মহাবিশ্বে ‘এলিয়েন’ বা বহির্জাগতিক প্রাণের অস্তিত্ব নিয়ে জল্পনা-কল্পনা আছে। বিভিন্ন সময় অনেক রহস্যময় সংকেত পাওয়ার দাবিও করেন বিজ্ঞানীরা। মহাশূন্যে বেশ কয়েকবার অদ্ভুত যানও নাকি দেখা গেছে।
তবে সভ্যতার সামনে এ নিয়ে অকাট্য প্রমাণ কেউ হাজির করতে পারেনি। এবার সেই জল্পনার পালে হাওয়া দিয়েছেন আলবার্টো ক্যাবেলারো নামে আরেক গবেষক। তিনি স্পেনের ইউনিভার্সিটি অব ভিগোর পিএইচডির শিক্ষার্থী।
তরুণ এই গবেষক দাবি করেছেন, মিল্কিওয়েতে অর্থাৎ যে ছায়াপথে পৃথিবী অবস্থিত, তাতে চারটি ‘হিংসুটে’ বহির্জাগতিক সভ্যতার বসতি আছে।
অত্যন্ত ‘বিদ্বেষপরায়ণ’ এই এলিয়েনরা কোনো কারণে ক্ষেপে গেলে আমাদের গ্রহে আক্রমণ করতে পারে। নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে মানুষসহ সব প্রাণের অস্তিত্ব। এ জন্য তিনি বিজ্ঞানীদের বহির্জগতে সংকেত বা বার্তা পাঠানোর বিষয়ে সতর্ক করেছেন।
আলবার্টো গত ৫০ বছরে এক দেশের ওপর আরেক দেশের আগ্রাসন ও এর গতিপ্রকৃতি নিয়ে গবেষণা করছেন। তিনি তাঁর গবেষণার তথ্য-উপাত্ত ব্যবহার করে বহির্গ্রহে থাকা কথিত প্রাণের আগ্রাসনের সম্ভাব্যতা মূল্যায়ন করতে চেয়েছেন।
গবেষণায় তিনি ১৯৭৭ সালে রেডিও তরঙ্গের মাধ্যমে শনাক্ত হওয়া ‘ওয়াও সিগন্যাল’ এর রহস্য উন্মোচনের দাবি করেছেন।
তিনি বলেছেন, ওই সিগন্যাল ছিল রেডিও এনার্জির বিস্ফোরণ। সেই বিস্ফোরণ ঘটেছিল পৃথিবী থেকে প্রায় এক হাজার ৮০০ আলোকবর্ষ দূরে সূর্যের মতো বড় একটি নক্ষত্রে। ওই তরঙ্গ প্রথম শনাক্ত করে ৬০ বছর আগে থেকে বহির্জাগতিক প্রাণ নিয়ে গবেষণায় লিপ্ত থাকা ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটির দূরবীক্ষণ যন্ত্র দ্য বিগ ইয়ার।
তিনি দাবি করেছেন, এলিয়েনের আগ্রাসনে পৃথিবীর অবস্থা হতে পারে সাড়ে ছয় কোটি বছর আগে দৈত্যকায় গ্রহাণুর আঘাতে এই গ্রহে প্রাণের গণবিলুপ্তির মতো। এই হামলা হতে পারে প্রতি ১০ কোটি বছরে একবার। তবে তার নিবন্ধের পিয়ার রিভিউ বা অন্য গবেষকের মাধ্যমে মূল্যায়ন হয়নি।
২০১৭ সালে এই সংক্রান্ত এক গবেষণার উদ্দেশ্য ছিল, আনআইডেন্টিফাডেয় ফ্লাইং অবজেক্ট (ইউএফও) বা ভিন গ্রহের প্রাণীদের মহাকাশ যানের অস্তিত্ব রয়েছে কিনা খুঁজে দেখা। সংবাদমাধ্যম সিএনএন-কে এক সাক্ষাত্কারে এই গবেষণার নেতৃত্বে থাকা এক প্রাক্তন পেন্টাগন অফিসার বলেন, ‘‘তার বিশ্বাস এমন প্রমাণ রয়েছে যা থেকে বলা যায়, এই পৃথিবীতে ভিন গ্রহের প্রাণীরা আসতে পারে।’’
এদিকে সম্প্রতি, ব্রিটেনের প্রথম মহাকাশচারী হেলেন শরমন দাবি করছেন, পৃথিবীতেই আমাদের মাঝে হয়তো রয়েছে এলিয়নরা।
হেলেন ১৯৯১ সালে সোভিয়েত মির স্পেস স্টেশনে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, “মহাবিশ্বে কোটি কোটি গ্রহ তারা রয়েছে। সেখানে কোথাও অন্য কোনও রূপে প্রাণ থাকতে পারে। হতে পারে সেই প্রাণীরা আমার আপনার মতো কার্বন, নাইট্রোজেনদিয়েই তৈরি, আবার অন্য কোনও রকমও হতে পারে।”
তবে এর পর হেলেন যা বলেন তা চমকে দেওয়ার মতো। হেলেন বলেন, “এমনও হতে পারে আমাদের মধ্যেই ভিন গ্রহের প্রাণীরা রয়েছে। অথচ আমরা তাদের দেখতে পাই না।”
১৯৯১ সালে রসায়নবিদ হেলেন মাত্র ২৭ বছর বয়সে স্পেস মিশনে গিয়েছিলেন। কম বয়সে মহাকাশে যাওয়া নভশ্চরদের মধ্যে তিনি অন্যতম।
এসডব্লিউ/এসএস/১২৫৫
আপনার মতামত জানানঃ