গ্রহাণু ‘বেন্নু’ থেকে সংগ্রহ করা নমুনার প্রথম ছবি প্রকাশ করেছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। এই নমুনাটি নাসার অসাইরিস-রেক্স মিশনের সাহায্যে পৃথিবীতে আনা হয়েছিল।
এই মহাকাশযানটি ২০২০ সালে বেন্নুর নমুনা আনতে পাঠানো হয়েছিল। সে তার দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে পালন করেছে। মাত্র দুই সপ্তাহ আগে অর্থাৎ চলতি অক্টোবরের শুরুর দিকে অসাইরিস-রেক্স ক্যাপসুল নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরে এসেছে।
এই ক্যাপসুলটি আমেরিকার উটাহ মরুভূমিতে অবতরণ করেছে। বিজ্ঞানীদের মতে, সংগ্রহ করে আনা এই নমুনা সোনা এবং রুপার চেয়েও বেশি মূল্যবান। প্রায় ৭৫০ গ্রামের এই নমুনা পেতে নাসা ১১ কোটি ৬০ লাখ ডলার (বাংলাদেশী মুদ্রায় যা প্রায় ১২৮ কোটি টাকা) খরচ করেছে। বেন্নুর এই নমুনা ৪৬০ কোটি বছরের পুরনো। কিন্তু বিজ্ঞানীরা বেন্নুকেই কেন বেছে নিল? আর এই গ্রহাণুর জন্য পৃথিবীতে কী প্রভাব পড়েছে?
নাসার তরফে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যাচ্ছে, একটি কালো ধুলো ও ভাঙা পাথরের মিশ্রণ। ওজনে প্রায় ২৫০ গ্রাম। নাসা মনে করেছিল, বেন্নুতে প্রচুর জৈব যৌগ রয়েছে। আর তার নমুনা আনলে, অনেক কিছু জানা যাবে। বেন্নুর কক্ষপথ মঙ্গল এবং বৃহস্পতির মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। এতে রাউন্ড ট্রিপ মিশনকে সহজ করে তুলেছিল। ফলে সময় মতো নমুনা নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে।
মহাকাশযান দ্বারা সংগৃহীত এই নমুনাকে বেশ কয়েকদিন ধরে পরীক্ষা করে দেখছেন বিজ্ঞানীরা। যানটিতে একটি চেম্বার রয়েছে। আর একটি ক্যাপসুল। বিজ্ঞানীদের মতে, এখনও পর্যন্ত শুধু চেম্বারের নমুনাই পরীক্ষা করা হয়েছে। ক্যাপসুলটিকে খোলা হয়নি। তবে তাদের মতে, ক্যাপসুলে যে পরিমাণ নমুনা আছে, তা একটি চা চামচের সমান হবে। চেম্বারের নমুনা নিয়ে গবেষণা করে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, বেন্নুতে প্রচুর পরিমাণে কার্বন রয়েছে। আর কার্বন ছাড়াও নমুনায় পানিল রয়েছে।
বেন্নু থেকেই পৃথিবীতে পানির উৎপত্তি হয়েছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। বেন্নু গ্রহাণু থেকে প্রচুর পরিমাণ খনিজ ৪ থেকে ৪৫০ কোটি বছর আগে পৃথিবীতে এসেছিল। আর সেই থেকেই পানির উৎপত্তি হয়েছে পৃথিবীতে। এবার শুধু ক্যাপসুলের নমুনা পরীক্ষা করার অপেক্ষা।
আপনার মতামত জানানঃ