড়ে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার কমানোর সুপারিশ করা হয়েছে, তত দ্রুত এটি করার দরকার নেই বলে আপত্তি জানিয়েছে বেশ কিছু দেশ ও সংস্থা।
সৌদি তেল মন্ত্রণালয়ের এক উপদেষ্টা দাবি করেছেন, ‘তাৎক্ষণিক এবং ত্বরিৎ প্রশমন কার্যক্রম প্রয়োজন’-এর মতো বাক্যাংশগুলো প্রতিবেদন থেকে বাদ দেওয়া উচিত।
কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করা আবশ্যক— প্রতিবেদনের এমন মন্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছেন অস্ট্রেলীয় সরকারের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। অথচ কয়লার ব্যবহার বন্ধ করা কপ২৬ সম্মেলনের বর্ণিত প্রধান উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে অন্যতম।
বর্তমানে সৌদি আরব বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী এবং অস্ট্রেলিয়া অন্যতম প্রধান কয়লা রপ্তানিকারক দেশ।
ভারত সরকারের সঙ্গে সম্পর্কিত সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউট অব মাইনিং অ্যান্ড ফুয়েল রিসার্চের এক জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী সতর্ক করে বলেছেন, কয়লা আরও কয়েক দশক জ্বালানি উৎপাদনের প্রধান উপাদান হিসেবে থাকতে পারে। কারণ হিসেবে তিনি সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ সরবরাহের ‘মারাত্মক চ্যালেঞ্জ’-এর কথা উল্লেখ করেছেন। ভারত বর্তমানে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম কয়লা ব্যবহারকারী দেশ।
বেশ কয়েকটি দেশ মাটির নিচে কার্বন ডাই অক্সাইড ধারণ এবং স্থায়ীভাবে সংরক্ষণে অত্যন্ত ব্যয়বহুল প্রযুক্তির পক্ষে যুক্তি দেখিয়েছে। সৌদি আরব, চীন, অস্ট্রেলিয়া, জাপানের মতো বৃহত্তম জীবাশ্ম জ্বালানি উৎপাদনকারী বা ব্যবহারকারী দেশগুলোর পাশাপাশি তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর জোট ওপেক কার্বন ধারণ ও সংরক্ষণের (সিসিএস) পক্ষে মত দিয়েছে।
তাদের দাবি, এই সিসিএস প্রযুক্তি বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ কিছু শিল্প খাত থেকে জীবাশ্ম জ্বালানি সম্পর্কিত গ্যাস নির্গমন নাটকীয়ভাবে কমিয়ে দিতে সক্ষম।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল রপ্তানিকারক দেশ সৌদি আরব জাতিসংঘের বিজ্ঞানীদের এই মতামত মুছে ফেলতে অনুরোধ করেছে যে, জ্বালানি ব্যবস্থাপনা খাতে ডিকার্বনাইজেশন প্রচেষ্টার মূলদৃষ্টি দ্রুত শূন্য-কার্বন উৎসে স্থানান্তরিত হওয়া এবং জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার দ্রুত বন্ধ করা প্রয়োজন।
এদের মধ্যে যেমন রয়েছে সৌদি আরব, জাপান, অস্ট্রেলিয়ার মতো ধনী দেশ, তেমনি রয়েছে ভারতের জ্বালানি গবেষণা সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় সংস্থার নামও। এরা সবাই নিজ নিজ স্বার্থরক্ষায় জাতিসংঘের জলবায়ু প্রতিবেদনটি বদলানোর সুপারিশ করেছিল।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে সমস্যা দেখেছে আর্জেন্টিনা, নরওয়ের মতো দেশগুলোও। নরওয়ের মতে, জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে নির্গমন কমানোর সম্ভাব্য হাতিয়ার হিসেবে সিসিএস ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া উচিত।
জাতিসংঘের খসড়া প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছিল যে, সিসিএস হয়তো ভবিষ্যতে ভূমিকা রাখতে পারে। কিন্তু এর সম্ভাবনা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। এতে বলা হয়েছে, প্যারিস চুক্তিতে নির্ধারিত ২ ডিগ্রি ও ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা কমানোর লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সিসিএস প্রযুক্তি সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে কিনা, তা নিয়ে বিশাল অস্পষ্টতা রয়েছে।
খসড়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমাতে মাংস ভক্ষণ কমানো প্রয়োজন— এর পক্ষে জোরালো প্রমাণ মিলেছে। তবে এর বিরোধিতা করেছে বিশ্বের বৃহত্তম দুই মাংস উৎপাদক দেশ ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা।
খসড়ায় বলা হয়েছে, বর্তমান পশ্চিমা খাদ্যাভ্যাসের তুলনায় উদ্ভিদ-ভিত্তিক খাদ্যগ্রহণ গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন ৫০ শতাংশ কমিয়ে দিতে পারে। ব্রাজিলের দাবি, এই তথ্য ভুল।
উভয় দেশই জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ‘উদ্ভিদ-ভিত্তিক খাদ্যাভ্যাস’ ভূমিকা রাখে অথবা গরুর মাংসকে ‘উচ্চ কার্বনযুক্ত’ খাবার হিসেবে করা বর্ণনার কিছু লেখা মুছে ফেলা বা পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছে।
করোনার কারণে গত বছর জলবায়ু কিছুটা স্বস্তিতে ছিল। কার্বনসহ অন্যান্য গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমে যাওয়ায় পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়ার শঙ্কা ছিল না বললেই চলে। রাস্তায় গাড়ি কম, কারখানায় নেই উৎপাদন আর মানুষের ভোগ্যপণ্যের জোগানও তেমন বেশি দেখা যায়নি।
কিন্তু চলতি বছর সেই চিত্রটা পাল্টে গেছে। অর্থনৈতিক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে উঠেপড়ে লেগেছে বিশ্বের ধনী দেশগুলো। রাস্তায় বেড়েছে গাড়ি আর মানুষ, কারখানায় উৎপাদন এখন আগের চেয়ে কয়েকগুণ। এরই প্রভাব পড়তে শুরু করেছে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণেও।
‘দ্য ক্লাইমেট ট্রান্সপারেন্সি রিপোর্ট’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বিশ্বের ২০টি ধনী দেশে কার্বন নিঃসরণের হার বেড়েই চলেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ধনী ও উন্নত দেশগুলোর জোট জি-২০-এর সদস্য দেশগুলোতে এ বছর কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাসের নির্গমন ৪ শতাংশ বাড়বে। গত বছর করোনা মহামারির কারণে এসব দেশে কার্বন নিঃসরণের হার ৬ শতাংশ কমেছিল। এ বছর চীন, ভারত এবং আর্জেন্টিনাও তাদের ২০১৯ সালের কার্বন নির্গমন মাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার পথে।
১৬টি গবেষণা সংস্থা ও পরিবেশগত গোষ্ঠীর তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। প্রতিবেদনে জি-টোয়েন্টি দেশগুলোতে কয়লার ব্যবহার এ বছর পাঁচ শতাংশ পর্যন্ত বাড়বে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে ৬০ শতাংশ বৃদ্ধির জন্য দায়ী থাকবে চীন। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতেও কয়লার ব্যবহার বাড়ছে। বৈশ্বিক অর্থনীতিতে জোরেশোরে এগোতে থাকায় চীনে জ্বালানি চাহিদা বেড়েছে। তাই সেখানে কয়লার ব্যবহারও বাড়তে দেখা গেছে। সঙ্গে বেড়েছে দামও। গত বছরের তুলনায় কয়লার দাম ২০০ শতাংশ বেড়েছে।
ক্লাইমেট ট্রান্সপারেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত জি-টোয়েন্টি দেশগুলোতে গ্যাসের ব্যবহার ১২ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।
রাজনৈতিক নেতারা কোভিডের ধাক্কা থেকে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সবুজের দিকে বেশি মনোযোগ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু ধনী দেশগুলো বাস্তবে সে পথে হাঁটেনি। অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে যে ১৮০ কোটি ডলার খরচের কথা বলা হয়েছে তার মধ্যে মাত্র ৩০ কোটি ডলার সবুজ প্রকল্পের জন্য রাখা হয়েছে।
প্রতিবেদনে ধনী দেশগুলোতে সৌর এবং বায়ুশক্তির ব্যবহার বৃদ্ধির বিষয়টিও উঠে এসেছে। গত বছর জি-টোয়েন্টি দেশগুলোতে রেকর্ড পরিমাণ সৌর প্যানেল স্থাপন করা হয়েছে। ২০২০ সালে যেখানে পুনর্ব্যবহারযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার ছিল ১০ শতাংশ, তা এ বছর ১২ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে।
স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে অনুষ্ঠেয় জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলন কপ-২৬ এর দুই সপ্তাহ বাকি। সম্মেলনের অন্যতম লক্ষ্য হলো, তাপমাত্রা বৃদ্ধির বিষয়টিকে নাগালের মধ্যে রাখার পদক্ষেপ নেওয়া।
প্রাক-শিল্পযুগের তুলনায় বর্তমানে বিশ্ব এক দশমিক এক ডিগ্রি বেশি উষ্ণ। ক্রমবর্ধমান উষ্ণতা বৃদ্ধিকে সীমাবদ্ধ রাখাটা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। নতুন গবেষণা প্রতিবেদনে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ধনী দেশগুলোর দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার তথ্য উঠে আসেনি।
বিজ্ঞানীরা মনে করেন, শিল্প বিপ্লব শুরুর আগে বিশ্বের যে তাপমাত্রা ছিল তার থেকে বৃদ্ধির মাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখা গেলে বড় ধরনের বিপদ এড়ানো যাবে। তা না পারলে বিপজ্জনক হয়ে পড়বে প্রকৃতি, পরিবেশ এবং মানুষের জীবন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন, পৃথিবীর আবহাওয়া পাল্টে যাবার কথা অনেকদিন থেকেই আলোচনায়। বাতাসে কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে বিজ্ঞানীরা সতর্ক করছিলেন। ওজোনস্তর ফুটো হয়ে যাবার কথাও অনেক পুরোনো। কিন্তু সেই পুরোনো কথার গুরুত্ব কেউ দেয়নি। আর দিলেও তা যে যথাযথভাবে দেওয়া হয়েছে, এমন বলার সুযোগ নেই।
বিজ্ঞানীদের সতর্কবার্তা মানুষ শুনেছে। রাষ্ট্রপ্রধানরা তহবিল সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন ফোরামের নানা আয়োজনে উত্তেজক কথাবার্তা বলে হাততালি নিয়েছেন এবং নিচ্ছেন। একে অন্যকে দোষারোপের সংস্কৃতিও রয়েছে। আর ধনী রাষ্ট্রগুলো যেভাবে কার্বন নিঃসরণ করছে, তার বিপরীতে দরিদ্র রাষ্ট্রগুলো রীতিমতো অসহায়। ফলে একদিকে দোষারোপের সংস্কৃতি, দরিদ্র দেশগুলোর আহাজারি, পৃথিবীব্যাপী সচেতন মানুষদের আর্তনাদ অন্যদিকে বায়ুমণ্ডলে অবিচ্ছিন্নভাবে কার্বন নিঃসরণ চলতে থাকে। ফলে বিজ্ঞানীদের সতর্কবার্তাও ফলতে শুরু করেছে। মেরু অঞ্চলের বরফ গলছে, হিমালয়ের বরফ গলছে। সেই পানি ধেয়ে আসছে সমুদ্রে। বাড়ছে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা। আর ওজোনস্তরের ফুটো বাড়তে থাকারও প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।
বিশ্বের তাপমাত্রার যে পরিবর্তন তাও স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। পেছনের একশ বছরের তাপমাত্রা মিলিয়ে দেখে, বায়ুমণ্ডল এবং পৃথিবীপৃষ্ঠ উষ্ণ হয়ে ওঠার প্রমাণও হাতেনাতে ফলতে শুরু করেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমাদের দুর্ভাগ্য, পৃথিবীর তাপমাত্রা অব্যাহতভাবে বেড়ে চলেছে। কার্বন নিঃসরণের মাত্রা ঠিক করার কাজটি নিয়ে যত সময়ক্ষেপণ হবে, মতানৈক্য থাকবে, তত বেশি মোকাবেলা করতে হবে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি। সেই ঝুঁকি এড়ানোর পথ একটাই, সেটা হল শিল্পোন্নত রাষ্ট্রগুলোকে এক টেবিলে বসিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৪০৬
আপনার মতামত জানানঃ