জুলাই-আগস্টের ধাক্কা কাটিয়ে ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে দেশের পণ্য রপ্তানি খাত। তিন মাস ধরে পণ্য রপ্তানিতে দুই অঙ্কের প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। এর মধ্যে গত দুই মাসে টানা ৪ বিলিয়ন বা ৪০০ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্যানুযায়ী, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাস জুলাই-নভেম্বরে দেশ থেকে সব মিলিয়ে ২ হাজার কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১১ দশমিক ৩৫ শতাংশ বেশি।
শুধু নভেম্বরে ৪১২ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। যা গত বছরের একই মাসের চেয়ে ১৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ বেশি। এসব হিসাবের মধ্যে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের প্রচ্ছন্ন রপ্তানি ও নমুনা রপ্তানির তথ্যও সংযুক্ত আছে।
দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের তিনটি বড় উৎস হলো পণ্য রপ্তানি, প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স এবং বিদেশি বিনিয়োগ ও ঋণ। তার মধ্যে রপ্তানি ও প্রবাসী আয় বাড়লে বৈদেশিক মুদ্রার সংকট কমে। সর্বশেষ নভেম্বর মাসে ২২০ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১৪ শতাংশ বেশি।
দেশ দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে ডলার-সংকটে ভুগছে। তাতে ধারাবাহিকভাবে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ কমছিল। তবে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে পর অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার ফলে রিজার্ভের পতন থেমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকে গত ২৭ নভেম্বর বৈদেশিক মুদ্রার মজুত ছিল ২ হাজার ৪৫৪ কোটি ডলারের বেশি। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবপদ্ধতি অনুযায়ী, রিজার্ভ এখন ১ হাজার ৮৭৪ কোটি ডলার, যা এক মাস আগে ছিল ১ হাজার ৯৮৪ কোটি ডলার।
এনবিআরের তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাইয়ে ৩৮২ কোটি, আগস্টে ৪০৭ কোটি ও সেপ্টেম্বরে ৩৮৬ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়। পরবর্তী দুই মাস টানা ৪০০ কোটি ডলারের বেশি মূল্যের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। যেমন অক্টোবরে ৪১৩ কোটি ও নভেম্বরে ৪১২ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে নভেম্বরের রপ্তানি গত বছরের একই মাসের চেয়ে ১৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ বেশি। এসব হিসাবের মধ্যে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (ইপিজেড) প্রচ্ছন্ন রপ্তানি এবং স্যাম্পল বা নমুনা রপ্তানির তথ্যও সংযুক্ত আছে। এর পরিমাণ অবশ্য বেশি নয়।
সদ্য সমাপ্ত নভেম্বর মাসে কোন খাতে রপ্তানি কেমন বেড়েছে, তা এনবিআরের পরিসংখ্যান থেকে বিস্তারিত জানা যায়নি। তবে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হিসাব অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাস জুলাই-অক্টোবরে তৈরি পোশাক, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইলে ও হিমায়িত খাদ্যপণ্যের রপ্তানি বেড়েছে। এর মধ্যে তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ১১ শতাংশ, চামড়া ও চামড়া পণ্যের রপ্তানি ৯ শতাংশ ও কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানি ৬ শতাংশ বেড়েছে।
আপনার মতামত জানানঃ