সাভারের আশুলিয়ায় নিজ মাদ্রাসার ছাত্রীকে (১০) ধর্ষণ করে অধ্যক্ষ মাওলানা তৌহিদ বিন আজহার(৪৬)। ধর্ষণ করে ছাত্রীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে কাউকে না বলার জন্য শাসিয়ে দেয়। মাদ্রাসাছাত্রী লজ্জা ও ভয়ে কাউকে বলতে না পেরে শেষে চিরকুট লিখে বান্ধবীর মাধ্যমে নিজের ধর্ষণের কথা জানায়। পরে ভিক্টিমের বাবা মামলা করলে পুলিশ ধর্ষণের মামলায় অধ্যক্ষ মাওলানা তৌহিদ বিন আজহারকে (৪৬) গ্রেপ্তার করে। গতকাল বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) রাতে রাজধানীর মিরপুরের কাফরুল থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারর মাওলানা তৌহিদ বিন আজহার নাটোর জেলার গুরদাসপুর থানার বাসিন্দা। তিনি আশুলিয়ার খেজুর বাগান এলাকায় থেকে দুটি মহিলা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন।
পুলিশ জানায়, গত কয়েকদিন আগে মাওলানা তৌহিদ বিন আজহারের স্ত্রী বাসায় ছিলো না। সেই সুযোগে চা বানানোর কথা বলে ডেকে নিয়ে ছাত্রীকে ধর্ষণ করে। এছাড়া বিষয়টি অন্য কাউকে না জানাতে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখায়। পরে গতকাল বুধবার দুপুরে মাদ্রাসায় ক্লাস চলাকালীন কৌশলে পালিয় যায় ওই শিক্ষার্থী।
পরে গতকাল সন্ধ্যায় ভুক্তভোগীর বাবা লিখিত অভিযোগ করলে মামলা রুজু হয়। এ ঘটনার পরপর আত্মগোপনে চলে যায় মাদ্রাসার অভিযুক্ত প্রিন্সিপাল। পরে বৃহস্পতিবার রাতে অভিযান চালিয়ে রাজধানীর মিরপুর কাফরুল থানাধীন এলাকার মসজিদ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আল মামুন কবির বলেন, ভুক্তভোগী শিশুকে ওসিসিতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া আসামিকে আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
ভুক্তভোগীর পরিবার জানায়, সাভারের আশুলিয়ার হুরে জান্নাত মহিলা মাদ্রাসা ও নুরে মদিনা মাদ্রাসার আবাসিক ছাত্রী ছিলেন ভুক্তভোগী। কয়েকদিন আগে চা বানানোর কথা বলে নীচতলায় বাসায় ডেকে নিয়ে ছাত্রীকে ধর্ষণ করে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ।
পরে বিষয়টি কাউকে না জানাতে বিভিন্ন ভয় ভীতি দেখায়। পরে ভুক্তভোগী ছাত্রী তার এক সহপাঠীর মাধ্যমে চিরকুট লিখে পরিবারের কাছে পাঠালে বিষয়টি ফাঁস হলে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ মিরপুরে আত্মগোপন করে।
সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সরকারের অবহেলায় মাদ্রাসায় শিশু বলাৎকার ও ধর্ষণ দিনদিন বেড়ে চলেছে। প্রায় প্রতিদিনই আসছে মাদ্রাসা শিক্ষক দ্বারা মাদ্রাসা শিশু বলাৎকার ও ধর্ষণের খবর। এবিষয়ে সরকারের তেমন কোনো মাথা ব্যথা নেই বলে মনে করেন তারা। সংবাদ চাউর হলে মামলা গ্রেপ্তার হয় দুয়েকটাতে, কিন্তু পরে জামিনে ছাড়া পেয়ে যান। সরকারের তেমন কোনো গুরুত্ব পায়নি বলে এসব মামলার দিকে প্রশাসনেরও তেমন একটা আগ্রহ দেখা যায় না। আলোচিত কয়েকটি ঘটনায় পুলিশের আগ্রহ পরিলক্ষিত হলেও আসামিদের প্রতি ধর্মীয় কারণে তাদেরও রয়েছে নমনীয় বহিঃপ্রকাশ। মাদ্রাসায় শিশু বলাৎকার ও ধর্ষণ ইদানিং চাউর থাকলেও সরকারের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৭৪৪
আপনার মতামত জানানঃ