সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় ছেলে শিক্ষার্থীদের ধর্ষনের অভিযোগে মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত সৈয়দ মাওলানা দেলওয়ার হোসেন সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার ফুলসাইন্দ গ্রামের সৈয়দ আবু বাক্করের ছেলে ও দক্ষিণ সুরমার মেনিখলার শাহজালাল তমজিদিয়া (আবাসিক/অনাবাসিক) মাদ্রাসার অধ্যক্ষ।
দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষনের বিষয়টি অধ্যক্ষ স্বীকার করেছেন।
জানা গেছে, আবাসিক ঐ মাদ্রাসার ছেলে শিশু শিক্ষার্থীদের মাঝে মাঝে রাতে অধ্যক্ষ তার কক্ষে ডেকে নিয়ে নিজের বিকৃত যৌন নিপীড়ন লালসা চরিতার্থ করতেন বলে এক শিক্ষার্থী শনিবার তার অভিভাবকের কাছে অভিযোগ করে। এসময় আরো ৩ শিক্ষার্থীও একই অভিযোগ করে ঐ অভিভাবকের কাছে।
অভিভাবক ভুক্তভোগী অপর এক শিক্ষার্থীর অভিভাবকের সাথে যোগাযোগ করে ৯৯৯- এ কল দিয়ে বিস্তারিত অবগত করেন। বিষয়টি পুলিশ গুরুত্বসহকারে রোববার রাত ৮টার দিকে দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশ মাদ্রাসায় অভিযান চালিয়ে অধ্যক্ষকে আটক করে থানায় নিয়ে যান।
এ রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত অধ্যক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছিলো বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ সুরমা থানার ওসি মনিরুল ইসলাম। ওসি আরও জানান, সোমবারই দেলওয়ারকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।
লেখক ও গবেষক আফসান চৌধুরী মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীর ওপর নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে গবেষণা করেছেন। তিনি বলেছেন, আবাসিক মাদ্রাসা থেকেই শিশু শিক্ষার্থীদের শারিরীক নির্যাতন এবং যৌন নিপীড়নের অভিযোগ বেশি আসে। এখানে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন থাকার বিষয়কে তিনি অন্যতম একটি কারণ হিসাবে দেখেন।
পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন কেউ যদি থাকে, সেখানে বাচ্চারা অনেক বেশি অনিরাপদ থাকে, বিশেষ করে সেখানে যদি বয়স্ক লোক থাকে। সামগ্রিকভাবে বাচ্চাদের অনিরাপদ পরিবেশটাই সমস্যা। এছাড়া বাচ্চারা এ ধরণের ঘটনা ঘটলে তা বলতে বা অন্য কাউকে জানাতে ভয় পায় এবং অনেক সময় তারা বিষয়টা বুঝতেও পারে না। এটাও একটা বড় কারণ।
মানবাধিকার কর্মীরা বলেছেন, আলিয়া মাদ্রাসা ছাড়া অন্য মাদ্রাসাগুলোতে সরকারের নিয়ন্ত্রণ বা তদারকি সেভাবে নেই। সেজন্য যৌন নির্যাতন বা শিশু শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতনের সুযোগ থাকে। এছাড়া সেখানে পরিবেশ এমন যে, শিশু শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ অনেক সময় প্রকাশও হয় না।
মানবাধিকার কর্মীদের অনেকে আবার মনে করেন, মাদ্রাসাগুলোর নিজস্ব বোর্ড বা কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিতে পারে। কিন্তু সেখানেও ঘাটতি আছে।
মানবাধিকার কর্মী এলিনা খান বলেছেন, কওমী, এবতেদায়ী বা নুরানী-বিভিন্ন ধরণের মাদ্রাসা পরিচালনার জন্য বেসরকারি উদ্যোগে কর্তৃপক্ষ যারা রয়েছে, তাদের তদারকি বাড়ানো উচিত বলে তিনি মনে করেন।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৫৫৯
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ