সৌরজগতের বৃহত্তম গ্রহ বৃহস্পতি। এই গ্রহের কক্ষপথে ঘুরছে আরো ১২টি গ্রহ। সম্প্রতি সেগুলোর সন্ধান পেয়েছেন আমেরিকার জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতি গ্রহ সূর্য থেকে দূরত্বের দিক দিয়ে পঞ্চম এবং আকার আয়তনের দিক দিয়ে সৌরজগতের বৃহত্তম গ্রহ। বৃহস্পতি ব্যতীত সৌর জগতের বাকি সবগুলো গ্রহের ভরকে একত্র করলে বৃহস্পতির ভর তা থেকে আড়াই গুণ বেশি হবে। বৃহস্পতিসহ আরও তিনটি গ্রহ অর্থাৎ শনি, ইউরেনাস এবং নেপচুনকে একসাথে গ্যাস দানব বলা হয়।
এই নতুন তথ্য প্রকাশ্যে আসার পর শনির ‘মুকুট’ কেড়ে নিয়েছে বৃহস্পতি। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের দাবি, বৃহস্পতিকে কেন্দ্র করে এর কক্ষপথে ঐ ১২টি উপগ্রহ সঙ্গে মোট ৯২টি উপগ্রহ রয়েছে।
অন্যদিকে, শনির কক্ষপথে ঘুরছে ৮৩টি উপগ্রহ। ফলে এতদিন উপগ্রহের সংখ্যার নিরিখে শনিই শীর্ষে ছিল। তবে এখন সৌরজগতে সবচেয়ে বেশি উপগ্রহ রয়েছে বৃহস্পতির।
ওয়াশিংটনের ‘কার্নেগি ইনস্টিটিউশন ফর সায়েন্স’-এর জ্যোতির্বিজ্ঞানী স্কট শেপার্ডের নেতৃত্বে পর্যবেক্ষণ দল বৃহস্পতির কক্ষপথে ঐ ১২টি উপগ্রহ খুঁজে পেয়েছেন।
আমেরিকার ‘মাইনর প্ল্যানেট সেন্টার’ সম্প্রতি এই সম্পর্কে সবিস্তার তথ্যসম্বলিত রিপোর্ট প্রকাশ করেছে।
ঐ রিপোর্ট অনুযায়ী, বৃহস্পতির ঐ উপগ্রহগুলো আকারে ক্ষুদ্র। অন্যদিকে, আমেরিকার মাসিক পত্রিকা ‘স্কাই অ্যান্ড টেলিস্কোপ’ জানিয়েছে, ঐ ১২টি উপগ্রহই কক্ষপথের দিকে মুখ করে বৃহস্পতিকে প্রদক্ষিণ করছে।
জোভিয়ান জগতে আরো সুলুকসন্ধানের জন্য দীর্ঘ দিন ধরে অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণাকারী সংস্থা নাসা। তার বছরখানেক আগে এই ১২টি গ্রহের সন্ধান মিলল।
বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস এবং নেপচুন—এই চারটি গ্রহমিলিত ভাবে জোভিয়ান জগৎ বলে পরিচিত। এই উপগ্রহগুলোর বসবাসের উপযুক্ত কিনা, তা-ও খতিয়ে দেখবে ইউরোপা ক্লিপার মিশন হিসাবে পরিচিত নাসার ঐ অভিযান।
জোভিয়ান জগতে আরও সুলুকসন্ধানের জন্য দীর্ঘ দিন ধরে অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণাকারী সংস্থা নাসা। তার বছরখানেক আগে এই ১২টি গ্রহের সন্ধান মিলল। এই উপগ্রহগুলোর বসবাসের উপযুক্ত কি না তা-ও খতিয়ে দেখবে ইউরোপা ক্লিপার মিশন হিসেবে পরিচিত নাসার ওই অভিযান।
উল্লেখ্য, জোভিয়ান শব্দটি জুপিটার শব্দের বিশেষণ রুপ। জুপিটারের গ্রিক প্রতিশব্দ হিসেবে ব্যবহৃত হয় জিউস। এই জিউস থেকেই জেনো- মূলটি উৎপত্তি লাভ করেছে। এই মূল দ্বারা বেশ কিছু জুপিটার তথা বৃহস্পতি গ্রহ সংশ্লিষ্ট শব্দের সৃষ্টি হয়েছে।
পৃথিবী থেকে দেখলে বৃহস্পতির আপাত মান পাওয়া যায় ২.৮। এটি পৃথিবীর আকাশে দৃশ্যমান তৃতীয় উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক। কেবল চাঁদ এবং শুক্র গ্রহের উজ্জ্বলতা এর থেকে বেশি। অবশ্য কক্ষপথের কিছু বিন্দুতে মঙ্গল গ্রহের উজ্জ্বলতা বৃহস্পতির চেয়ে বেশি হয়ে থাকে।
সুপ্রাচীনকাল থেকেই গ্রহটি জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও জ্যোতিষীদের কাছে পরিচিত ছিল। বিভিন্ন সংস্কৃতির প্রচুর পৌরাণিক কাহিনী এবং ধর্মীয় বিশ্বাসও আবর্তিত হয়েছে বৃহস্পতিকে কেন্দ্র করে। রোমানরা গ্রহটির নাম রেখেছিল পৌরাণিক চরিত্র জুপিটারের নামে। জুপিটার রোমান পুরাণের প্রধান দেবতা। এই নামটি প্রাক-ইন্দো-ইউরোপীয় ভোকেটিভ কাঠামো থেকে এসেছে যার অর্থ ছিল আকাশের পিতা।
এসডব্লিউএসএস/১৪৪০
আপনার মতামত জানানঃ