পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর পেশোয়ারের একটি মসজিদে আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩২ জনে দাঁড়িয়েছে। এদিকে, এ হামলার দায় স্বীকার করেছে তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি)।
সোমবার (৩০ জানুয়ারি) পেশোয়ারের পুলিশ লাইন্স এলাকার একটি মসজিদে ঘটা ওই আত্মঘাতী বোমা হামলায় আহত হয়েছেন অন্তত ১৪৭ জন।
পেশোয়ারের কমিশনার রিয়াজ মেহসুদ হতাহতের সংখ্যা নিশ্চিত করেছেন। মসজিদের একটি অংশ ধসে পড়েছে এবং ধ্বংসাবশেষের নিচে চাপা পড়া লোকজনকে উদ্ধারে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
পেশোয়ারের লেডি রেডিং হাসপাতালের মুখপাত্র মোহাম্মদ আসিম বলেন আহতদের অনেকের অবস্থা গুরুতর। তিনি বলেন, “জরুরী পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।“
স্থানীয় মিডিয়ার খবরে বলা হচ্ছে দুর্ঘটনাস্থলে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর বোমা নিস্ক্রিয়করণ ইউনিটের সদস্যরা হাজির হয়েছে।
রাজধানী ইসলামাবাদে পুলিশ উচ্চ-সতর্কাবস্থা জারী করেছে। রাজধানীতে ঢোকার এবং বেরুনোর সব পথে নিরাপত্তা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
সোমবার স্থানীয় সময় দুপুর প্রায় ১টা ৪০ মিনিটের দিকে ওই মসজিদে যখন বোমা বিস্ফোরণ ঘটে, সেসময় সেখানে জোহরের নামাজ চলছিল। হতাহতদের অনেকেই পুলিশ কর্মকর্তা, তারা মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন।
বিস্ফোরণে খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনীর পাশাপাশি বোমা নিষ্ক্রীয়করণ দলের সদস্যরাও সেখানে ছুটে যান।
পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, বিস্ফোরণের সময় মসজিদের ভেতরে প্রায় ২৬০ জনের মতো মানুষ ছিল। মসজিদটির অবস্থান পুলিশের একটি হাউজিং ব্লকের পাশেই।
এক প্রত্যক্ষদর্শী পাকিস্তানের সংবাদ চ্যানেল জিও টিভিকে বলেছেন, “নামাজ চলাকালে বিস্ফোরণটি ঘটে, এতে দোতলা মসজিদটি ভেঙে পড়েছে।”
দেশটির নিরাপত্তাবিষয়ক কর্মকর্তারা জানান, সোমবার পুলিশের দুটি চেকপোস্ট ফাঁকি দিয়ে ওই এলাকায় প্রবেশ করেন হামলাকারী। সূত্র মতে নিশ্চিত হওয়া যায় যে মসজিদটিতে জোহরের নামাজ চলাকালে সামনের কাতারে ছিলেন তিনি।
পেশোয়ারের জেলা প্রশাসক শফি উল্লাহ খান নিশ্চিত করেছেন, আত্মঘাতী হামলায় ৩২ জন নিহত হয়েছেন এবং কমপক্ষে ১৪৭ জন আহত হয়েছেন। আহতদের উদ্ধার করে লেডি রিডিং হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ভুক্তভোগীদের জন্য রক্ত সহায়তা চেয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
খাইবার পাখতুনখোয়ার তত্ত্বাবধায়ক মুখ্যমন্ত্রী মুহাম্মদ আজম খান পেশোয়ারের সব হাসপাতালে চিকিৎসাসেবার জরুরি অবস্থা জারি করেছেন। অন্তর্বর্তীকালীন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধারকারী সংস্থাগুলোকে ত্রাণ তৎপরতা দ্রুত করার নির্দেশও দিয়েছেন।
BREAKING: Dozens injured in blast at busy mosque in Pakistan’s Peshawar, say officials https://t.co/R5q74scIjW pic.twitter.com/oHd10zDvyW
— Al Jazeera English (@AJEnglish) January 30, 2023
একজন প্রত্যক্ষদর্শী গণমাধ্যমকে জানান, তিনি যখন মসজিদে যাচ্ছিলেন তখনই বিস্ফোরণ ঘটে। এটি শক্তিশালী বিস্ফোরণ ছিল। বিস্ফোরণের পর ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয় চারপাশ। তিনি আরও জানান, তার জ্ঞান ফিরলে মসজিদের ছাদ ভেঙে পড়তে দেখেন।
সোমবার স্থানীয় সময় দুপুর প্রায় ১টা ৪০ মিনিটের দিকে ওই মসজিদে যখন বোমা বিস্ফোরণ ঘটে, সেসময় সেখানে জোহরের নামাজ চলছিল। হতাহতদের অনেকেই পুলিশ কর্মকর্তা, তারা মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন।
বিস্ফোরণে খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনীর পাশাপাশি বোমা নিষ্ক্রীয়করণ দলের সদস্যরাও সেখানে ছুটে যান।
পাকিস্তানে মসজিদে বোমা হামলায় নিহত ৩২, আহত ১৫০
কমিশনার মেহসুদ বলেন, “শহরের সব হাসপাতালে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। আহতদের সর্বোত্তম চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।”
পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, বিস্ফোরণের সময় মসজিদের ভেতরে প্রায় ২৬০ জনের মতো মানুষ ছিল। মসজিদটির অবস্থান পুলিশের একটি হাউজিং ব্লকের পাশেই।
এক প্রত্যক্ষদর্শী পাকিস্তানের সংবাদ চ্যানেল জিও টিভিকে বলেছেন, “নামাজ চলাকালে বিস্ফোরণটি ঘটে, এতে দোতলা মসজিদটি ভেঙে পড়েছে।”
বিস্ফোরণের সময় তিনি মসজিদের ঠিক সামনে ছিলেন বলে জানিয়েছেন।
পাকিস্তানের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম পিটিভির দেখানো ফুটেজে পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের ছোটাছুটি করে ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে আহতদের কাঁধে করে নিয়ে যেতে দেখা গেছে।
ঘটনাস্থল থেকে ডনের সংবাদাতা জানিয়েছেন, মসজিদ ভবনের এটি অংশ ধসে পড়েছে এবং সামনের সারিতে যারা নামাজ পড়ছিলেন তারা ধ্বংসাবশেষের নিচে চাপা পড়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পুলিশ ঘটনাস্থলের দিকে যাওয়া সড়কগুলো বন্ধ করে দিয়েছে। তবে বোমা মসজিদের ভেতরে পেতে রাখা হয়েছিল না এটি আত্মঘাতী হামলা ছিল, তা পরিষ্কার হয়নি। এ পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী এ হামলার দায় স্বীকার করেনি।
সিভিল সেক্রেটারিয়েট অ্যাসোসিয়েশন পেশোয়ারের সভাপতি তাসাভুর ইকবাল বলেন, আমি নিয়মিত ওই মসজিদে নামাজ পড়ি পুলিশ লাইন্স এলাকার নিরাপত্তা সবসময়ই কড়া থাকে। এমনকি পরিচয় দেওয়া ও দেহ তল্লাশি ছাড়া কেউই ওই এলাকায় প্রবেশ করতে পারে না।
ইকবাল আরও বলেন, ‘আজ যা ঘটেছে, তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। এটি একটি বড় মসজিদ, যেখানে একই সময়ে চারশ-পাঁচশ মানুষ নামাজ আদায় করতে পারেন। বিস্ফোরণের পর ভবনটি ধসে পড়ে।’
প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, একটি মসজিদের ভেতরে আত্মঘাতী বোমা হামলা প্রমাণ করে, ইসলামের সঙ্গে হামলার সঙ্গে জড়িতদের কোনো সম্পর্ক নেই।
এদিকে, টুইটারে এ হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও।
এসডব্লিউএসএস/১৯৩০
আপনার মতামত জানানঃ