ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে কটূক্তি ও ব্যাঙ্গাত্মক ছবি পোস্ট করায় ফিরোজ কবীর (২৪) নামের এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার ফিরোজ কবীর হরিপুর এলাকার প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক আলী সরকারের ছেলে। মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) বিকেলে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে তাকে গ্রেফতার করে দামকুড়া থানা পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দামকুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব হোসেন। তিনি বলেন, ফিরোজ কবীর কয়েকদিন ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ছবি এডিট করে ফেসবুকে পোস্ট দিচ্ছিলেন। এসব ছবির সঙ্গে কটূক্তি করে বিভিন্ন কথাও লিখছিলেন। এসব আপত্তিকর ছবি সংবলিত পোস্ট হরিপুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি সদস্য মো. বাদল ও স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতাদের নজরে আসে।
তাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে (ফিরোজ) প্রাথমিকভাবে ধরে ইউপি কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। পরে তার মোবাইল ইউপি চেয়ারম্যান ও গ্রামবাসীর সামনে চেক করা হয়। তার মোবাইলে ব্যাঙ্গাত্বক ছবিগুলো পাওয়া যাওয়ায় তাকে আটক করা হয়।
এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান বজলে রেজবী আল হাসান মুঞ্জিল বলেন, ফিরোজ কবীর একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার পরিবারকে বাড়িও দিয়েছেন। তারপরও ফিরোজের কাছ থেকে এ ধরনের অশালীন ঘৃণ্য কর্মকাণ্ড আশা করিনি। ফিরোজ কবীরের এমন কর্মকাণ্ডের জন্য তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হোক।
দামকুড়া থানার ওসি বলেন, ফিরোজকে থানা হাজতে রাখা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলাও দায়ের করা হয়েছে। বুধবার সকালে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হবে।
এদিকে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আপত্তিকর ছবি ও কটূক্তি করে হৃদয় মিয়া নামে এক ছাত্রদল কর্মী তার ব্যক্তিগত ফেসবুকে পোস্ট দেয়। এতে উপজেলার বিরুনীয়া এলাকার আওয়ামী লীগ, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সোমবার (৫ এপ্রিল) বিকালে তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।
হৃদয় কংশেরকুল গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে। এ ঘটনায় রাতে বিরুনীয়া ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক তুষার মিয়া বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
জানা যায়, কংশেরকুল উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ শ্রেণির ছাত্র হৃদয় মিয়া তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি ‘আহম্মেদ হৃদয়’ থেকে ভারতের ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ছবি এডিট ও কুৎসিত মন্তব্য করে পোস্ট দিলে বিষয়টি স্থানীয় আওয়ামী লীগ, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নজরে আসে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ঘটনার দিন বিকালে হৃদয়কে বিরুনিয়া বাজারের মসাজিদের কাছ থেকে তারা হৃদয়কে আটক করে ভালুকা মডেল থানা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ হৃদয়কে থানায় নিয়ে আসে। রাতে হৃদয়ের বিরুদ্ধে তুষার মিয়া বাদী হয়ে একটি মামলা করেন।
এ ব্যাপারে ভালুকা মডেল থানার ওসি মাহমুদুল ইসলাম জানান, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা হয়েছে এবং গ্রেফতারকৃত আসামিকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা, চিন্তার স্বাধীনতা— এটা আমাদের সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার। যে অধিকার আইন করেও খর্ব করা যায় না। সরকার যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে আইনটি নিয়ে বিতর্ক বা সমালোচনার কারণে আওয়ামী লীগ সরকারের ভাবমূর্তির ওপর দেশে ও বিদেশে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৯০৪
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগীতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগীতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগীতার অনুরোধ জানাচ্ছি।
[wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ