রাশিয়া সমঝোতায় না গিয়ে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর চীন পড়েছে দোটানায়। ইউরোপে যুদ্ধ চায় না চীন। একই সঙ্গে মস্কোর সঙ্গে সামরিক ও কৌশলগত সম্পর্ক আরও জোরদারের চেষ্টা চালাচ্ছে বেইজিং।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পূর্ব ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের ঘোষণা দেয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে মস্কো ও বেইজিংকে উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য দায়ী করেছে ওয়াশিংটন। স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র নেড প্রাইসের অভিযোগ, শীতকালীন অলিম্পিক ঘিরে বেইজিং সফরে পুতিনকে বোঝাতে পারতেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি চিন পিং।
এটা সত্য রাশিয়ার সঙ্গে চীনের গভীর কূটনীতিক ছাপ দেখা গেছে শীতকালীন অলিম্পিকে। বেশ কয়েকজন বিশ্বনেতার পাশাপাশি প্রেসিডেন্ট পুতিন আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন। অলিম্পিক শেষ হওয়ার পর পরই পূর্ব ইউক্রেনের দুটি বিদ্রোহী অধ্যুষিত অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্রের মর্যাদা দেয় রাশিয়া। সেখানে সেনাও পাঠান পুতিন।
যদিও শুরু থেকেই বিবাদমানদের সংকট নিরসনের আহ্বান জানিয়ে আসছে চীন। সবশেষ চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই এই বিষয়ে আলোচনা করেন আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে। ব্লিঙ্কেনকে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাচ্ছে। সব পক্ষকে সংযম দেখাতে হবে।’
ইউক্রেনের দুটি অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয়ার পর বিভিন্ন দেশ রাশিয়ায় নিষেধাজ্ঞা দিলেও চুপচাপ ছিল চীন। কারণ তারা বুঝতে পেরেছিল, তাইওয়ান ইস্যুতেও তারা একই প্রশ্নের মুখে পড়বে। সংকট নিরসনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ উত্তম উপায় নয় বলে শুরু থেকেই বলে আসছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
কিন্তু যদি চীনা নাগরিকরা ইউক্রেনে হামলার জন্য রাশিয়ার পক্ষে অবস্থান নেয়া শুরু করে এবং নিজেদের দেশে তা প্রয়োগ শুরু করে, তবে চীন সরকারের এসব বিবৃতি কাজে আসবে না।
ইউক্রেনে হামলার পক্ষে রুশ প্রেসিডেন্টের যুক্তি হচ্ছে, ইউক্রেনের রুশ ভাষাভাষীদের মুক্ত করছেন তিনি। এই বক্তব্যের পক্ষে গেলেও বিপদে পড়বে চীন। তিব্বত ও উইঘুরদের স্বাধীনতা কিংবা স্বায়ত্তশাসন দেয়ার বিষয়েও তাদের নতুন করে ভাবতে হবে।
কী বলছেন সাধারণ চীনারা
টুইটারের চীনা সংস্করণ ওয়েইবোতে চীন সরকারের একটি অ্যাকাউন্ট আছে। ইউক্রেন ইস্যুতে নাগরিকদের মতামত গুরুত্বসহকারে দেখছে বেইজিং। সেখানে দেখা গেছে দেশটির জাতীয়তাবাদীরা রুশ অভিযানকে সমর্থন জানাচ্ছে। তারা বলছে, এখনই সুযোগ তাইওয়ানকে নিজেদের সঙ্গে যুক্ত করে নেয়ার।
একজন লিখেছেন, ‘ পুতিন দুর্দান্ত’। অন্য একজন লিখেছেন, ‘ আমি রাশিয়াকে সমর্থন করি।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘আমেরিকা সব সময় ঝামেলা বাধাতে চায়।’
অনেকে শান্তির ওপর জোর দিলেও কিছু মানুষ ইউক্রেনের পক্ষে অবস্থান জানাচ্ছেন। একজন লিখেছেন, ‘আমি বুঝতে পারছি না কেন এত মানুষ রাশিয়াকে সমর্থন জানাচ্ছে। আগ্রাসন কি বৈধ? আমাদের সব ধরনের যুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে হবে।’
অন্য একজন লিখেছেন, ‘ইউক্রেনের দুটি অঞ্চলকে স্বাধীনতার মর্যাদা দিয়ে অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেছে রাশিয়া।’
চীন কি রাশিয়ার পাশে দাঁড়াবে?
পশ্চিমাদের সঙ্গে দূরত্বের মধ্যে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার হয়েছে মস্কোর। ইউক্রেন সংকট শুরুর আগেই বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে মস্কোর পাশে থাকার বিষয়ে আশ্বস্ত করা হয়েছিল। এখন পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার মুখেও রাশিয়ার জন্য সুর চড়া করেনি বেইজিং।
যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ পূর্ব ইউক্রেনের রুশপন্থী বিদ্রোহীদের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে ‘স্বাধীন প্রজাতন্ত্র’ হিসেবে পুতিনের স্বীকৃতির নিন্দা জানালেও চীন এ বিষয়ে চুপ। বলেছে, ইউক্রেন সংকট নিরসনে কূটনৈতিক সমাধানকে স্বাগত জানাবে বেইজিং।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ইউক্রেন আগ্রাসনে বেইজিং থেকে কূটনৈতিক সমর্থন পাচ্ছে মস্কো। পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার মুখে অর্থনৈতিকভাবে চীনা সমর্থন পেতে পারে মস্কো। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মস্কোকে সামরিক সহায়তা দেওয়া থেকে দূরে থাকবে বেইজিং।
যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক উষ্ণ নয়। বেইজিংয়ে শীতকালীন অলিম্পিক কূটনৈতিকভাবে বয়কট করেছে বেশ কয়েকটি দেশ। এর মধ্যে উদ্বোধনীতে ৪ ফেব্রুয়ারি চীন সফরে যান পুতিন। সেখানে চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে বসে তিনি ঘোষণা দেন, দুই দেশের কৌশলগত অংশীদারত্বের গভীরতায় ‘কোনো সীমা থাকবে না’। চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমগুলো বলছে, বিশ্বে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় চীন-রাশিয়া কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবে।
ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের কারণে নতুন এক পরীক্ষার মুখে পড়েছে চীন। রাশিয়াকে সমর্থন করে তারা যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছে, বাস্তবে তা কতটা কার্যকর করা সম্ভব, তা এখন দেখার বিষয়। বিশেষ করে অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার পররাষ্ট্রনীতির কথা বলে বারবার বলে আসছে চীন।
রেনমিন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক সি ইয়িংহং বলেন, যদিও আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে তারা একটি জোট, জোটে নিজেদের সুসম্পর্ক আগের চেয়ে ছাড়িয়ে গেছে, তবু আনুষ্ঠানিক জোট গঠন থেকে অনেকটা তফাতে আছে তারা। অর্থাৎ একজন আক্রান্ত হলে অপরজন সেনা ও সামরিক সহায়তা পাঠাবে, এমন জোট তারা এখনো হয়নি।’
চীন আগে থেকেই সংলাপের মাধ্যমে ইউক্রেন সংকটের সমাধানের আহ্বান জানিয়ে আসছে। সিঙ্গাপুরের এস রাজারত্নম স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের সহযোগী অধ্যাপক লি মিংজিয়াং বলেন, তাইওয়ানের সঙ্গে যুদ্ধে চীন যেমন রাশিয়ার কাছ থেকে সামরিক সহায়তা প্রত্যাশা করে না, রাশিয়ার চাওয়াও ঠিক তেমন। ইউক্রেন আগ্রাসনে চীনের কাছে রাশিয়ার কোনো সামরিক সহায়তা প্রত্যাশা নেই।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাশিয়ার সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়াতে পারে চীন। পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেও চীন তেমন প্রভাব পড়তে দেবে না।
চীনের লাভ ক্ষতি
ইউক্রেনের এক নম্বর ব্যবসায়িক অংশীদার হলো চীন। বেইজিং তাই আদর্শিকভাবে কিয়েভের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চায়। তবে এটি বজায় রাখা কঠিন। কারণ চীনের অন্যতম মিত্র রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালিয়েছে।
ইউক্রেনে রুশ অভিযানকে সমর্থন দেয়া হলে পশ্চিম ইউরোপ থেকে নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে চীনের ওপর। এ ছাড়া চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার পক্ষে না। তাইওয়ান ও হংকং ইস্যুতে তারা এই নীতি ফলাও করে প্রচার করেছিল।
ইউক্রেন সংকট ঘিরে তাই বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে চীন। মস্কো ও কিয়েভের সঙ্গে বেইজিংয়ের সম্পর্ক দারুণ। এই অবস্থায় আরেক পরাশক্তি চীন কার পক্ষে যাবে, তা নিয়ে চলছে জল্পনা।
ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও তার ইউরোপীয় মিত্রদেশগুলোর বিরোধে তাই হয়তো কৌশলগত অবস্থান নিয়েছে চীন। ইউক্রেন সংকট শুরুর পর ধেকেই রাশিয়ার সঙ্গে চিনের সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ মিত্র হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।
যদিও বিপরীত মতের বিশ্লেষকরা বলছেন, চীন এই ইস্যুতে তার ‘উত্তর-প্রতিবেশী’ রাষ্ট্রদের ‘সমর্থনমূলক শব্দের’ চেয়ে বেশি কিছু দেবে না। বড়জোর দেশ দুটির মধ্যে বিদ্যমান কূটনৈতিক এবং সামরিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হতে পারে। সামগ্রিক অর্থনৈতিক সম্পর্কের ব্যাপারে অনেক বেশি জটিল অবস্থানে থাকায় এই ক্ষেত্রে চীনকে নাও পেতে পারে রাশিয়া।
রাশিয়া বাণিজ্যের জন্য চীনের ওপর গভীরভাবে নির্ভর করে, অন্যভাবে নয়। তবে চীনা অর্থনীতি এরইমধ্যে একটি নড়বড়ে অবস্থানে রয়েছে। তারপরেও কেবল একটি সামরিক সঙ্কটের ঘটনা শি জিংপিংকে তার দেশের ভাগ্য মস্কোর সাথে বেঁধে রাখতে খুব বেশি উৎসাহ দেয় না।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা এবং ২০২০ সালের চীনা কাস্টমস ডেটার পরিসংখ্যান বলছে, চীন হলো রাশিয়ার ১ নম্বর বাণিজ্য অংশীদার। রাশিয়ার বৈদেশিক বাণিজ্যের ১৬ শতাংশই চীনের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু চীনের জন্য ওরাশিয়া অনেক কম গুরুত্বপূর্ণ। দুই দেশের বাণিজ্যের মধ্যে চীনের মোট বাণিজ্যের পরিমাণের মাত্র ২ শতাংশ। এখানে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনেক বড় শেয়ার রয়েছে।
হিনরিখ ফাউন্ডেশনের গবেষণা ফেলো অ্যালেক্স ক্যাপ্রি বলেছেন, ইউক্রেন নিয়ে ন্যাটো এবং রাশিয়ার মধ্যে সংঘাতের দিকে যাওয়ার ব্যাপারে বেইজিংকে খুব সতর্ক হতে হবে। ইউক্রেনে আগ্রাসন ভবিষ্যতে ‘বৈশ্বিক নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক ঝুঁকি’ তৈরি করবে যা চীনকেও ক্ষতি করতে পারে। এ নিয়ে গত মাসে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বেইজিংকে সতর্কও করেছিলেন।
রাশিয়া যাতে ইউক্রেন হামলা না করে— এমনটিই প্রত্যাশা করছিল চীন। অধ্যাপক সেই ইনহং বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে বিশ্বে যেভাবে মেরুকরণ ঘটেছে, তাতে রাশিয়ার সঙ্গে চীনকেও বিচ্ছিন্ন কিংবা নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রাখতে পারে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো।
ইউক্রেন সংকটে কোনো অর্থনৈতিক দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়তে চায় না চীন। বিশেষভাবে, প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং এখন তার ক্ষমতার নজিরবিহীন তৃতীয় মেয়াদ নিশ্চিত করতেই ব্যস্ত। তিনি স্থিতিশীলতাকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন।
চীন এই সংকটের শান্তিপূর্ণ সুরাহা চাইলেও তাতে কান দিচ্ছেন না পুতিন। এখানে কোনো মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা সফল হওয়ার নিশ্চয়তা নিয়েও সন্দেহ দেখা দিয়েছে।
গত সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে ‘শান্তিরক্ষায়’ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। পরদিন মঙ্গলবার যুক্তরাজ্য রাশিয়ার পাঁচটি ব্যাংক এবং পুতিন-ঘনিষ্ঠ তিন ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। এর কয়েক ঘণ্টা পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রাশিয়ার দুটি ব্যাংক এবং পাঁচ ধনকুবেরের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেন। রাশিয়ার ২৭ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞায় পড়ছে। নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসছেন দেশটির ৩৫১ জন এমপিও। জার্মানি রাশিয়া থেকে গ্যাস নেওয়ার জন্য চলমান নর্ড স্ট্রিম ২ গ্যাস পাইপলাইন প্রকল্প স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়েছে। কানাডা ও জাপানও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
চলতি মাসের শুরুর দিকে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেছিলেন, ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের ঘটনায় মস্কোর ওপর কোনো রপ্তানি–নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলে যদি চীন তা অগ্রাহ্য করে, তাহলে চীনা কোম্পানিগুলোকে পরিণতি ভোগ করতে হবে।
একই সুরে কথা বলেছেন অধ্যাপক সি ইয়িংহং–ও। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে বিশ্বে যেভাবে মেরুকরণ ঘটেছে, তাতে রাশিয়ার সঙ্গে চীনকেও বিচ্ছিন্ন কিংবা নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রাখতে পারে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো।
এসডব্লিউ/এসএস/১৪২০
আপনার মতামত জানানঃ