স্বাস্থ্য খাত নিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রেই ঘাটতি ছিল। স্বাস্থ্যও তার ব্যতিক্রম নয়। এ খাতে বরাদ্দ কম ছিল, দেয়া হয়েছে। তবে সবকিছু টাকা দিয়ে হয় না। অনেকের টাকা খরচ করার সক্ষমতাও নেই।’
রোববার বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) আয়োজিত ‘কোভিড-১৯: লিংকিং ইকোনমিক অ্যান্ড হেলথ কনসার্ন’ শীর্ষক ওয়েবিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন। বিআইডিএসের মহাপরিচালক (ডিজি) বিনায়ক সেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, টিকা নিয়ে কিন্তু কালো মেঘ আকাশে আছে, সরছে না। এটা আমার নিজস্ব কথা, সরকারের কথা না। এর কতগুলো বাস্তব কারণও আছে। এটা দূর করতে হবে। যদিও সরকারের উচ্চ মহল আশ্বস্ত করেছে। গতকাল স্বাস্থ্যমন্ত্রীও বলেছেন। আমাদের পুরোনো বন্ধু রাশিয়া থেকেও টিকা আনার প্রক্রিয়া চলছে। তিনি বলেন, টিকা একটা বিগ ম্যাটার। যদি হার্ড ইমিউনিটি করতে হয়, তবে সবাইকে টিকা দিতে হবে। না হলে হবে না। অনেকে সেকেন্ড ডোজ নিয়ে আনসার্টেইনেটিরির মধ্যে রয়েছে।
তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, এক ডোজ টিকা নিলেও প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ে, এটা কিছুটা হলেও ভালো কথা। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, আমার মনে হয় মুখ্য অস্ত্র আইসোলেশন। তবে জীবন ও জীবিকার প্রশ্নও রয়েছে। তাই এই দুইয়ের মধ্যে সমন্বয় করতে হবে। মন্ত্রী বলেন, কোনো কোনো দেশ তাদের প্রয়োজনের তুলনায় তিন গুণ-চার গুণ বেশি টিকা স্টক করে রেখেছে। আর অন্যরা ১ শতাংশ টিকাও পাচ্ছে না। এটা ঠিক না।
বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান। গেস্ট অব অনার ছিলেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান প্রফেসর রেহমান সোবহান। অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য দেন জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ওয়াহিউদ্দিন মাহমুদ। প্যানেল আলোচক ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত ডিজি মীরজাদী সেব্রিনা খান ফ্লোরা, অ্যাকসেস টু ইনফরমেশনের (এটুআই) পলিসি অ্যাডভাইজর আনির চৌধুরী।
অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ বলেন, করোনায় শিক্ষা খাতে বড় ধরনের বৈষম্য তৈরি হয়েছে। ক্রম বা রোটেশন করে কিংবা গ্রুপ করে হলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া উচিত। যদিও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) কর্মসূচির পলিসি উপদেষ্টা আনির চৌধুরী বলেন, এই সময়ে স্কুল–কলেজ খুলে দেওয়া জটিল বিষয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা কঠিন হবে। তাই এখনই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া ঠিক হবে না।
ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ বলেন, প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সাড়ে চার কোটি শিক্ষার্থী। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া জরুরি। সেটি যেকোনো প্রক্রিয়া অবলম্বন করেই হোক। সেটি হতে পারে ক্রম করে। অথবা গ্রুপ করে। অথবা এক দিন পরপর। তবে আনির চৌধুরী মনে করেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব হবে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার বিষয়ে অনেক দিক বিবেচনা করতে হয়। শ্রেণিকক্ষ ছোট। সেখানে গাদাগাদি করে ক্লাস করতে হবে। তখন করোনা সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা থাকবে।
সভাপতির বক্তব্যে বিনায়ক সেন বলেন, ভারতের করোনা পরিস্থিতি যদি আমাদের দেশেও হয়, তাহলে কী হবে? আমাদের যদি আগস্টে বা তার আগে-পরে তৃতীয় ঢেউ আসে। তখন কী হবে? আমাদের স্বাস্থ্য খাতের কি সেই জরুরি মুহূর্ত মোকাবিলার সক্ষমতা রয়েছে? দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ মানুষের কী হবে? আগামী ছয় মাসে আমাদের তিন কোটি মানুষকে টিকা দিতে হবে। আমরা কি চাহিদামতো ভ্যাকসিন ইমপোর্ট করতে পারব? ভ্যাকসিন প্রোডাকশনে যেতে পারব? এসব প্রশ্ন থেকেই যায়।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৩৪৭
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগীতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ