পশ্চিম আফ্রিকার দেশ বুরকিনা ফাসোর উত্তরাঞ্চলের একটি গ্রামে সশস্ত্র হামলাকারীরা অন্তত ১৩২ জন বেসমারিক মানুষকে হত্যা করেছে। আজ রোববার বিবিসি দেশটির সরকারের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে বলেছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে বুরকিনা ফাসোতে এটাই সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা।
বিবিসির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, হামলাকারীরা শুক্রবার রাতে সোলহান নামের ওই গ্রামে সারারাত তাণ্ডব চালায়। বাড়িঘর ও বাজারে আগুন ধরিয়ে দেয়। এখন পর্যন্ত কোনো গ্রুপ এই হামলার দায় স্বীকার করেনি।
হামলার নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। তিনি বলেছেন, এই ঘটনায় তিনি ‘অত্যন্ত ক্ষুব্ধ’ হয়েছেন। জাতিসংঘ প্রধানের মুখপাত্র বলেছেন, এর ফলে সহিংস চরমপন্থীদের বিরুদ্ধে লড়াইরত দেশগুলোর জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের যে সহায়তার প্রয়োজন, সেখানে প্রাণহানির বিষয়টি আবার বেরিয়ে এসেছে।
বুরকিনা ফাসোর প্রেসিডেন্ট রোচ কাবোরে হামলার ঘটনায় দেশে তিন দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছেন। এক টুইট বার্তায় তিনি বলছেন, ‘অপশক্তির বিরুদ্ধে আমাদের সবার একত্রিত হয়ে রুখে দাঁড়াতে হবে।’
এক টুইটে তিনি বলেন, “আমাদের অবশ্যই অশুভ শক্তিকে মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”
হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের খুঁজে বের করতে নিরাপত্তা বাহিনী অভিযান চালাচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
পশ্চিম আফ্রিকার অন্যান্য প্রতিবেশী দেশের মতো বুরকিনা ফাসোতেও নিরাপত্তার সংকট তীব্র। প্রায়ই সশস্ত্র গোষ্ঠী বিভিন্ন এলাকায় হানা দেয় এবং দেশের বেশিরভাগ এলাকাতেই অপহরণ একটি নিয়মিত ঘটনা। প্রতিবেশী দেশগুলোয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো হামলা আর অপহরণের ঘটনায় দেশটি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
এর আগে শুক্রবার রাতে আরেক হামলায় সোলহান গ্রামের দেড়শ কিলোমিটার উত্তরে তাডার্য়াট গ্রামেও ১৪ জন নিহত হয়েছে। গত মাসে বুরকিনা ফাসোর উত্তরাঞ্চলে এক হামলায় ৩০ জন নিহত হন।
জঙ্গি হামলার জবাব দিতে গত মে মাসে বুরকিনা ফাসোর সেনাবাহিনী বড় পরিসরে একটি অভিযান শুরু করে। তবে তা সত্ত্বেও নিরাপত্তা বাহিনীগুলো সহিংসতা ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছে। গত দুই বছরে দেশটির ১০ লাখের বেশি মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়েছেন।
২০১২-১৩ সালে জঙ্গিরা আফ্রিকার বড় একটি অংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেওয়ার পর স্বায়ত্তশাসিত সাহেল অঞ্চলে জঙ্গি তৎপরতা বেড়েছে। জঙ্গিদের বিরুদ্ধে মালি, শাদ, মৌরিতানিয়া, নাইজার ও বুরকিনা ফাসোর সেনাবাহিনীকে সহায়তা করে আসছে ফরাসি সেনাবাহিনী। কিন্তু এই সপ্তাহে মালিতে সেনা অভ্যুত্থান ঘটার কারণে মালির সেনাবাহিনীর প্রতি সহায়তা বন্ধ করে দিয়েছে ফ্রান্স।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৯৩৩
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ