এক বছরেরও বেশি সময় ধরে করোনা মহামারিতে বিপর্যস্ত সারা বিশ্ব। কিন্তু কোথা থেকে এলো এই মারাত্মক ছোঁয়াচে জীবাণু; আর কিসের মাধ্যমেই বা এর উৎপত্তি, এ নিয়ে প্রশ্নের অন্ত নেই। রোববার (২৩ মে) এক প্রতিবেদনে প্রভাবশালী মার্কিন গণমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল সামনে এনেছে নতুন তথ্য। যেখানে প্রথম করোনা শনাক্ত ও ছড়িয়ে পড়া নিয়ে নতুন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
রোববার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে গণমাধ্যমটি জানিয়েছে, চীন করোনা মহামারির তথ্য প্রকাশ করার আগেই ২০১৯ সালের নভেম্বরে দেশটির উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজির (ডব্লিউআইভি) তিন গবেষক হাসপাতলে চিকিৎসা নিয়েছিলেন। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অপ্রকাশিত একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদনের তথ্যও উল্লেখ করেছে পত্রিকাটি।
চীনে কতজন গবেষক করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাদের অসুস্থতার সময়কাল এবং হাসপাতালে যাওয়ার ব্যাপারে বিশদ তথ্য রয়েছে ওই গোয়েন্দা প্রতিবেদনে।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল বলছে, ল্যাবরেটরি থেকে নভেল করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে কি না, সে ব্যাপারে আরও অনুসন্ধানের দাবিকে জোরালো করে তুলেছে ওই গোয়েন্দা প্রতিবেদন।
এদিকে, করোনার উৎস অনুসন্ধানে নতুন তদন্ত শুরুর বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নীতিনির্ধারনী কমিটির বৈঠক শুরুর আগে এই তথ্য প্রকাশ করা হলো।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদন সম্পর্কে কোনো মন্তব্য না করলেও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, মহামারির শুরুর দিকে চীন থেকে ভাইরাসটির যে ভ্যারিয়েন্টগুলো ছড়িয়েছে সে ব্যাপারে বাইডেন প্রশাসনের প্রশ্ন রয়েছে।
সেই জায়গা থেকে, ডব্লিউএইচও’র সঙ্গে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে, এই অনুসন্ধান কার্যক্রমে কোনো ধরনের ‘হস্তক্ষেপ ও রাজনৈতিক প্রভাব’ থাকবে না বলেও জানান ওই মুখপাত্র।
এর আগে, করোনার উৎস অনুসন্ধানে ডব্লিউএইচও’র সমীক্ষা নিয়ে মার্চেই প্রশ্ন তুলেছিল যুক্তরাষ্ট্র, নরওয়ে, কানাডা, ব্রিটেনসহ কয়েকটি দেশ। তারা এ ব্যাপারে আরও অনুসন্ধান এবং মহামারীর শুরুর দিকে মানুষ, প্রাণীর সঙ্গে সম্পর্কিত সব ধরনের তথ্য প্রকাশের দাবি করেছিল।
অন্যদিকে, এই অনুসন্ধানের ব্যাপারে চীনের কাছ সহযোগিতা ও স্বচ্ছতা প্রত্যাশা করে যুক্তরাষ্ট্র। তবে ওয়াশিংটনে চীনা দূতাবাসের কোনো বক্তব্য রোববার (২৩ মে) পর্যন্ত জানা যায়নি।
এ ব্যাপারে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ল্যাবরেটরি থেকে ভাইরাসটি ছড়িয়েছে কিনা, তার অনুসন্ধান এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। ডব্লিউএইচও’র নেতৃত্বে একটি দল ফেব্রুয়ারিতে উহানের ভাইরোলজি ইনস্টিটিউট পরিদর্শনের পরই অনুসন্ধান কার্যক্রম শেষ হয়ে গেছে।
যুক্তরাষ্ট্র ‘ল্যাব লিক তত্ত্ব’ জোরাল করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এটি কি আসলেই উৎস অনুসন্ধান নাকি মনোযোগ অন্যদিকে ঘোরানোর চেষ্টা — প্রশ্ন তুলেছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
প্রসঙ্গত, উহানের ল্যাবরেটরি থেকে নভেল করোনাভাইরাস ছড়িয়ে থাকতে পারে বলে ট্রাম্প প্রশাসন দাবি করেছিল। তবে, চীনের পক্ষ থেকে তা অস্বীকার করা হয়।
সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার একটি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, চীনের উহান থেকেই ছড়িয়ে পড়েছিল করোনা সংক্রমণ। দাবি করা হয়েছে, রাসায়নিক অস্ত্র হিসেবেই গবেষণাগারে তৈরি করা হয়েছে এই জীবাণু। এক চীনা বিজ্ঞানীও জানিয়েছিলেন যে, এটি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রস্তুতির অংশ। আর এতে আগে থেকেই তৈরি হচ্ছে চীনের সেনাবাহিনী।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৩০৩
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগীতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ