আনুমানিক ৫০ লাখ শিশু তাদের পাঁচ বছর পূর্ণ করার আগেই মৃত্যুবরণ করছে ২০২১ সালে। সেই হিসাবে সাড়ে চার সেকেন্ডে এক শিশুর মৃত্যু হয়। ২০২১ সালে ৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী আরও ২১ লাখ মানুষ মারা গেছে।
গত বুধবার জাতিসংঘের ইন্টার এজেন্সি গ্রুপ ফর চাইল্ড মরটালিটি এস্টিমেশন এক রিপোর্টে এই তথ্য জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, একই সময়ের মধ্যে ১৯ লাখ শিশু মৃত অবস্থায় জন্মগ্রহণ করেছে। এসব মৃত্যুর অনেকগুলো ন্যায়সঙ্গত চিকিৎসা এবং মা, নবজাতক, কিশোরী ও শিশুদের জন্য উচ্চমানের স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে প্রতিরোধ করা যেত।
ইউনিসেফের প্ল্যানিং অ্যান্ড মনিটরিং বিভাগের ডেটা অ্যানালিটিক্স ডিরেক্টর বিদ্যা গণেশ বলেছেন, প্রতিদিন অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের হারানোর মানসিক আঘাতের সম্মুখীন হচ্ছেন। কখনো কখনো প্রথম নিঃশ্বাসের আগেই মারা যাচ্ছে শিশুরা।
এ ধরনের ব্যাপক, প্রতিরোধযোগ্য ট্র্যাজেডি কখনই অনিবার্য হিসেবে গ্রহণ করা উচিত নয়। প্রতিটি নারী ও শিশুর জন্য প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে সুদৃঢ় রাজনৈতিক ইচ্ছা এবং লক্ষ্যভিত্তিক বিনিয়োগের মাধ্যমে অগ্রগতি সম্ভব।
রাখুনগ্লোবাল ডিরেক্টর ফর হেলথ হুয়ান পাবলো উরিবে বলেন, এই সংখ্যার পিছনে রয়েছে লক্ষ লক্ষ শিশু এবং পরিবার যারা তাদের স্বাস্থ্যসেবার মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা এবং অব্যাহত অর্থায়নের জন্য আমাদের রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং নেতৃত্বের প্রয়োজন৷
গর্ভাবস্থায় এবং জন্মের সময় নারীরা মানসম্মত যত্ন পেলে এই সংখ্যা অবশ্যই প্রতিরোধ করা যেতে পারে। সংক্রামক রোগ যেমন নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া এবং ম্যালেরিয়া প্রথম ২৮ দিন বেঁচে থাকা শিশুদের জন্য সবচেয়ে বড় ঝুঁকি। এই চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্য পরিষেবা ত্বরান্বিত করার প্রয়োজন রয়েছে।
রিপোর্টে ২০০০ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী সব বয়সী মানুষের মৃত্যুর ঝুঁকি কমে আসাসহ কিছু ইতিবাচক ফলাফলের কথাও জানানো হয়েছে।
শতাব্দীর শুরু থেকে বিশ্বব্যাপী পাঁচ বছরের কম বয়সী মৃত্যুর হার ৫০ শতাংশ কমেছে, যেখানে আরেকটু বেশি বয়সী শিশু এবং যুবকদের মৃত্যুর হার ৩৬ শতাংশ কমেছে বলেও উল্লেখ করা হয়। মৃত শিশু জন্মের হার ৩৫ শতাংশ কমেছে। নারী, শিশু এবং যুবক-যুবতীদের সুবিধার্থে প্রাথমিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার জন্য আরও বেশি বিনিয়োগের জন্য এমন হতে পারে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।
ইউনিসেফ জানায়, ২০১০ সাল থেকে এই হার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে এবং ৫৪টি দেশ পাঁচ বছরের কম বয়সী মৃত্যুর জন্য টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে ব্যর্থ হবে। স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নতির জন্য দ্রুত পদক্ষেপ না নেয়া হলে ২০৩০ সালের আগে প্রায় ৫ কোটি ৯০ লাখ শিশু এবং তরুণ মারা যাবে এবং প্রায় ১ কোটি ৬০ লাখ শিশু মৃত প্রসব হতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে।
এসডব্লিউ/এসএস/১৬৩৫
আপনার মতামত জানানঃ