হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব সাজেদুর রহমানসহ ১৯ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া তিন আসনের সংসদ সদস্য উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।
মঙ্গলবার (২২ জুন) দুপুরে চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যুনালের এস কে এম তোফায়েল হাসানের আদালতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি দায়ের করেন তিনি।
বাদীর আইনজীবী ইকবাল হোসেন আজ বিকেলে গণমাধ্যমকে বলেন, ২৫ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে ঘিরে আসামিরা ফেসবুক পেজ, ফেসবুক আইডি, নিউজ পোর্টালে নানা অপপ্রচার চালিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটান। আসামিরা এসব ঘটনার জন্য সাংসদ উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর ওপর দায় চাপান। এ জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি করা হয়েছে। আদালত এখনো কোনো আদেশ দেননি।
মামলার এজাহারে উল্লেখকৃত অন্য আসামিরা হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি আশরাফুল হাসান তপু ( ২৫), জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদরাসার বোরহান উদ্দীন কাসেমী (৫০) , দারুল আকরাম মাদরাসার মাওলানা আলী আজম (৫৪), মদিনা মসজিদের ইমাম মাওলানা এরশাদুল্লাহ, জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদরাসার মওলানা জুনায়েদ কাসেমী (৪৫), জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদরাসার মাওলানা নোমান আল হাবিবী, মমিনুল হাসান তাজ ( ২৮), সোলেমান মোল্লা (৫৫), এনামুল হক(২৮), হাকিম মাওলানা ৫৫), মঞ্রুজুল হকের (৪৫) সহ আরও ছয় জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও এক’শ থেকে দেড়’শ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার আরজিতে বলা হয়, আসামিরা অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ককটেল, হাতবোমা, গানপাউডারসহ বিভিন্ন দাহ্য পদার্থ ব্যবহার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন, পুলিশ সুপারের বাসভবন ও কার্যালয়, জেলা পরিষদ কার্যালয় ও ডাকবাংলো, ২ নম্বর পুলিশ ফাঁড়ি, গণপূর্ত কার্যালয়, মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্যালয়, ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ পৌর মিলনায়তন, বঙ্গবন্ধু স্কয়ার, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের কার্যালয়, বাসস্থান ও শ্বশুরবাড়ি, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বর, শিল্পকলা একাডেমি হলরুম, আলাউদ্দিন সংগীতাঙ্গন, আওয়ামী লীগের কার্যালয়, সদর উপজেলা ভূমি অফিস, পানি উন্নয়ন বোর্ড, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কার্যালয়, ব্যাংক এশিয়া শাখা, সাবরেজিস্ট্রি অফিস, জেলা প্রেসক্লাব, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বাড়ি, আওয়ামী লীগ নেতা প্রয়াত আফজাল হোসেন চৌধুরীর বাড়ি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ, জেলা গণগ্রন্থাগার, মা ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্র, জেলা পুলিশ লাইনস, ঢাকা চট্টগ্রামগামী সোনার বাংলা এক্সপ্রেসসহ মোট ৫৭টি সরকারি–বেসরকারি কার্যালয় ও স্থাপনায় হামলা চালান আসামিরা।
আসামিরা বিভিন্ন ফেসবুক পেজ, ফেসবুক আইডি, নিউজ পোর্টাল, ইউটিউব চ্যানেল থেকে রাষ্ট্রদ্রোহ, ঘৃণা, বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটান।
হেফাজতের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে সাংসদের মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে হেফাজতে ইসলামের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর ইদ্রিস আজ বিকেলে মুঠোফোনে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মহাসচিবের সঙ্গে আলাপ করে আমরা করণীয় ঠিক করব।’
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫৬টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ৪০ হাজারের বেশি ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ৪১৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। বাকি সবাই অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারী। ৫৬টির মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় ৪৯টি, আশুগঞ্জ থানায় ৪টি, সরাইল থানায় ২টি ও আখাউড়া রেলওয়ে থানায় ১টি মামলা হয়। আজ পর্যন্ত এসব মামলায় ৫৮১ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এসডব্লিউ/এমএন/এফএ/১৯৫৫
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ