নাবালিকা এক কিশোরীর ওপর নারকীয় অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছে। নারকীয় এই অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্রের বীড জেলায়।
১৬ বছরের ওই কিশোরীর অভিযোগ, গত ছয় মাস ধরে ৪০০ জনেরও বেশি লোক তাকে ধর্ষণ করেছে।
এমনকি ওই কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধেও। কিশোরীর অভিযোগ, থানায় অভিযোগ জানাতে গিয়েও এক পুলিশ সদস্যের লালসার শিকার হতে হয়েছে তাকে।
বর্তমানে ভুক্তভোগী ওই কিশোরী দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা। সোমবার (১৫ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম রিপাবলিক ওয়ার্ল্ড।
যেভাবে ধর্ষিত হলো মেয়েটি
নির্যাতিতা নাবালিকার অভিযোগ থেকে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক বছর আগে তার মা মারা যান। তারপর বাবার সঙ্গে বাস করতে সে। বাবাই তার বিয়ের বন্দোবস্ত করে।
এরপর আট মাস আগে বিয়েও হয়ে যায়। অভিযোগ, দাম্পত্য জীবন মোটেও সুখের ছিল না। শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাকে মারধর করে। খারাপ ব্যবহার করে।
মারধর ও নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ওই নাবালিকা পালিয়ে বাবার কাছে ফিরে এসেছিল সে। কয়েকদিন বাবা তার খরচ চালাচ্ছিলেন। তবে তার বাবার পক্ষে নিত্যদিন মেয়ের বয় বহন করা সম্ভব হচ্ছিল না। তাই বাবার আশ্রয় হারায় কিশোরীটি।
তারপর বীড জেলার আম্বাজোগাই বাসস্ট্যান্ডে বাধ্য হয়ে ভিক্ষা চাইতে শুরু করে সে। এই সময় থেকেই তার ওপর অত্যাচার শুরু হয় বলে জানায় ওই কিশোরী।
অভিযোগ, সেই সময় প্রায়শয়ই যৌন নির্যাতনের শিকার হতো ওই নাবালিকা। মাত্র ৬ মাসে কমপক্ষে ৪০০ জন তাকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
এরপর আমবাজাওগাই থানায় অভিযোগ দায়ের করতে যায় মেয়েটি। অভিযোগ করতে গেলে এক পুলিশ কর্মকর্তাও তাকে ধর্ষণ করে।
তবে অন্য এক পুলিশ কর্মকর্তা মেয়েটির বিপদের মুহূর্তে তার পাশে দাঁড়ায়। কিশোরীর বয়ান অনুযায়ী এফআইআর দায়ের করেন তিনি।
শিশু অধিকার রক্ষায় কাজ করে এমন একটি কমিটিকেও ওই কিশোরী জানায়, ‘বহু লোক আমাকে নির্যাতন করেছে।’
‘আমি আম্বাজোগাই থানায় অভিযোগ জানাতে অনেক বার গিয়েছি। কিন্তু অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এক পুলিশ সদস্যও আমার ওপর অত্যাচার করেছে।’
তবে সব শেষে চলতি সপ্তাহে দায়ের হয়েছে অভিযোগ। যদিও গ্রেফতার হয়েছে মাত্র তিন জন।
পুলিশের বক্তব্য
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ধর্ষণের বিষয়ে চলতি সপ্তাহে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
বীড জেলার পুলিশ সুপার রাজা রামাস্বামী জানিয়েছেন, অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে তিন জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।
রোববার রাজা জানান, ‘নির্যাতিতার অভিযোগের ভিত্তিতে শিশুবিবাহ, ধর্ষণ, যৌননিগ্রহ এবং পকসো আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।’
‘গত ছয় মাসে ৪০০ জন ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এক পুলিশ সদস্যও ধর্ষণে অভিযুক্ত। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’
এসডব্লিউ/এসএস/১৪২৫
আপনার মতামত জানানঃ