পৃথিবীর বাইরে কি কোনও জীবন রয়েছে? বিজ্ঞানীরা ভিনগ্রহে জীবনের অনুসন্ধান করেই চলেছেন নিরন্তর। সেজন্য মানুষ মঙ্গল গ্রহে নিয়ে গিয়েছে তাদের অনুসন্ধান প্রক্রিয়া।
পৃথিবী থেকেই গবেষণায় নতুন আবিষ্কার একটি নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে। লাল গ্রহে কিউরিওসিটি রোভার ট্রন্ডলিং করে দেখা মিলেছে নতুন সম্ভাবনার।
সম্প্রতি কিউরিওসিটি রোভার যে ইঙ্গিত দিল তাতে অনেকে এবার বলতে পারেন, পৃথিবী থেকে বেশি দূরে নয়, আমাদের এই সৌরপরিবারেই রয়েছে আরও প্রাণের অস্তিত্ব।
আসলে এটা কেবলই একটা শুরু, একটা সম্ভাবনা। সেই ২০১২ সালে মঙ্গলে পা রেখেছে কিউরিওসিটি। সম্প্রতি কিছু নমুনা পাওয়া গেছে যেগুলো এক ধরনের কার্বন সমৃদ্ধ, যা পৃথিবীতে জৈবিক প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত।
ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস জার্নালে প্রসিডিংস অফ দ্য প্রোসিডিংস-এ প্রকাশিত হয়েছে একটি গবেষণা রিপোর্ট। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে অস্বাভাবিক কার্বন সংকেতগুলির শনাক্ত করার কথা।
যদিও গবেষকরা জানান, আমরা মঙ্গল গ্রহে এমন কিছু খুঁজে পাচ্ছি যেগুলি আকর্ষণীয়, তবে আমরা জীবনকে চিহ্নিত করেছি তা বলার জন্য আদর্শ প্রমাণ নয়। মঙ্গলে জীবন আছে এমন সিদ্ধান্তে না পৌঁছানো গেলেও এ আপডেট বহু আকাঙ্ক্ষিত।
গবেষকরাও বলছেন, মঙ্গলে যে প্রাণ আছে এখনই তা বলা যাচ্ছে না। তবে প্রশ্ন উঠছে কার্বনসমৃদ্ধ যে নমুনা পাওয়া গেছে তা যদি জীবনের ইঙ্গিত না হয় তবে সেটা কী?
বিজ্ঞানীরা আবার এ বিষয়টাও মাথায় রাখছেন যে, পৃথিবী ও মঙ্গল গ্রহ এতই আলাদা যে পৃথিবীর উদাহরণের ওপর ভিত্তি করে সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না।
যে বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে কার্বনসমৃদ্ধ ওই নমুনা থেকে জীবনের সন্ধান পাওয়ার আশা করা হচ্ছে তা হলো ওই নমুনা হতে পারে প্রাচীন ব্যাকটেরিয়া জড়িত একটি অনন্য কার্বনের নমুনা।
পৃথিবীর জীবন দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে বিজ্ঞানীরা বলেন, প্রাচীন ব্যাকটেরিয়া জড়িত একটি অনন্য কার্বনের নমুনা। এই নমুনা বায়ুমণ্ডলে মিথেন ছেড়ে দেয়। যেখানে অতিবেগুনী আলো সেই গ্যাসটিকে আরও বড়, আরও জটিল অণুতে রূপান্তরিত করে। এই অণুগুলি ভূপৃষ্ঠে নেমে মঙ্গলের শিলায় তাদের স্বতন্ত্র কার্বনের সংরক্ষণ করতে পারে।
গবেষকদের আরেকটি অনুমান প্রস্তাব করে যে, কার্বন নমুনাটি মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাসের সঙ্গে অতিবেগুনী রশ্মির মিথস্ক্রিয়া থেকে হতে পারে। তা নতুন কার্বন-ধারণকারী অণু তৈরি করে পৃষ্ঠে বসতি স্থাপন করবে।
নাসা বলেছে যে কার্বন বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ কারণ এই উপাদানটি পৃথিবীর সমস্ত প্রাণেই পাওয়া যায়। এটি একটি চক্রে বায়ু, জল এবং মাটির মধ্য দিয়ে ক্রমাগত প্রবাহিত হয় যা আইসোটোপ পরিমাপের জন্য ভালভাবে বোঝা যায়। মঙ্গলগ্রহের পৃষ্ঠের উপাদানগুলি বিশ্লেষণ করতে বিজ্ঞানীরা ল্যাবের ভিতরে টুনাবেল লেজার স্পেকটোমিটার যন্ত্র ব্যবহার করেছেন।
এসডব্লিউ/এসএস/১৯৪০
আপনার মতামত জানানঃ