কুয়েতের পার্লামেন্টে শুক্রবার এক আইন পাশ করা হয়। যে আইনে কুয়েতের কোনও নাগরিক ইসরায়েল সফরে গেলে বা ইহুদিবাদী দেশটির সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য কিংবা কোনও ধরনের সম্পর্ক রাখলে তাকে কারাদণ্ড ভোগ করাসহ জরিমানা গুণতে হবে।
কুয়েতের পাঁচ এমপি গত সপ্তাহে পার্লামেন্টে এ সংক্রান্ত একটি খসড়া বিল উত্থাপন করেন বলে জানা যায়। সূত্র মতে, কুয়েতের এমপি আদনান আবদুল সামাদ, হিশাম আল-সালেহ, আলী আল কাতান, আহমাদ আল হামাদ এবং খলিল আল সালেহ ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক না করতে পার্লামেন্টে ওই বিল উত্থাপন করেন।
এই আইনে কোনও কুয়েতি নাগরিক যদি ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করেন বা ইহুদিবাদী দেশটি সফর করেন তাহলে তাকে এক থকে তিন বছরের জেল এবং ৫ হাজার কুয়েতি দিনার জরিমানা করার প্রস্তাব করা হয়।
গাজা উপত্যকার ওপর সাম্প্রতিক ইসরায়েলি বর্বর হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে কুয়েতের জাতীয় সংসদ ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ নিষিদ্ধ করে শুক্রবার এই বিলটি পাস করেছে।
প্রসঙ্গত, ফিলিস্তিন পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে কুয়েত জাতীয় সংসদের জরুরি অধিবেশন ডাকা হয়। অধিবেশনে সংসদ সদস্যরা ফিলিস্তিনিদের প্রতি তাদের অকুণ্ঠ সমর্থন ঘোষণা ক’রে বলেন, পূর্ব জেরুজালেম আল-কুদসকে (পূর্ব বায়তুল মুকাদ্দাস) রাজধানী করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠিত না হওয়া পর্যন্ত ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি কুয়েতের সংহতি ও সহমর্মিতা অব্যাহত থাকবে।
কুয়েতের পার্লামেন্ট স্পিকার মারজুক আলী আল-ঘানেম বলেন, ফিলিস্তিন ইস্যুতে কুয়েতের জনগণ ও সরকারের অবস্থান জানিয়ে দিতে আজ জাতীয় সংসদের বিশেষ অধিবেশন বসেছে। ফিলিস্তিন হচ্ছে কুয়েতের প্রধান জাতীয় ইস্যু। তিনি গাজা উপত্যকার বেসামরিক অবস্থানগুলোতে ইহুদিবাদী ইসরায়েলের সাম্প্রতিক ভয়াবহ আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা জানান।
এর আগে বৃহস্পতিবার দিনের শুরুতে কুয়েতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শায়খ আহমাদ নাসের আল-মোহাম্মাদ আস-সাবাহ বলেন, ফিলিস্তিনি জাতির প্রকৃত অধিকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগ পর্যন্ত তাদের প্রতি কুয়েতের অকুণ্ঠ সমর্থন অব্যাহত থাকবে। তিনি সুস্পষ্ট ভাষায় বলেন, দখলদার ইসরায়েল সম্প্রতি যে জঘন্য অপরাধ করেছে তাকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, দখলদাররা সহিংসতা ও আগ্রাসনের মাধ্যমে আল-কুদস ও গাজায় আমাদের ফিলিস্তিনি ভাইদের হত্যা করেছে, অবকাঠামো ধ্বংস করেছে, ফিলিস্তিনি কৃষিজমি ও ফলের বাগানে আগুন দিয়েছে এবং অসহায় নারী ও শিশুদের আর্তচিৎকারকে উপহাস করেছে।
কুয়েতের পাশাপাশি কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ বিন আব্দুর রহমান আলে-সানি শুক্রবার দোহায় বলেছেন, ফিলিস্তিন ইস্যুতে কাতারের নীতিতে কোনও পরিবর্তন আসবে না। কাতার কোনওদিন ইহুদিবাদী ইসরায়েলের সঙ্গে কোনওকরম কূটনৈতিক বা বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপন করবে না।
কুয়েত ও কাতার এমন সময় ফিলিস্তিন ইস্যুতে মুসলিম উম্মাহর প্রাণের দাবি সমর্থন করে বক্তব্য দিল যখন সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনের মতো আরব দেশগুলো ইহুদিবাদী ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিয়ে এই অবৈধ রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করেছে।
এসডব্লিউ/এমএন/এসএস/১৮০৯
আপনার মতামত জানানঃ