টিকা নিয়ে নানা সঙ্গতি অসঙ্গতিতে ঘিরে আছে মানুষের মন। এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে মানুষের উদ্বিগ্নতার শেষ নেই। কিন্তু এবার অভিযোগ উঠলো সুঁই পুশ করে টিকা না দিয়েই সিরিঞ্জ ফেলে দেয়ার।
গতকাল রোববার (১ আগস্ট) টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার স্বাস্থ্য উপজেলা কমপ্লেক্সে ২০ ব্যক্তির শরীরে করোনা টিকার ডোজ না দিয়ে কেবল সুঁই প্রবেশ করিয়ে সিরিঞ্জ ফেলে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীরা বলছেন, এ সময় টিকা প্রদানকারী স্বাস্থ্যকর্মী সিরিঞ্জে টিকার ডোজ (তরল টিকা) ঠিকই নিয়েছেন কিন্তু তাদের শরীরে তা পুশ করেননি। পুশ করা হয়েছে বলে তিনি টিকার ডোজসহ সিরিঞ্জ ফেলে দেন।
যে ব্যক্তি টিকা প্রদানকারীর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে তার নাম সাজেদা আফরিন, তিনি ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক। এ ঘটনায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সহকারী সিভিল সার্জন প্রধান তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেন।
জানা গেছে, রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ২ নম্বর বুথে নিবন্ধনকারীদের করোনার টিকা প্রদান করছিলেন হাসপাতালের সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক সাজেদা আফরিন। তিনি টিকাগ্রহণকারীদের অনেকের শরীরে সুঁই প্রবেশ করিয়ে একটু পর আবার বের করে ফেলছিলেন, সিরিঞ্জে থাকা টিকার ডোজ পুশ করছিলেন না। পরে টিকার ডোজসহ সিরিঞ্জ ফেলে দিচ্ছিলেন।
এ সময় ঘটনাটি এক যুবকের নজরে আসে। তিনি এ ব্যাপারে উপস্থিত সবার সঙ্গে কথা বললে সেখানে হৈচৈ শুরু হয়। পরে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. শামিমকে জানানো হলে তিনি পরিত্যক্ত সিরিঞ্জগুলো বাছাই করে ২০টি সিরিঞ্জের ভেতর সম্পূর্ণ ভ্যাকসিনের উপস্থিতি দেখতে পান। তিনি নিশ্চিত হন এই ২০টির ক্ষেত্রে সুঁই প্রবেশ করা হলেও ভ্যাকসিন শরীরে প্রবেশ করানো হয়নি।
অভিযোগ প্রসঙ্গে সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক সাজেদা আফরিন বলেন, হাসপাতালে অনেক মানুষজন টিকা নিতে আসায় সেখানে অনেক চাপ ছিল। এতে অনিচ্ছাকৃতভাবে ঘটনাটি ঘটে গেছে!
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. মো. শামিম বলেন, ঘটনাটি একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত। আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেবেন।
টাঙ্গাইল জেলা সিভিল সার্জন আবুল ফজল মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন জানান, অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে। ভিকটিমদের পুনরায় করোনার ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে। অভিযুক্ত স্বাস্থ্যসহকারীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।
এটি ইচ্ছাকৃত ভুল নাকি এর পেছেনে কোনো উদ্দেশ্য আছে তা তদন্তে খতিয়ে দেখা হবে। অসচেতন হয়ে করা কিংবা উদ্দেশ্যমূলক এই দুটির যেকোনো একটি হলেও এটিকে ভয়ংকর ঘটনা বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এসডব্লিউ/এমএন/ডব্লিউজেএ/২১১৮
আপনার মতামত জানানঃ