নজিরবিহীন এক ঘটনা দেখল দেশের বিচারাঙ্গন। গত শনিবার রাতে একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দুই শিশুর মানবাধিকার ও মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন নিয়ে চলছিল আলোচনা। এটি নজরে আসার পর মধ্যরাতে আদালত বসিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত আদেশ দিয়ে সাবেক এক অ্যাটর্নি জেনারেলের দুই নাতিকে বাসায় পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিল হাইকোর্ট। বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো. জাকির হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ গত শনিবার রাত ১২টার দিকে এ আদেশ ও রুল দেয়। এ আদেশের পর পুলিশ দুই শিশুকে ধানমন্ডির বাসায় পৌঁছে দেয় এবং তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে।’
১৯৯৬ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ব্যারিস্টার কে এস নবী (কাজী শহীদুন নবী)। ২০১৮ সালের ৮ জুলাই মৃত্যুবরণ করেন তিনি। ধানম-ির ওই বাড়ির মালিক ছিলেন কে এস নবী। তার দুই ছেলের মধ্যে বড় ছেলে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কাজী রেহান নবী। গত ১০ আগস্ট ছোট ছেলে কাজী সিরাতুন নবী মারা যান। শনিবার রাত ১১টার পর ওই বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে শিশু অধিকার নিয়ে টকশো চলাকালে সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল কে এস নবীর দুই নাতিকে ধানমন্ডির বাসায় ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না বলে আলোচনা ওঠে। ওই টকশোতে আলোচনায় ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। দেশ রূপান্তরকে তিনি বলেন, ‘সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেলের দুই নাতি এবং তাদের এক ফুফু এ সময় টকশোতে সংযুক্ত ছিলেন। অভিযোগ ওঠে, বাসায় শিশু দুটির অধিকার থাকা সত্ত্বেও তাদের চাচা (কাজী রেহান নবী) তাদের বাসায় ঢুকতে দিচ্ছেন না। শিশু দুটির বাবা কাজী সিরাতুন নবী কিছুদিন আগে মারা গেছেন। উত্তরাধিকার এবং পৈতৃক সূত্রে ওই বাসায় শিশু দুটির থাকার অধিকার রয়েছে। কিন্তু শিশুদের বাসায় ঢুকতে না দেওয়া মানবাধিকার ও মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন।অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘সম্ভবত বিচারপতিগণ টকশোতে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছিলেন। এরপর জানতে পারি রাত ১২টার দিকে বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ ধানমন্ডি থানাকে ওই বাসায় শিশু দুটির থাকার ব্যবস্থা করতে তাৎক্ষণিক নির্দেশ দেয়। একই সঙ্গে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ রুল জারি করে হাইকোর্ট। এরপর সুপ্রিম কোর্ট থেকে ধানমন্ডি থানায় যোগাযোগ করে হাইকোর্টের আদেশটির বিষয়ে অবহিত করা হয়। রাতেই শিশু দুটির ওই বাসায় থাকার ব্যবস্থা এবং নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে পুলিশ।’ এদিকে গতকাল রবিবার একই আদালতে এ বিষয়ে আদেশের অগ্রগতি প্রতিবেদন হলফনামা আকারে দাখিল করা হয়েছে। আগামী ১১ অক্টোবর উভয়পক্ষকে (দুই শিশুসহ) ভার্চুয়ালি হাজির হতে বলেছে আদালত। একই সঙ্গে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত দুই শিশুকে নিরাপত্তা দিতে বলা হয়েছে পুলিশকে।
আপনার মতামত জানানঃ
![Donate](https://statewatch.net/wp-content/uploads/2021/06/xcard.jpg.pagespeed.ic.qcUrAxHADa.jpg)
আপনার মতামত জানানঃ