কুষ্টিয়ায় যুবলীগ নেতার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় কারাবন্দি কলেজশিক্ষক রাজিবুল আলমের (৫২) জামিন নামঞ্জুর করেছে আদালত। গতকাল বুধবার (১০ মার্চ) বেলা ১১টায় কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ তহিদুল ইসলাম এ আদেশ দেন।
আসামির আইনজবীবী আব্দুল বারী বলেন, কুষ্টিয়া থানা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজু গত বছর ১৪ ডিসেম্বর পাকসি রেলওয়ে ডিগ্রি কলেজের কম্পিউটার বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রাজিবুল আলমের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। মামলায় তার বিরুদ্ধে ফেইসবুকে একটি পোস্টের কমেন্টে ওই যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে কটূক্তির অভিযোগ আনা হয়েছে।
আইনজীবী আবদুল বারী বলেন, একই ঘটনায় রাজিবুল আলমের বিরুদ্ধে একই এজাহারে দুটি থানায় মামলা হয়েছে, আইনত যার কোনো সুযোগ নেই।
আসামির অপর আইনজীবী এনামুল হক বলেন, রাজিবুল আলম তার নিজের আইডিতে কিছু লেখেননি। তিনি তার এক সহকর্মীর লেখায় কমেন্ট করেছেন। তার বিরুদ্ধে এই মামলা হতে পারে না বলে মনে করি।
আদালত সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৪ ডিসেম্বর গভীর রাতে কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভেঙে ফেলে দুর্বৃত্তরা। পৌরসভার পক্ষ থেকে কুষ্টিয়া মডেল থানায় দায়ের করা মামলায় সিসি ক্যামেরার ফুটেজের সূত্র ধরে দুই মাদরাসাছাত্র ও দুই শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়। ঘটনাটি দেশব্যাপী চরম আলোচিত ঘটনায় রূপ নেয়। আলোচিত এই ঘটনা নিয়ে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নানা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে পোস্ট করতে থাকেন। বঙ্গবন্ধুর নির্মাণাধীন এই ম্যুরাল ভাঙচুরের ঘটনায় একটি পোস্ট দেন সাদ আহমেদ নামের পাবনার ঈশ্বরদী থানার পাকশী রেলওয়ে কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষক।
সহকর্মীর এই স্ট্যাটাসের সূত্র ধরে একই কলেজের কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক রাজিবুল আলম আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ এবং তার চাচাতো ভাই কুষ্টিয়া সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা আতাউর রহমান আতাকে এ ঘটনার জন্য দায়ী করে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করেন।
কলেজশিক্ষক রজিবুল আলমের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দুই নেতাকে কটুক্তির এই লেখা দেখে সংক্ষুব্ধ হন কুষ্টিয়া সদর উপজেলা যুবলীগ নেতা মো. মিজানুর রহমান মিজু। ওই পেজটির স্ক্রিনশট নিয়ে গত বছরের ১৪ ডিসেম্বরের তিনি কুষ্টিয়া মডেল থানায় ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫(২)/২৯(১)৩১(২)ধারায় মামলাটি দায়ের করেন।
শিক্ষক রাজিবুল আলম এই মামলায় উচ্চ আদালত থেকে আট সপ্তাহের জামিনে ছিলেন। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়ার সংশ্লিষ্ট চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সৈয়দ হাবীবুল ইসলামের আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন। আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। তখন থেকে কুষ্টিয়া জেলা কারাগারে রয়েছেন এই কলেজশিক্ষক।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৪২০
আপনার মতামত জানানঃ