গোয়ালন্দ ঘাট থানায় সাংবাদিকের দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলায় কথিত সাংবাদিক সুজন খন্দকারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (৪মে) রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গোয়ালন্দ প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক যুগান্তরের গোয়ালন্দ প্রতিনিধি শামীম শেখ মামলাটি করেন। তিনি ফেসবুক ও ইউটিউব নির্ভর জনতার বিবেক টিভির চেয়ারম্যান ও নিজস্ব প্রতিনিধি এবং উপজেলার দৌলতদিয়া শাহাদাৎ মেম্বারপাড়ার মৃত মোহাম্মদ আলী খোন্দকারের ছেলে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, অনুমোদিত ও ভুঁইফোঁড় টিভি চ্যানেলের বিভিন্ন পদ-পদবি ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে দীর্ঘদিন ধরে সমাজের প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিবর্গ ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অপপ্রচার এবং তৈলবাজির মাধ্যমে অবৈধ সুবিধা গ্রহণ করে আসছে জনতার বিবেক নামের অনলাইন টিভি চ্যানেল কর্তৃপক্ষ। গত ১৭ এপ্রিল যুগান্তরে ‘গোয়ালন্দে শতাধিক নারীর কার্ড জব্দের অভিযোগ, খাদ্য সহায়তার নামে ইউপি চেয়ারম্যানের কারসাজি’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
ওই সংবাদটিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপকৌশল হিসেবে ১৯ এপ্রিল বিতর্কিত ওই ইউপি চেয়ারম্যানের উন্নয়নমুখী কর্মকাণ্ড প্রচারণার অজুহাতে একটি প্রতিবেদন ফেসবুক ও ইউটিউবে প্রচার করে। প্রতিবেদনের একটি অংশজুড়ে তারা যুগান্তরে প্রকাশিত সংবাদটিকে মিথ্যা বলে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করা হয়। সেই সঙ্গে যুগান্তর প্রতিনিধি শামীম শেখের ছবি বারবার প্রদর্শন ও উৎকোচ গ্রহণের মিথ্যা প্রচারণার মাধ্যমে তাকে সামাজিকভাবে হেয় করার অপচেষ্টা চালায়।
এ অবস্থায় গোয়ালন্দ প্রেস ক্লাবের সাংবাদিকরা ১ মে রাতে সভা করে এর তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ এবং আইনি প্রক্রিয়ায় তাদের মোকাবিলার সিদ্ধান্ত নেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৩ মে রাতে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় মামলা করা হয়।
এ বিষয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল তায়াবীর বলেন, ধৃত আসামী সুজন খন্দকারকে বুধবার আদালতের মাধ্যমে রাজবাড়ীর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা হেফাজতে ইসলামের সহসভাপতি মাওলানা মেহেদী হাসান ও সহ-সাধারণ সম্পাদক মুফতি আমজাদ হোসাইন আশরাফীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৪ মে) রাত সোয়া ১১টার দিকে মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়। এ মামলায় মেহেদী ও আমজাদসহ তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। অপর আসামি হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের কে. দাস মোড়ের বাসিন্দা সানাউল হক চৌধুরী (৫৫)। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মুহাম্মদ শাহজাহান জানান, ছাত্রলীগ সভাপতির দেওয়া এজাহারটি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে।
এর আগে সোমবার (৩ মে) রাতে সদর মডেল থানায় মামলার এজাহারটি জমা দেন জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল।
এজাহারে বলা হয়, আসামিরা ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সংগঠিত হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডবের প্রত্যক্ষ মদদদাতা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য র. আ. ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর মানহানি এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি এবং আইনশৃঙ্খলা অবনতির জন্য মাওলানা মেহেদী হাসান তার ফেসবুক আইডি থেকে একটি পোস্ট দেন। মেহেদী তার পোস্টে মোকতাদির চৌধুরীকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসায় হামলাকারী উল্লেখ করে ফাঁসি দাবি করেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি ঘটানোর অভিপ্রায়ে বাকি দুই আসামি মেহেদীর ওই পোস্ট প্রচার করেন বলে এজাহারে উল্লেখ করেন বাদী।
গত শনিবার (১ মে) সন্ধ্যায় হেফাজতে ইসলামের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কমিটির সভাপতি মাওলানা সাজিদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মুফতি মুবারক উল্লাহর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার জন্য সদর মডেল থানায় এজাহার দেন সংসদ সদস্য র. আ. ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৭৪৯
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ