
মাদ্রাসায় শিশু নির্যাতনকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী এখনো আলোচনা-সমালোচনা চলছে। মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থাকে কিভাবে সংস্কার করা যায় এনিয়ে চলছে জোর জল্পনা কল্পনা। এসবের মাঝেও প্রতিদিনকার নিয়মিত সংবাদের মতো মাদ্রাসা শিক্ষক কর্তৃক মাদ্রাসাছাত্রের যৌন নিপীড়নের সংবাদ এসেছে। খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে বড়বিল মাদরাসাতুল মদিনার সুপার মো. নাজনুল হাসান শিকদারকে (৩২) গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারের পর তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, উপজেলার বড়বিল সরকারী প্রাথমিক স্কুল সংলগ্ন খালের পাড়ে মাদরাসাতুল মদিনা নামকরণে একটি মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেন দাওয়াতী ইসলাম নামের একটি ধর্মীয় গ্রুপ। এরপর এলাকার অসহায়, দরিদ্র পরিবারের ছেলেদের ধর্মীয় জ্ঞানার্জনে ভর্তি করান অভিভাবকরা।
গত ৩ মে মাদরাসার সুপার মো. নাজমুল হাসান শিকদার এক ছেলে শিশুকে (৮) যৌন নিপীড়ন করেন। সে মাদরাসা থেকে বাড়ি ফিরে বেশ কয়েকদিন অসুস্থতা বোধ করে এবং মাদরাসায় যেতে অপারগতা প্রকাশ করে। শিশুটির মা চেষ্টা করেও ছেলেকে মাদরাসায় পাঠাতে ব্যর্থ হন।
পরে শরীরে ব্যথা ও রক্তাক্তের নমুনা দেখে মা ছেলেকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে নিপীড়নের বিষয়টি খুলে বলে। পরে ৭মে তাকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে একইদিন সন্ধ্যায় শিশুটির মা সুপার মাওলানা নাজমুল হাসান শিকদারকে অভিযুক্ত করে মানিকছড়ি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মানিকছড়ি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমির হোসেন বলেন, যৌন নিপীড়নের অভিযোগে মাদরাসা সুপার মো. নাজমুল হাসান শিকদারকে আটক করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, এলাকার মানুষ মনে করেন এরা আদব কায়দা শিক্ষা দেন। নৈতিকতা শিক্ষা দেন। সে কারণে ধর্মীয় বিশ্বাস থেকে হোক বা নিরাপত্তার কথা ভেবে অনেকে ছেলেমেয়েদের মাদ্রাসায় পড়াতে দেন। কিন্তু বাস্তবতায় দেখা যাচ্ছে, যে নিরাপত্তার কথা ভেবে মাদ্রাসায় ছেলেমেয়েদের পড়াতে দেয়া হয় সেখানে আদৌ নিরাপদ নয়। দেখা যায় ছেলেরাও নিরাপদ নয় এসব তথাকথিত হুজুরদের কাছে। একটা সময়ে হয়তো এসব কুকর্মের কথা বাইরে প্রচার হতো না। কিন্তু এখন সময় পাল্টেছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, জনসচেতনতা, সামাজিক প্রতিরোধ, আইনের সর্বোচ্চ প্রয়োগ, দ্রুত বিচার নিশ্চিতকরণ এবং প্রকৃত দোষী ব্যক্তিরা যাতে বিচার থেকে রেহাই পেতে না পারে, সে ব্যবস্থা করা গেলে শিশুদের অনেকাংশে সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব। তবে এসবের বাইরেও কিছু ভাবতে হবে। ভাবতে হবে আমাদের মাথা বিক্রির কথা। সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলতে না চাওয়ার কথা। দেশ, সমাজ আর শিশুদের আপন না ভাবার আত্মপ্রতারণার কথা।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৬১৩
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ