রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী পৌরসভার মেয়র মুক্তার আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে অস্ত্র, গুলি, ইয়াবাসহ প্রায় ৯৫ লাখ টাকা উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন অভিযানের নেতৃত্ব দেন। এ সময় মেয়র পালিয়ে যান। পুলিশ মেয়রের স্ত্রী জেসমিন আকতার এবং ভাতিজা শান্ত ইসলাম ও সোহান আলীকে আটক করেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সহকারী পুলিশ সুপার (চারঘাট সার্কেল) রুবেল আহমেদ।
মি. রুবেল জানান, বাঘা থানার একটি মামলার ঘটনায় পুলিশ পৌর মেয়রের বাড়িতে অভিযানে যায়। এ সময় বাড়িটিতে তল্লাশি চালালে চারটি পিস্তল, ৯৪ লাখ ৯৮ হাজার টাকা ও ইয়াবা পাওয়া যায়। এ সময় মেয়র মুক্তার আলীকে পাওয়া যায়নি।
বাড়িতে থাকা তার স্ত্রী জেসমিন আকতার এবং দুই ভাতিজা শান্ত ইসলাম ও সোহান আলীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। এ ঘটনায় আইনগত পদক্ষেপের প্রক্রিয়া চলছে। দুপুর ১২টায় বাঘা থানায় প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে বিষয়টি সম্পর্কে গণমাধ্যমকর্মীদের বিস্তারিত জানানো হবে।
প্রসঙ্গত গত পৌরসভা নির্বাচনে মুক্তার আলী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে মেয়র নির্বাচিত হন। সেই সময় মুক্তারের সমর্থকদের হামলায় হতাহতের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মুক্তার আলীকে আড়ানী পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ থেকে অপসারণ করা হয়।
স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, গতকাল বিকেলে আড়ানী বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত মেয়রে মুক্তার আলীর ছেলের শ্বশুর শামীম হোসেনের ওষুধের দোকানে অভিযান চালান। এসময় মেয়রের বেয়াই শামীমের নিকট থেকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মেয়র মুক্তার আলী রাতে ওই বাজারের অপর দুই পল্লী চিকিৎসক জানারুল ও মনোয়ারুলের দোকানে প্রবেশ করে তাদেরকে মারপিট করেন। এ ঘটনায় রাতেই পুলিশে অভিযোগ করা হয়। এরপর পুলিশ গভীর রাতে মেয়র মুক্তারের বাড়িতে অভিযান চালায়।
সূত্রগুলো আরো জানায়, রাত নয়টার দিকে পৌর মেয়র মুক্তার আলী আড়ানী বাজারের পল্লী চিকিৎসক জানারুল ইসলামের দোকানে প্রবেশ করে তাকে প্রথমে মারপিট করেন। এরপর মেয়রের নেতৃত্বে তার সন্ত্রাসীরা ওই বাজারের আরেক পল্লী চিকিৎসক মনোয়ারুল ইসলাম, তার স্ত্রী দিলরুবা এবং ৭ বছরের শিশু সন্তান অয়নক মারপিট করে। এ ঘটনায় আহত মনোয়ারুল ইসলামকে রাতেই বাঘা থানা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। এরপর রাতেই পুলিশে অভিযোগ করা হলে এসপি মাসুদ হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশ মেয়র মুক্তার আলীর বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বিপুল পরিমাণ মাদক, নগদ ৯৪ লাখ টাকা এবং চারটি অস্ত্র উদ্ধারকরা হয়।
এ সময় মেয়র মুক্তার আলীকে পাওয়া না গেলেও বাড়িতে থাকা তার স্ত্রী জেসমিন আকতার এবং দুই ভাতিজা শান্ত ইসলাম ও সোহান আলীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।
এসডব্লিউ/এমএন/এসএস/১০১৫
আপনার মতামত জানানঃ