ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে উৎপাদিত কোভিড-১৯ এর টিকা রপ্তানিতে নিয়ন্ত্রণের যে ঘোষণা ইইউ দিয়েছে তার কঠোর সমালোচনা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থাটি বলছে ইইউ’র এর এই সিদ্ধান্তে মহামারি দীর্ঘায়িত হবে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
করোনাভাইরাস মোকাবিলা ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ২৭টি দেশে গত ২৭ ডিসেম্বর থেকে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। সেখানে ফাইজার-বায়োএনটেক এবং অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সম্প্রতি উৎপাদন কমে যাওয়ার কথা বলে ফাইজার এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকা উভয়ই ইউরোপে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী টিকা সরবরাহ করা সম্ভব হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। টিকা সরবরাহে বিলম্বের কারণে ইউরোপের দেশগুলো তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী টিকাদান কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবে না। এ নিয়ে বিরোধের জেরেই ইইউ সদস্যদেশগুলোতে উৎপাদিত টিকা রপ্তানিতে নিয়ন্ত্রণ আরোপের সিদ্ধান্ত নেয়।
তবে এই প্রবণতাকে খুবই উদ্বেগজনক আখ্যা দিয়েছেন ডব্লিউএইচও’র উপ প্রধান মারিআঞ্জেলা সিমাও। এর আগে ডব্লিউএইচও প্রধান টেড্রোস আডানোম গেব্রিয়াসিস বলেন টিকা জাতীয়করণ করা হলে মহামারির অবসান হতে ‘আরও দীর্ঘসময় লাগতে পারে। একটি বৈশ্বিক সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘টিকার মজুদের ফলে মহামারি চলতে থাকবে…বিশ্ব অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের গতিও ধীর হয়ে পড়বে।’ এছাড়া মানবিক মূল্যবোধের বিপর্যয় বাড়তে থাকায় বৈষম্য আরও বাড়বে বলে জানান তিনি।
ইউরোপের দেশগুলোতে টিকার সরবরাহ সংকট দেখা দেওয়ায় ইইউ সেখানে উৎপাদিত টিকার রপ্তানি নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নেয়। এ সিদ্ধান্তের ফলে ইইউভুক্ত দেশগুলোতে অবস্থিত কারখানায় উৎপাদিত টিকা ইইউর বাইরের দেশে রপ্তানি করতে এখন ইইউর অনুমতি নিতে হবে। বেলজিয়ামে অবস্থিত ফাইজারের কারখানা থেকে বর্তমানে যুক্তরাজ্যে টিকা রপ্তানি করা হচ্ছে। এ বিষয়ে ইউরোপীয় কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘‘নিজেদের নাগরিকদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা দেওয়া আমাদের কাছে সব কিছু আগে এবং আমাদের এখন যে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হচ্ছে তাতে আমাদের সামনে এটা করা ছাড়া আর কোনো পথ খোলা নেই।”
যদিও ইইউ বারবার বলছে, এটা অস্থায়ী ব্যবস্থা এবং তারা টিকা রপ্তানির উপর কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে যাচ্ছে না। এ বিষয়ে ইউরোপীয় কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘নিজেদের নাগরিকদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা দেওয়া আমাদের কাছে সব কিছু আগে এবং আমাদের এখন যে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হচ্ছে তাতে আমাদের সামনে এটা করা ছাড়া আর কোনো পথ খোলা নেই। ইইউর এ সিদ্ধান্তের ফলে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের প্রায় ১০০টি দেশকে ভুগতে হবে।
এসডব্লিউ/এফএ/১০৩৩
আপনার মতামত জানানঃ