বিশ্ব ভ্রহ্মাণ্ডে অপার রহস্য। এর সামান্যই জানা গেছে। যুগে যুগে চেষ্টায় আছেন বিজ্ঞানীরা। আর এরই ধারাবাহিকতায় সামনে এল এক যুগান্তকারী গবেষণা। গাছ কথা বলতে পারে। ইসরায়েলি বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, তারা গাছের বলা শব্দ শনাক্ত করতে পারছেন। তেল আবিব বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের যুগান্তকারী গবেষণাটি বৃহস্পতিবার মর্যাদাপূর্ণ বৈজ্ঞানিক জার্নাল ‘সেল’-এ প্রকাশিত হয়েছে।
গাছের জীবন আছে। এই গবেষণায় সফল হয়ে বিশ্বকে চমকে দিয়েছিলেন ভারতীয় উদ্ভিদ বিজ্ঞানী জগদীশ চন্দ্র বসু। তাঁর আবিষ্কারের পর থেকে উদ্ভিদ বিজ্ঞানের গবেষকরা পরবর্তী গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গিয়েছিল, গাছপালা শব্দে সাড়া দিতে পারে। এক্ষেত্রে উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কাছাকাছি উড়ে উড়ে শব্দ করতে থাকা পতঙ্গকে প্রলুব্ধ করতে গাছ তার ফুলের নেকটারে চিনির ঘনত্ব বাড়িয়ে দিতে পারে। খবর টাইমস অব ইসরায়েল
এ ছাড়াও বিজ্ঞানীরা আগেই জেনেছেন যে, গাছপালা চাপে থাকলে নানা উপায়ে পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে। যেমন, তারা পাতার রঙ বদলে ফেলে, নিজের স্বাদ তিক্ত করে বা গন্ধ ছড়িয়ে তারা বিপদে পড়ার বার্তা অন্য গাছপালাকে জানাতে পারে।
ইসরায়েলি গবেষকরা যে শুধু গাছের ‘শব্দ’ শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছেন তা-ই নয়, তারা জানিয়েছেন, গাছের একেক প্রজাতি একেক ধরনের ‘ভাষায়’ নিজেদের মধ্যে কথোপকথন চালায় বলেও তারা জানতে পেরেছেন। একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব থেকে তারা মানসিকভাবে চাপে থাকা উদ্ভিদের করা শব্দ ধারণ করেছেন।
তারা জানিয়েছেন, উদ্ভিদ ক্লিকের মাধ্যমে ‘কথোপকথন’ চালায়। এই শব্দ পপকর্ন ভাজার সময় তা ফেটে গেলে যে ধরনের শব্দ হয় অনেকটা সে রকম। এই নিসৃত শব্দ অনেকটা মানুষের কথা বলার মতোই, তবে এর ফ্রিকোয়েন্সি থাকে অনেক বেশি, যা মানুষের শ্রবণ সীমার বাইরে বলে অভিমত বিজ্ঞানীদের।
গবেষণার জন্য বিজ্ঞানীরা গ্রিনহাউসে অনেক টমেটো এবং তামাক গাছ লাগিয়ে ছিলেন। কোনো গাছের বেশি যত্ন করা হয়েছিল, আর কোনো গাছের কম। আবার কোনো গাছকে একটুও পানি দেয়া হয়নি। কিছু গাছের পাতাও ছিঁড়ে নেওয়া হয়েছিল। এই সব কিছুর পরে একটি কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে বিজ্ঞানীরা শব্দ শোনার চেষ্টা করেছিলেন।
তারা প্রথমবার শব্দ শুনতেই অবাক হয়েছিলেন। আর দ্বিতীয়বার পরীক্ষা করার সময় মাটিরও পরীক্ষা করেছিলেন। মাটির পরীক্ষা করার পরে নিশ্চিত হয়েছিলেন যে, মাটিতে এমন কোনো পোকা নেই যারা শব্দ করছে। অর্থাৎ সব শব্দ গাছেদের মধ্যে থেকেই এসেছে।
জানা যায়, একটি সাধারণ উদ্ভিদ ঘণ্টায় একবার করে শব্দ করে। আঘাত করার পর উদ্ভিদ ১৩ থেকে ৪০ বার চিৎকার করে। এমনকি অযত্ন পাওয়ার দু’দিনের মধ্যেই তারা সাহায্যের জন্য ডাকতে শুরু করে।
এসডব্লিউএসএস/০৯৩৫
আপনার মতামত জানানঃ