অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি কোভিশিল্ড টিকা গ্রহণকারীদর শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে; করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের শরীরে এই অ্যান্টিবডি যেমন তৈরি হয়েছে, তেমনি হয়েছে আক্রান্ত হননি এমন ব্যক্তিদেরও। অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নেওয়ার এক মাসের মধ্যে অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে বলে জানিয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান—আইইডিসিআর।
বুধবার আইইডিসিআরের ওয়েবসাইটে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়। আইইডিসিআর ও আইসিডিডিআরবির যৌথভাবে যৌথভাবে গবেষণা করছে।
এতে বলা হয়, গবেষণার প্রাথমিক ফলাফল পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ১২০ জন প্রথম ডোজ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি কোভিশিল্ড টিকা গ্রহণকারীদর টিকা নেওয়ার এক মাসের মধ্যে ৯২ শতাংশ এবং দুই মাস পর ৯৭ শতাংশের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। এছাড়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এমন টিকাগ্রহীতাদের শরীরে চার গুণ অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে।
অন্যান্য অসুস্থতা (কো-মরবিডিটি) থাকা বা না থাকার সঙ্গে অ্যান্টিবডির উপস্থিতির তেমন কোনো পার্থক্য পাওয়া যায়নি। টিকা গ্রহীতাদের মধ্যে যারা কোভিড–১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের শরীরে চার গুণ বেশি অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে।
আইইডিসিআর জানায়, এই গবেষণা চলমান। টিকা গ্রহণকারীদের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরির আরও হালনাগাদ তথ্য ভবিষ্যতে পাওয়া যাবে। গবেষণায় দেশের বিভিন্ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ৬ হাজার ৩০০ টিকা গ্রহণকারীর মধ্যে টিকা গ্রহণের পর দুই বছর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে রক্তে অ্যান্টিবডির উপস্থিতি পর্যালোচনা করা হবে।
এতে প্রতীয়মান হয় যে, বাংলাদেশি নাগরিকদের মধ্যে কোভিশিল্ড টিকা গ্রহণের পর শরীরে করোনাভাইরাস অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে। চলমান গবেষণার মাধ্যমে ভবিষ্যতে এই টিকা গ্রহণকারীদের শরীরে অ্যান্টিবডির উপস্থিতি সংক্রান্ত হালনাগাদ তথ্য পাওয়া যাবে।
বাংলাদেশে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কোভিশিল্ড দেওয়া হয়েছে। এই টিকার দুটি ডোজ নিতে হয়। কিন্তু এরমধ্যেই যারা প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন তাদের শরীরে অ্যান্ডিবডি তৈরি হয়েছে।
যদিও টিকার ফলে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডি কতদিন স্থায়ী হবে কিংবা করোনাভাইরাসের পরিবর্তিত নানা রূপ টিকা ঠেকাতে পারবে কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয় বলে স্বাস্থ্যবিধি মানার উপর জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
কারও দেহে কোনো ভাইরাস কিংবা জীবাণুর সংক্রমণ হলে এর বিরুদ্ধে লড়তে শরীরই এক পর্যায়ে প্রতিরোধী ব্যবস্থা তৈরি করে নেয়, যাকে বলে অ্যান্টিবডি। এই অ্যান্টিবডি পরবর্তী সময়ে একই ধরনের জীবাণু দেখলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তা প্রতিরোধ করে। টিকার মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে সেই অ্যান্টিবডি তৈরি করা হয়, যা একই কাজ করে।
বাংলাদেশে গত ৭ ফেব্রুয়ারি ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি কোভিশিল্ড দিয়ে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে।
প্রায় ১৭ কোটি মানুষের দেশে এ পর্যন্ত ৯৪ লাখ ৭১ হাজার ৬৫ জন মানুষকে এই টিকা দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন ৫৮ লাখ ১৯ হাজার ৯১২ জন। ৮ এপ্রিল থেকে দ্বিতীয় ডোজ প্রয়োগ শুরুর পর এ পর্যন্ত তা নিয়েছেন ৩৬ লাখ ৫১ হাজার ১৫৩ জন।
আইইডিসিআর জানিয়েছে, ৭ ফেব্রুয়ারি টিকাদান শুরুর পর থেকে আইসিডিডিআর,বির সঙ্গে যৌথভাবে টিকা গ্রহণকারীদের নিয়ে গবেষণা চালানো হচ্ছে। ৬ হাজার ৩০০ টিকাগ্রহীতার টিকা গ্রহণের পরবর্তী দুই বছর বিভিন্ন সময় রক্তে অ্যান্টিবডির উপস্থিতি পর্যালোচনা করা হবে।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৪০৮
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ