ইরানে চালু করা হয়েছে ইসলামী ডেটিং অ্যাপ। আর এই অ্যাপের উদ্দেশ্য তরুণদের বিয়েতে উৎসাহিত করা। সোমবার ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত এক সংবাদে এই তথ্য জানানো হয়।
ইরানের ইসলামী প্রচারণা সংস্থার নিয়ন্ত্রণাধীন তেবাইয়ান কালচারাল ইন্সটিটিউটের তত্ত্বাবধানে তৈরি এই অ্যাপটিতে ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার’ (আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স) ব্যবহার করা হয়েছে।
সরকারি নিয়ন্ত্রণাধীন ‘হামদাম’ (সাথী) নামের এই অ্যাপটির সাহায্যে ব্যবহারকারীরা পছন্দের সাথীকে খুঁজতে ও বাছাই করতে পারবেন।
ইরানের সাইবারস্পেস পুলিশের প্রধান কর্নেল আলী মোহাম্মদ রাজাবি বলেন, ইরানে এই ধরনের এটিই একমাত্র অ্যাপ। বাকী চালু থাকা সবগুলোই অ্যাপই অবৈধভাবে চলছে।
‘হামদামের’ ওয়েবসাইটের তথ্য অনুসারে, সত্যিকার অবিবাহিত যারা স্থায়ীভাবে বিয়ে ও একমাত্র জীবনসঙ্গীর সন্ধান করছেন তাদের সহায়তার জন্যই অ্যাপটিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার হয়েছে।
ওয়েবসাইটটি দাবি করেছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় কেবলমাত্র স্নাতকদের জন্য স্থায়ী বিবাহ এবং একক স্ত্রী খোঁজার কাজে সহায়তার করা হবে।
তেবাইয়ান কালচারাল ইন্সটিটিউটের প্রধান কোমেইল খোজাস্তে অ্যাপের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বলেন, ইরানের পারিবারিক মূল্যবোধ বর্হিশক্তির হুমকির মুখে রয়েছে।
তিনি বলেন, ইরানের শত্রুরা তাদের নিজস্ব ধারণা ইরানের ওপর চাপিয়ে দিতে চায়। এই হুমকি উত্তরণ করে ‘সুস্থ পরিবার’ গঠনে অ্যাপটি সহায়তা করবে বলে বক্তব্যে জানান তিনি।
ইরানি এক কর্মকর্তা বলেন, শয়তান সব সময় পরিবার ধ্বংস করে দিতে চায়। আমাদের শত্রুরা পরিবারগুলো ধ্বংস করে দিতে একের পর এক চেষ্টা করে যাচ্ছে। এই হ্যামদাম অ্যাপ পরিবার গঠন ও পরিবার রক্ষা করতে সহায়তা করবে।
হামদামের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুসারে, ব্যবহারকারীকে প্রথমেই নিজের পরিচয় নিশ্চিত করতে হবে এবং ব্যবহারের আগে তাকে ‘সাইকোলজি টেস্ট’ (মনস্তাত্বিক অবস্থা নিরীক্ষণ) দিতে হবে।
কোনো যুগলের মধ্যে সম্পর্ক ঠিক হওয়ার পর অ্যাপের এক সার্ভিস কনসালটেন্ট দুই জনের পরিবারকে পরিচয় করিয়ে দেবে। বিয়ের পর ওই দম্পতিকে চার বছর সঙ্গ দেবেন ওই কনসালটেন্ট কর্মকর্তা।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বিবাহের বয়স বৃদ্ধি ও জন্মহার হ্রাস পাওয়ায় বেশ কয়েকবার সর্তক করেছেন। ইরানের সংসদ দেশটির নাগরিকদের একাধিক সন্তান নেওয়ার আহবান জানিয়েছে।
জানা যায়, মার্চ মাসে ইরানের রক্ষণশীল অধীন সংসদে ‘জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং পরিবারকে সহায়তা প্রদান’ বিষয়ক একটি বিল পাশ করা হয়।
এই বিলে সরকারকে বিয়েতে এবং দুইয়ের অধিক সন্তান নেয়ার জন্য পরিবারগুলোকে বেশ বড় অঙ্কের আর্থিক সহায়তা দেয়ার কথা বলা হয়।
সূত্র মতে, ইরানে তরুণদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদের প্রবণতা অনেক। ইরানের ২২ শতাংশ দম্পতির বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটে। রাজধানী তেহরানে এই হার আরও বেশি। বিচ্ছেদের এই প্রবণতা ৩০ বছরের নিচের দম্পতিদের মধ্যেই সবচেয়ে বেশি, আর দেশটির জনসংখ্যার বেশিরভাগই এ বয়সী। তাই এমন পরিসংখ্যান দেশটির কর্তৃপক্ষকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।
এসডব্লিউ/এমএন/এসএস/১৫৩৩
আপনার মতামত জানানঃ