স্টেটওয়াচ রিসার্চ নেটওয়ার্ক কাজ করছে বাংলাদেশে আইনপ্রয়োগের সার্বিক চিত্র তুলে ধরার পাশাপাশি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সংক্রান্ত বাস্তবতা নিয়ে। এর অংশ হিসেবে স্টেটওয়াচ নিউজে আমরা প্রতিদিনকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা ও গণমাধ্যম সংক্রান্ত খবরাখবরগুলো সংক্ষেপে তুলে ধরার উদ্যোগ নিয়েছি। প্রতিদিন নিম্নোক্ত মাধ্যমসমূহ থেকে সংবাদগুলো সংগ্রহ ও তা নথিবদ্ধ করছে আমাদের কর্মীরা: প্রথম আলো, কালের কণ্ঠ, যুগান্তর, সমকাল, নয়া দিগন্ত, ইত্তেফাক, দেশ রূপান্তর, ডেইলি স্টার, নিউ এজ, দ্য ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেস, বাংলা ট্রিবিউন, বিডিনিউজ২৪ ডটকম, আমাদের সময়, মানবজমিন। আমরা আশা করি, এই প্রতিবেদন নিয়মিত প্রকাশের মাধ্যমে জনগণের তথ্যপ্রাপ্তির অধিকার আরো শক্তিশালী হবে।
২৯ ডিসেম্বর ২০২০, মঙ্গলবার, ১৪ পৌষ ১৪২৭, পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গণমাধ্যম সংক্রান্ত নির্বাচিত খবরের সার-সংক্ষেপ
ডাকাতি করতেন দুই এএসআই, সঙ্গে নিতেন সরকারি অস্ত্র
প্রথম আলো
বিভাগ: রাষ্ট্রীয় বিভাগ
গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয়ে সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) পদমর্যাদার দুজন পুলিশ সদস্যের নেতৃত্বে সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের সদস্যরা ডাকাতিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করে আসছিলেন। দুই পুলিশ সদস্য ডাকাতির কাজে সরকারি পিস্তল, হ্যান্ডকাফ, গাড়ি ব্যবহার করতেন। ডিবি পরিচয়ে ডাকাতির মাধ্যমে সাড়ে ৯ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে সম্প্রতি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ওই দুই পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে।
ওই দুই এএসআই হলেন নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানার মাসুম শেখ (৩৩) ও গেন্ডারিয়ার আরআরএফ মিলব্যারাকের শহীদ শেখ (৫৫)। মাসুমের গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর এবং শহীদের বাড়ি ফরিদপুরের নগরকান্দায়। দুজনই এখন কারাগারে। ২২ ডিসেম্বর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে জমা দেওয়া ডিবির লালবাগ বিভাগের এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা ডিবির লালবাগ বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) ফজলুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এএসআই শহীদ শেখ ও মাসুম শেখ দীর্ঘদিন ধরে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করে আসছিলেন। তাঁদের নেতৃত্বে সংঘবদ্ধ একটি অপরাধীচক্র ঢাকায় ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে অপরাধ করে আসছিল। অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার প্রমাণপত্র হাতে পাওয়ার পর শহীদ ও মাসুমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে ডাকাতির কাজে ব্যবহার করা পিস্তল, হ্যান্ডকাফ ও একটি প্রাইভেট কার।
রংপুর সিআইডির পুলিশ সুপারের ব্যাখ্যা
আমি শুধু সমাজের কথা বলেছি
প্রথম আলো
বিভাগ: রাষ্ট্রীয় বাহিনী
রংপুরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পুলিশ সুপার মিলু মিয়া বিশ্বাস বলেছেন, নাপিতের সঙ্গে চিকিৎসকের বিয়ে তিনি মেনে নিতে পারেননি—এ কথা তিনি বলেননি। তিনি বলেছেন, দেশের একটা সংস্কৃতি আছে, সেই সংস্কৃতিতে এ রকম অসামঞ্জস্য সমাজ মেনে নেবে না।
রংপুর সিআইডি কার্যালয়ে ২৩ ডিসেম্বর মিলু মিয়া বিশ্বাস সংবাদ সম্মেলন করেন। তাতে এক নারী চিকিৎসক, তাঁর নাপিত স্বামী ও সন্তানকে হাজির করেন। ওই নারী চিকিৎসকের বাবা তাঁর মেয়ে (৩৪) অপহৃত হয়েছেন বলে মামলা করেছিলেন বলে জানান মিলু বিশ্বাস। কিন্তু প্রাপ্তবয়স্ক একজন নারী কাকে বিয়ে করেছেন, তা নিয়ে সিআইডির এই সংবাদ সম্মেলন আলোচনার জন্ম দেয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। বিষয়টি নিয়ে প্রথম আলো অনলাইনে রোববার ‘নাপিতকে চিকিৎসকের বিয়ে, মানতেই পারছেন না সিআইডির এই এসপি’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশ আদালতের নির্দেশনা এবং আইন; দুই-ই লঙ্ঘন করেছে এমন মন্তব্যও করেছেন নেটিজেনরা। এ বিষয়ে গতকাল সোমবার রংপুর সিআইডির পুলিশ সুপার ই–মেইলযোগে ব্যাখ্যা পাঠিয়েছেন। মিডিয়ায় নারী ও শিশু উপস্থাপনের বিষয়ে সিআইডির এই পুলিশ সুপার বলেন, ‘আমি নারী ও শিশু অধিকার বিষয়ে সচেতন হয়ে নারীকে সম্মানিত করে সোফায় বসতে দিয়েছি। ভদ্র ও শালীন আচরণ করেছি, শিশুকে বিস্কুট ও অন্যান্য খাবার খাইয়ে শিশু অধিকার ও আচরণ সম্পর্কে সতর্ক থেকেছি। যাকে খুশি তাকে যে কেউ বিবাহ করতে পারে। এ নিয়ে আমার কোনো মত নাই, আমি শুধু সমাজের কথা বলেছি।’
পুলিশের জঞ্জাল পরিষ্কার করতে চাই: আইজিপি
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
বিভাগ: রাষ্ট্রীয় বাহিনী
পুলিশ সদস্যরা যাতে ‘জনগণের পুলিশ’ হয়ে উঠতে পারেন, সেজন্য প্রশিক্ষণ পর্ব থেকেই তাদের সেভাবে গড়ে তোলার ওপর জোর দিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ।
পুলিশে ‘পরিবর্তনের সূচনা হয়েছে’ মন্তব্য করে তিনি বলেছেন, “জনগণের সাথে দুর্ব্যবহারকারী এবং দুর্নীতিবাজকে পুলিশ হিসাবে দেখতে চাই না। আমরা পুলিশে জঞ্জাল পরিষ্কার করতে চাই। আমরা ভালো পুলিশ চাই। বাংলাদেশ পুলিশকে জনগণের পুলিশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।”
সোমবার বিকালে সারদা পুলিশ একাডেমিতে রাজশাহীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও প্রশিক্ষকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় মহাপরিদর্শকের এ বক্তব্য আসে বলে সদর দপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
বেনজীর আহমেদ বলেন, “আমরা কোয়ালিটি পুলিশ চাই, কোয়ালিটি সার্ভিস চাই। কোয়ালিটি পুলিশ তৈরির দায়িত্ব পুলিশের ট্রেনিং সেন্টারের। এক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা রয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমীর। সৎ, যোগ্য এবং আদর্শ পুলিশ অফিসার ও ফোর্স তৈরির যোগ্যস্থান পুলিশ একাডেমী।
নিয়মের ‘গ্যাঁড়াকলে’ পিটুনি খেল পুলিশ!
কালের কন্ঠ
বিভাগ: রাষ্ট্রীয় বাহিনী
কোনো অভিযান চালালে ভিডিও রেকর্ডিং করে রাখতে হবে- এমন নিয়মই চলছে পুলিশে। বলা হচ্ছে, পুলিশকে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মধ্যে রাখতে এ ধরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দেশের কোথাও কোথাও পুলিশকে গোপন ক্যামেরা দেওয়ার খবরও রয়েছে। এ ধরণের নির্দেশনা নিয়ে মাঠ পর্যায়ের পুলিশের মাঝে ক্ষোভও রয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক না থাকলে বিব্রত হওয়ার পাশাপাশি জবাবদিহিতার করতে হয় বলে অনেকে অভিযান পরিচালনাও কমিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু অভিযানের ভিডিও ধারণ নিয়ে মুখ ফুটে কেউ কিছু বলতে চাইছেন না।
নিয়মের ‘গ্যাঁড়াকলে’ পড়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে পিটুনি শিকার হতে হয়েছে পুলিশকে। মাদকের বড় চালানসহ আসামি ধরার পর তাৎক্ষণিক থানায় না নিয়ে অভিযানের ভিডিও করার প্রস্তুতি নেয়া হলে পুলিশের ওপর হামলা হয়। ভিডিও করার সুযোগে ঘটনা জেনে ওই মাদক ব্যবসায়ীর স্বজনরা ছুটে এসে দুই পুলিশকে পিটিয়ে আহত করে। এর মধ্যে একজন রক্তাক্ত জখম হন। আহত দুই পুলিশ হলেন আশুগঞ্জ থানার সহকারি উপ-পরিদর্শক (এমসআই) মো. ইকবাল হোসেন ও কনস্টেবল মো. সোহানুর রহমান। ওই দুইজনই আশুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন। কাঠের রোলের আঘাতে সোহানুর রহমান রক্তাক্ত জখম হন। অবশ্য পুলিশ মো. জামাল মিয়া প্রকাশ বুজা জামাল (৪২) নামে ওই মাদক ব্যবসায়ীকে থানায় আনতে সক্ষম হন।
করোনাযোদ্ধা পুলিশ : বছরজুড়ে আক্রান্ত ১৮ হাজার, মৃত্যু ৮২
জাগো নিউজ
বিভাগ: রাষ্ট্রীয় বাহিনী
করোনা মহামারির সময় পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনেক পুলিশ সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। রোববার (২৭ ডিসেম্বর) পর্যন্ত ডিএমপিসহ দেশের বিভিন্ন ইউনিটে লকডাউনসহ বিভিন্ন সময় নিরাপত্তা দিতে গিয়ে পুলিশের বিভিন্ন পদ মর্যাদার ১৮ হাজার ৮১১ জন সদস্য করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন ৮২ জন। এখনো চিকিৎসাধীন আছেন ৩১৭ জন। মোট আক্রান্ত ১৮ হাজার ৮১১ জনের মধ্যে অতিরিক্ত আইজিপি ৬ জন, ডিআইজি ১০ জন, অতিরিক্ত ডিআইজি ১৯ জন, পুলিশ সুপার ১১২ জন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ১৮৭ জন, সহকারী পুলিশ সুপার ২২৮ জন, ইন্সপেক্টর ৯৫৭ জন, এসআই ৩ হাজার ৭ জন, এএসআই ২ হাজার ৮৩৫ জন, নায়েক ৫৫০ জন, কনস্টেবল ৮ হাজার ৮২৩, অন্যান্য ২ হাজার ৭৭ জন।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় লকডাউন, পরিষ্কার-পরিছন্ন ও সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিজে আক্রান্ত হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মোট ৩ হাজার ১৭৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৩ হাজার ১১১ জন। এতে মারা গেছে ২৫ জন। এছাড়া এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ৪২ জন।
আনসার কর্মকর্তার মৃত্যু
হত্যা না আত্মহত্যা তিন দিনেও জানতে পারেনি পুলিশ
কালের কন্ঠ
বিভাগ: রাষ্ট্রীয় বাহিনী
আনসার কর্মকর্তা রোমানা ইয়াসমিন আত্মহত্যা করেছেন নাকি তাঁকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে তা তিন দিনেও জানতে পারেনি পুলিশ। পরিবারও এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু বলতে পারছে না। গত শুক্রবার রাতে রাজধানীর আজিমপুরে স্টাফ কোয়ার্টারের বাসা থেকে রোমানার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানায়, গতকাল সোমবার পর্যন্ত রোমানার পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো মামলা করা হয়নি। পুলিশ একটি অপমৃত্যু মামলা করেছে। লালবাগ থানার ওসি কে এম আশরাফ উদ্দিন জানান, মৃত্যুর সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি। আমরা ময়না তদন্ত প্রতিবেদনের অপেক্ষা করছি।
৩৭তম বিসিএসের আনসার কর্মকর্তা রোমানার বাড়ি বগুড়া জেলার কাহালু উপজেলায়। গাজীপুরের সফিপুরে আনসার একাডেমিতে সহকারী পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি। মৃত্যুর আগে প্রশিক্ষণের জন্য তিনি ঢাকায় এসে লালবাগের কোয়ার্টারে ওঠেন।
সাংবাদিকের ফোন কেড়ে নিয়ে আ.লীগ কর্মীকে দিলেন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা
প্রথম আলো
বিভাগ: গণমাধ্যম
ভোটকেন্দ্রের ভেতর দাঁড়িয়ে অনিয়ম ও কারচুপির ঘটনা প্রত্যক্ষ করছিলেন প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক জহির রায়হান। একপর্যায়ে নিজের মুঠোফোনে কিছু ছবিও তোলেন। জহির ছবি তুলেছেন দেখে ক্ষিপ্ত হন ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আজিজুল হক। তিনি (জহির রায়হান) কেন কেন্দ্রের ভেতর ঢুকলেন, কার অনুমতি নিয়েছেন, কেন ছবি তুলছেন—এমন প্রশ্নে জর্জরিত করেন সাংবাদিককে। একপর্যায়ে জোর করে জহিরের মুঠোফোন নিয়ে নিতে উদ্যত হন তিনি। গায়েও হাত তোলেন। হাতাহাতির একপর্যায়ে জহিরের ডান হাত রক্তাক্ত হয়। তখন মুঠোফোনটি আর নিজের কাছে রাখতে পারেননি তিনি। প্রিসাইডিং কর্মকর্তা সেটি নিয়ে ওই কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক কর্মীর হাতে দেন। ওই কর্মী তখন মুঠোফোন থেকে সব ছবি মুছে (ডিলিট) দেন। এরপর প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মুঠোফোনটি তুলে দেন একজন পুলিশ কর্মকর্তার হাতে। এই ঘটনা দুপুর ১২টার দিকের। ঘটনাস্থল ঢাকার ধামরাই পৌরসভার হুজেরিটোলা এলাকার কলেজিয়েট স্কুল। রক্তাক্ত জহিরকে সেখান থেকে হাসপাতালে নিয়ে যান প্রথম আলোর সাভারের নিজস্ব প্রতিবেদক অরূপ রায়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর জহির ধামরাইয়ে অবস্থান করছেন। পুলিশের কাছ থেকে মুঠোফোনটিও ফেরত পেয়েছেন।
আপনার মতামত জানানঃ